ময়মনসিংহ , রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
আসিফ নজরুলের বাসভবনে ড্রোন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার কিশোর গ্যাংয়ের আস্তানায় অভিযান, আটক ৯ ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা সিলেট থেকে চালু হচ্ছে কার্গো ফ্লাইট বাহাত্তরের সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধের ঐক্যের ভিত্তিকে অস্বীকার করা হয়েছে বললেন জোনায়েদ সাকি সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ১ বাংলাদেশি নিহত কিশোরগঞ্জে কালবৈশাখী ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি আজ দুপুর ২ টায় মুক্তাগাছা প্রেসক্লাবের সামনে ধর্ষককে গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবীতে মানববন্ধন পটুয়াখালী যাচ্ছে রুহুল কবির রিজভী লামিয়ার জানাজায় অংশ নিতে পলাতক নেতারা বিদেশে বসে চিকেন রোস্ট খাচ্ছে, উৎসাহী নেতারা জেলে পান্তা ভাত খাচ্ছে!বললেন এনসিপি নেতা
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

গাজায় ঢুকতে দিচ্ছে না খাদ্য প্রায় দুই মাস ধরে ইসরায়েল

গাজায় প্রায় দুই মাস ধরে খাবার প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। এর ফলে সেখানে দেখা দিয়েছে তীব্র খাদ্যসংকট। এদিকে গাজায় নতুন করে হামলায় আরও ৪৫ জন নিহত হয়েছে। খবর আলজাজিরার।

জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু স্পষ্টতই গাজায় ‘অনাহার অভিযান’ ঘোষণা করেছেন। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয় সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) প্রধান মাইকেল ফাখরি এর আগে গাজার ওপর ইসরায়েলের সম্পূর্ণ অবরোধ সম্পর্কে কথা বলেছিলেন।

ফাখরি বলেন, ২০২৪ সালের মার্চ এবং চলতি বছরের জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত গাজায় অনাহার এবং দুর্ভিক্ষের বিষয়টিকে গণহত্যার প্রেক্ষাপটে স্বীকৃতি দেয় এবং আমরা আবারও এটি দেখতে পাচ্ছি। গত ৩ মার্চ নেতানিয়াহু ঘোষণা করেন যে ইসরায়েল গাজায় সব ধরনের পণ্য এবং মানবিক সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করবে। এটা ৫০ দিনেরও বেশি আগের ঘটনা এবং এই পরিস্থিতি এখনো চলমান রয়েছে।

ফাখরি বলেন, এটা আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং এর কোনো ব্যতিক্রম নেই। ফাখরি জানিয়েছেন, ইসরায়েল গাজায় ‘মানবসৃষ্ট’ এবং ‘রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অনাহার’ পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি জানিয়েছে, সেখানে মজুত থাকা খাবার একেবারেই শেষ হয়ে গেছে। গাজায় জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য সরবরাহ প্রয়োজন।

এদিকে গাজায় তীব্র খাদ্যসংকটের মধ্যেও সেখানে নতুন করে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। বেশকিছু মেডিক্যাল সূত্র জানিয়েছে, গাজা জুড়ে শুক্রবার সকাল থেকে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে কমপক্ষে আরও ৪৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়।

দখলদার বাহিনীর হামলায় অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় নিহতের সংখ্যা বাড়ছেই। প্রায় ১৮ মাস ধরে সেখানে সংঘাত চলছে। গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত সেখানে কমপক্ষে ৫১ হাজার ৪৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ১ লাখ ১৭ হাজার ৪১৬ জন। তবে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০। কারণ ধ্বংসস্তূপের নিচে যারা চাপা পড়েছে তাদেরও নিহতের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। সে সময় কমপক্ষে ১ হাজার ১৩৯ ইসরায়েলি নিহত এবং দুই শতাধিক মানুষকে জিম্মি হিসেবে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপরেই গাজায় পালটা আক্রমণ চালায় ইসরায়েল। গাজার বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়ে এই উপত্যকাকে এক ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয়েছে।

এর আগে গত সপ্তাহে গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় অগ্রগতি না হওয়ায় গভীর হতাশা প্রকাশ করেন কাতারের প্রধান মধ্যস্থতাকারী মোহাম্মদ আল-খুলাইফি। তিনি বলেন, এক মাস ধরে ইসরায়েল পুনরায় গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করার পর আলোচনা থেমে গেছে, কোনো সমঝোতা হয়নি। আলোচনার গতি নিয়ে আমরা স্পষ্টভাবে হতাশ। এটা অত্যন্ত জরুরি একটি বিষয়, কারণ প্রতিদিন মানুষের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়ছে। তিনি আরও বলেন, গত কয়েক দিন ধরে আমরা অবিরাম চেষ্টা করছি দুই পক্ষকে আবার আলোচনায় বসাতে ও সেই চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করতে, যা আগে দুই পক্ষই সমর্থন করেছিল। কিন্তু আমরা সফল হয়নি। এরপরও সব ধরনের বাধা পেরিয়ে আমরা এই প্রক্রিয়ায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকব।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

আসিফ নজরুলের বাসভবনে ড্রোন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার

গাজায় ঢুকতে দিচ্ছে না খাদ্য প্রায় দুই মাস ধরে ইসরায়েল

আপডেট সময় ১০:৩৮:৫৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

গাজায় প্রায় দুই মাস ধরে খাবার প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। এর ফলে সেখানে দেখা দিয়েছে তীব্র খাদ্যসংকট। এদিকে গাজায় নতুন করে হামলায় আরও ৪৫ জন নিহত হয়েছে। খবর আলজাজিরার।

জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু স্পষ্টতই গাজায় ‘অনাহার অভিযান’ ঘোষণা করেছেন। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয় সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) প্রধান মাইকেল ফাখরি এর আগে গাজার ওপর ইসরায়েলের সম্পূর্ণ অবরোধ সম্পর্কে কথা বলেছিলেন।

ফাখরি বলেন, ২০২৪ সালের মার্চ এবং চলতি বছরের জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত গাজায় অনাহার এবং দুর্ভিক্ষের বিষয়টিকে গণহত্যার প্রেক্ষাপটে স্বীকৃতি দেয় এবং আমরা আবারও এটি দেখতে পাচ্ছি। গত ৩ মার্চ নেতানিয়াহু ঘোষণা করেন যে ইসরায়েল গাজায় সব ধরনের পণ্য এবং মানবিক সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করবে। এটা ৫০ দিনেরও বেশি আগের ঘটনা এবং এই পরিস্থিতি এখনো চলমান রয়েছে।

ফাখরি বলেন, এটা আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং এর কোনো ব্যতিক্রম নেই। ফাখরি জানিয়েছেন, ইসরায়েল গাজায় ‘মানবসৃষ্ট’ এবং ‘রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অনাহার’ পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি জানিয়েছে, সেখানে মজুত থাকা খাবার একেবারেই শেষ হয়ে গেছে। গাজায় জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য সরবরাহ প্রয়োজন।

এদিকে গাজায় তীব্র খাদ্যসংকটের মধ্যেও সেখানে নতুন করে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। বেশকিছু মেডিক্যাল সূত্র জানিয়েছে, গাজা জুড়ে শুক্রবার সকাল থেকে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে কমপক্ষে আরও ৪৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়।

দখলদার বাহিনীর হামলায় অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় নিহতের সংখ্যা বাড়ছেই। প্রায় ১৮ মাস ধরে সেখানে সংঘাত চলছে। গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত সেখানে কমপক্ষে ৫১ হাজার ৪৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ১ লাখ ১৭ হাজার ৪১৬ জন। তবে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০। কারণ ধ্বংসস্তূপের নিচে যারা চাপা পড়েছে তাদেরও নিহতের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। সে সময় কমপক্ষে ১ হাজার ১৩৯ ইসরায়েলি নিহত এবং দুই শতাধিক মানুষকে জিম্মি হিসেবে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপরেই গাজায় পালটা আক্রমণ চালায় ইসরায়েল। গাজার বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়ে এই উপত্যকাকে এক ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয়েছে।

এর আগে গত সপ্তাহে গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় অগ্রগতি না হওয়ায় গভীর হতাশা প্রকাশ করেন কাতারের প্রধান মধ্যস্থতাকারী মোহাম্মদ আল-খুলাইফি। তিনি বলেন, এক মাস ধরে ইসরায়েল পুনরায় গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করার পর আলোচনা থেমে গেছে, কোনো সমঝোতা হয়নি। আলোচনার গতি নিয়ে আমরা স্পষ্টভাবে হতাশ। এটা অত্যন্ত জরুরি একটি বিষয়, কারণ প্রতিদিন মানুষের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়ছে। তিনি আরও বলেন, গত কয়েক দিন ধরে আমরা অবিরাম চেষ্টা করছি দুই পক্ষকে আবার আলোচনায় বসাতে ও সেই চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করতে, যা আগে দুই পক্ষই সমর্থন করেছিল। কিন্তু আমরা সফল হয়নি। এরপরও সব ধরনের বাধা পেরিয়ে আমরা এই প্রক্রিয়ায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকব।