রাষ্ট্রীয় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পুরষ্কার একুশে পদক ঘোষণা করা হয়েছে। এ বছর একুশজন। বিশিষ্ট ব্যক্তিকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে এ পুরষ্কারের জন্য মনোনীত হয়।
এবার নৃত্যকলায় একুশে পদক পেয়েছেন চাঁদপুরের কচুয়ার নয়াকান্দি গ্রামের কৃতি সন্তান শিবলী মোহাম্মদ। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ পুরষ্কার প্রদান। করবেন। উল্লেখ্য যে, শিবলী মোহাম্মদ দেশের প্রথিতযশা নৃত্যশিল্পী ও কোরিওগ্রাফার।
কত্থক নাচের জন্যে দুই বাংলায় তাঁর বিশেষ সুখ্যাতি রয়েছে। তাঁর কাছে নৃত্য শিখেছেন অসংখ্য শিল্পী।
শিবলী মোহাম্মদের জন্ম ৪ এপ্রিল, ঢাকায়। পৈত্রিক নিবাস চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার ১নং সাচার ইউনিয়নের নয়াকান্দি গ্রামে। বাবা সলিমুল্লাহ মুক্তিযোদ্ধে শহীদ হন। মা জেবুন্নেসা। রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সাদী মোহাম্মদ তাঁর বড় ভাই। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র।
শিবলী মোহাম্মদ ছায়ানট থেকে নিয়েছেন নৃত্যশিক্ষা। তাঁর শিক্ষক ছিলেন, কার্তিক সিং, অজিদ দে এবং অনিতা দে। পরে ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে লিখনোর ভাটখন্ডে মিউজিক কলেজে ভর্তি হন। সেখানে তাঁর শিক্ষক ছিলেন পূর্ণিমা পান্ডে। নয়াদিল্লিতে অবস্থিত কত্থক কেন্দ্রে বিখ্যাত পন্ডিত বীরজু মহারাজের অধীনে কত্থক নৃত্যে পরিপূর্ণ তালিম নেয় শিবলী মোহাম্মদ। তিনিই ছিলেন এ কেন্দ্রের প্রথম বাংলাদেশী ছাত্র।
পরে যুক্তরাজ্য গিয়ে লন্ডন ব্যালেট থিয়েটারে ব্যালেট, ট্যাপ ও জ্যাজ নৃত্যে প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন। ৫০টিরও বেশি দেশে শিবলী মোহাম্মদ নৃত্য পরিবেশন করেছেন। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন নৃত্য প্রতিযোগিতায় তিনি বিচারক হিসেবে কাজ করেছেন। স্বীকৃতিস্বরূপ ইউনেস্কো শিবলী মোহাম্মদকে সেরা বাংলাদেশি নৃত্যশিল্পী হিসেবে পুরষ্কৃত করেছে।
এছাড়া পেয়েছেন জর্জ হ্যারিসন আ্যওয়ার্ড, যায়যায়দিন পুরষ্কার, বাচসাস পুরষ্কার, প্রথম আলো পুরষ্কার ও লাক্স চ্যানেল আই পুরষ্কার। শিবলী মোহাম্মদ ‘নৃত্যাচঞ্চল’ নৃত্য সংস্থার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। ২০০২ সালে শুরু হওয়া এ প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী নৃত্য শিখছে। তাঁর প্রয়াত বাবা শহীদ বুদ্ধিজীবী সলিমুল্লাহকে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ ঢাকা মোহাম্মদপুর তাজমহল রোডে নিজ বাড়িতে পাকবাহিনী ও বিহারীরা নৃসংসভাবে হত্যা করে বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। শহীদ বুদ্ধিজীবী সলিমুল্লাহ’
র নামে মোহাম্মদপুর রোডের নামকরণ করা হয় সলিমুল্লাহ সড়ক।