চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা মামলায় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় দাসকে আরও চার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন (শ্যোন অ্যারেস্ট) আদালত। শুনানিতে চিন্ময় দাস ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন। তবে তার পক্ষে কোনো আইনজীবী শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন না।
আজ মঙ্গলবার (৬ মে) সকালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এসএম আলাউদ্দিন মাহমুদ এই আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের কাজে বাধাদান, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা, বিস্ফোরক মামলা ও নিহত আলিফের ভাইয়ের মামলায় চিন্ময়কে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়েছে।
আদালতে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মো রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী কালবেলাকে বলেন, কোতোয়ালি থানার পুলিশের কাজে বাধা, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলাসহ চার মামলায় চিন্ময় দাসকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছিলেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা। শুনানি শেষে চার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। শুনানিতে চিন্ময় দাসের পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না।
এদিকে শুনানিকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালত পাড়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার ছিল। আদালত ভবনের প্রবেশমুখে আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। চট্টগ্রাম কারাগারের সামনেও জোরদার করা হয় নিরাপত্তা।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন, কারাগারে থাকা চিন্ময় দাসকে কোতোয়ালি থানার চার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আদালত শুনানি শেষে চিন্ময় দাসকে চার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ওই মামলা করেন। পরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণকে ২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর গত বছরের ২৬ নভেম্বর সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপত্র চিন্ময় দাসের জামিনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের মধ্যে আইনজীবী সাইফুলকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ হত্যার ঘটনায় তার বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। ছয়টি মামলায় গ্রেপ্তার হন ৫১ জন। তাদের মধ্যে হত্যায় জড়িত অভিযোগে ২১ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন।