স্বামীর দেওয়া আগুনে ঝুলসে যাওয়া নাজমা আকতার গতকাল দিবাগত রাত তিনটায় চিকিৎসাধীন অবস্তায় মারা যান
চট্টগ্রামের চন্দনাইশে অকটেন নিক্ষেপ করে নাজমা আকতার (২১) নামের এক নারীকে ঝলসে দিয়েছেন তাঁর স্বামী। এ ঘটনায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে। হত্যার ঘটনায় স্বামী আবদুল জাব্বারকে (২৮) আজ শনিবার ভোরে উপজেলার দোহাজারী পৌর এলাকার মধ্যম জামিজুরির গ্রাম থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
এর আগে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে অকটেন ঢেলে স্ত্রী নাজমা আকতারের গায়ে আগুন দেন জাব্বার। উপজেলার হাশিমপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ হাশিমপুরে নাজমা আকতারের মায়ের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। গতকাল দিবাগত রাত তিনটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। নাজমার চার ও আড়াই বছর বয়সী দুই পুত্রসন্তান রয়েছে।
গতকাল সন্ধ্যার দিকে তাঁর ছোট বোন তাঁদের বাড়ির রান্নাঘরে বসে রান্না করেছিলেন। এ সময় তাঁর স্বামী জাব্বার তাঁদের রান্নাঘরের পেছন দিক দিয়ে এসে বোনের গায়ে অকটেন নিক্ষেপ করে আগুন ধরিয়ে দেন। নাজমার চিৎকারে পাশের বাড়ির লোকজন চলে আসায় জাব্বার পালিয়ে যান। স্থানীয় মানুষের সহায়তায় নাজমাকে প্রথমে দোহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
নাজমার পরিবার জানায়, পাঁচ বছর আগে আবদুল জাব্বারের সঙ্গে নাজমা আকতারের বিয়ে হয়। দিনমজুর কৃষক জাব্বার কথায় কথায় নাজমা আকতারকে নির্যাতন করতেন। এ নিয়ে একাধিকবার সালিস–মীমাংসা করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। দুই মাস আগেও মেরে হাত ভেঙে দিলে নাজমা দক্ষিণ হাশিমপুরে গ্রামে তাঁর মায়ের বাড়ি চলে আসেন। বিচার করে দেওয়ার পর তিনি স্বামীর বাড়িতে যান। ১৫ দিন আগে আবারও মারধর করায় মায়ের বাড়িতে এসে থাকছিলেন নাজমা।
চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমরান আল হোসাইন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান তাঁরা। গতকাল রাতে নাজমা আকতারের বড় ভাই মোহাম্মদ তারেক বাদী হয়ে চন্দনাইশ থানায় একটি মামলা করেছেন। আজ ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে নিহত নারীর স্বামী আবদুল জাব্বারকে জামিজুরির এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। স্বামী প্রায় সময় স্ত্রীর বাড়ি থেকে যৌতুক চাইতেন। এ নিয়ে পারিবারিক কলহের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে। লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়