দুই যুগেরও বেশি সময় আগে যে মহৎ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প শুরু হয়েছিল, এখানকার প্লট মালিকদের কাছে তা আজ প্রায় দুঃস্বপ্নের মতো। এইসব সমস্যা সমাধানে পূর্বাচলকে আলাদা ভাবে সিটি কর্পোরেশন করার বিকল্প নাই বলে জানিয়েছেন পূর্বাচল সোসাইটির আহবায়ক ড. এ ওয়াই এম একরামুল হক।
তিনি বলেন, দীর্ঘ সময় পরেও প্রকল্পের ভৌত অবকাঠামোর কাজ শেষ হতে এখনো অনেক বাকি। প্লট মালিকরা এখানে বসবাসের আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছেন। হতাশ হয়ে অনেকে প্লট বিক্রি করে দিয়েছেন। তবুও আমরা বিশ্বাস করি, প্রকল্পের সমস্যাগুলো সমাধানের পথ এখনো খোলা আছে।
তিনি এই প্রকল্পের সমস্যা সমাধানে কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরেন, প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে- নিরাপত্তার জন্য দুটি থানা ও একাধিক ফাঁড়ি। সকল সেক্টরে ও প্লটে বিদ্যুৎ লাইন সম্প্রসারণ। সকল সেক্টরে সুপেয় পানির সরবরাহ লাইন। সুয়োরেজ পয়:নিষ্কাশন ব্যবস্থা। রাস্তা মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ। সড়ক বাতি বসানো। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মার্কেট নির্মাণ। হাসপাতাল ও ক্লিনিক নির্মাণ। বিনোদনের জন্য পার্ক ও খেলার মাঠ নির্মাণ করতে হবে।
পূর্বাচল সোসাইটির আহবায়ক ড. এ ওয়াই এম একরামুল হক প্রস্তাবনা করে বলেন, এইসব সমস্যা সমাধান যেভাবে করা সম্ভব বলে মনে করেন, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পকে একটি অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্প হিসেবে বিবেচনা করে ‘পূর্বাচল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ নামক একটি প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন ও এর মাধ্যমে কাজ শুরু করা যেতে পারে। বর্তমানে রাজউকে পূর্বাচলের জন্য প্রকল্প পরিচালক ও প্রকল্প ব্যবস্থাপকসহ আলাদা একটি সেট আপ কাজ করছে। এর সাথে চেয়ারম্যান, ২টি সদস্য পদ একটি প্রধান প্রকৌশলীর পদ সৃষ্টি এবং অন্য পদগুলো রাজউক থেকে নতুন কর্তৃপক্ষে স্থানন্তর করা যেতে পারে। ৪ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত রাজউকের ভবনটি এবং ১নম্বর সেক্টরের রাজউকের ভবনগুলো পূর্বাচল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, পূর্বাচল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠিত হবার আগে অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা হিসেবে সরকার ও রাজউক কর্তৃক পূর্বাচলের জন্য আলাদাভাবে সকল পর্যায়ের টেকনিকাল ও নন-টেকনিকাল কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ/দায়িত্ব দেয়া যারা পরবর্তীতে পূর্বাচল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অন্তর্ভুক্ত হবেন। ভবিষ্যতে সকল নাগরিক সুবিধা অব্যাহত রাখার জন্য পূর্বাচলকে ঢাকা উওর সিটি কর্পোরেশনের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা অথবা আলাদা সিটি কর্পোরেশন ঘোষনা করে প্রজ্ঞাপন জারী করে ব্যবস্হা সমূহ গ্রহন করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
একরামুল হক বলেন, আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ ৩০০ ফুট নতুন সড়ক দিয়ে পূর্বাচল-ঢাকা ছাড়াও ঢাকা, নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও সিলেট রুটসমূহের সরকারি ও বেসরকারি বাস সার্ভিস চালুর ব্যবস্হা করা। ভরাট লেকগুলি অগ্রাধিকার ভিওিতে খনন করা। প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে সংরক্ষিত বনাঞ্চল রক্ষার জন্য সতর্ক দৃষ্টি ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ অব্যাহত রাখা। প্লট মালিকের সাথে রাজউক সম্পাদিত দলিলের সংগে সরকারী নথিপএের মৌজা ও খতিয়ানের নাম সংক্রান্ত বৈসাদৃশ্য দুরীভূত করার ব্যবস্হা গ্রহন করা। পরিকল্পনা অনুসারে অবিলম্বে মসজিদ স্হাপন ও উন্নয়নের ব্যবস্হা গ্রহন করা। পরিকল্পনা অনুসারে অন্যান্য ধর্মীয় উপসানলয় স্হাপন ও উন্নয়নের ব্যবস্হা গ্রহন করা। অবিলম্বে ৩০০ফুট সড়ক থেকে পূর্বাচল প্রবেশ পথে প্রতিটি রাস্তায় সড়ক নির্দেশক নাম ও চিহ্ন স্হাপন করতে হবে।
এসময় বক্তারা পূর্বাচল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং পূর্বাচল সিটি কর্পোরেশন করার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন।