ময়মনসিংহ , মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
বাবাকে হত্যার পর মরদেহের পাশে ছেলে সিগারেট ধরায় নির্বাচনের ওপর নির্ভর করছে দেশের ভবিষ্যৎ বললেন ইসি আনোয়ারুল আসুন সবাই মিলে বাংলাদেশকে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক দেশে পরিণত করি বললেন মঈন খান দেশের ক্ষতি করে কোনো সিদ্ধান্ত নয় বললেন নৌ উপদেষ্টা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র হচ্ছে বললেন মির্জা ফখরুল নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল বিক্ষোভের চেষ্টা করলে আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ বললেন প্রেস সচিব দুর্বৃত্তের আগুন এনসিপির নেতার বাড়ির গেটে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে গুলিতে যুবক নিহত মুন্সিগঞ্জে কারামুক্তিতে বাধা নেই , লতিফ সিদ্দিকীর জামিন আপিল বিভাগে বহাল খাগড়াছড়ি কারাগারের দেওয়াল টপকে পালালো দুই আসামী, আটক ১
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

সেনাবাহিনীকে বাড়তি ক্ষমতারপ্রস্তাব, দেশের ৬৭ শতাংশ ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে নিরাপত্তা নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ। পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) জানিয়েছে, সারাদেশের মোট ভোটকেন্দ্রের দুই-তৃতীয়াংশের বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সর্বশেষ বৈঠকের কার্যবিবরণীতে উঠে এসেছে সহিংসতা, কেন্দ্র দখল ও গুজব–সৃষ্ট আশঙ্কা। এমন পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে নির্বাচনে বিচারিক ক্ষমতা ও ড্রোন ব্যবহারের অনুমতি চাওয়া হয়েছে।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে দেশের ৪২ হাজার ৭৬১টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ২৮ হাজার ৬৬৩টিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)। এর মধ্যে ৮ হাজার ২২৬টি কেন্দ্রকে ‘অধিক ঝুঁকিপূর্ণ’ বলা হয়েছে। অর্থাৎ, এবার মোট ভোটকেন্দ্রের প্রায় ৬৭ শতাংশই নিরাপত্তা–ঝুঁকিতে রয়েছে বলে মনে করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

ইসি সূত্র জানায়, গত ২০ অক্টোবর নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও প্রাক্‌–প্রস্তুতিমূলক বৈঠকে এসবি এ তথ্য দেয়। আজ রোববার বৈঠকের কার্যবিবরণী অনুমোদন করা হয়, যেখানে এসব তথ্য উল্লেখ আছে।

বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর প্রতিনিধিরা সম্ভাব্য সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা জানান, নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্র দখল, ব্যালট ছিনতাই এবং ভোট প্রদানে বাধা দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে।

সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, নির্বাচনের সময় ভোটকর্মী, ভোটার ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন বাহিনীর মধ্যে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় থাকা জরুরি। ভোটের আগে-পরে রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর হামলা, কেন্দ্র দখল, ভোটগ্রহণে বাধা, এমনকি ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের আশঙ্কা রয়েছে।

বর্তমানে ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারের আওতায় সেনাবাহিনী ৬২টি জেলায় মোতায়েন রয়েছে। সেনাবাহিনী প্রস্তাব করেছে, নির্বাচনের আগে তিন দিন, ভোটের দিন ও পরের চার দিন—মোট আট দিন বাহিনীকে মাঠে রাখা যেতে পারে।

এসবির পক্ষ থেকে বৈঠকে আরও জানানো হয়, নির্বাচনের সময় অবৈধ অস্ত্রের সরবরাহ বাড়তে পারে। পাশাপাশি নির্বাচনী প্রভাব বিস্তারে অবৈধ অর্থের প্রবাহ রোধে সিআইডিকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে।

সিআইডির প্রতিনিধিরা জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে নির্বাচনে গুজব ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। ইতিমধ্যে এমন বহু কনটেন্ট শনাক্ত করা হয়েছে এবং র‍্যাবের সাইবার ইউনিট এসব বিষয়ে কাজ করছে।

বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন পরিচালনা একটি সাংবিধানিক দায়িত্ব। কমিশনের একার পক্ষে দেশব্যাপী এত বড় কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। তাই সমন্বিত সহযোগিতাই সাফল্যের চাবিকাঠি।’

সিইসি আরও বলেন, আসন্ন নির্বাচনে নানা প্রতিকূলতা ও চ্যালেঞ্জ থাকতে পারে, তবে আন্তরিকতা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে তা মোকাবিলা করা সম্ভব।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বাবাকে হত্যার পর মরদেহের পাশে ছেলে সিগারেট ধরায়

সেনাবাহিনীকে বাড়তি ক্ষমতারপ্রস্তাব, দেশের ৬৭ শতাংশ ভোটকেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ

আপডেট সময় ১০:২৪:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে নিরাপত্তা নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ। পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) জানিয়েছে, সারাদেশের মোট ভোটকেন্দ্রের দুই-তৃতীয়াংশের বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সর্বশেষ বৈঠকের কার্যবিবরণীতে উঠে এসেছে সহিংসতা, কেন্দ্র দখল ও গুজব–সৃষ্ট আশঙ্কা। এমন পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে নির্বাচনে বিচারিক ক্ষমতা ও ড্রোন ব্যবহারের অনুমতি চাওয়া হয়েছে।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে দেশের ৪২ হাজার ৭৬১টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ২৮ হাজার ৬৬৩টিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)। এর মধ্যে ৮ হাজার ২২৬টি কেন্দ্রকে ‘অধিক ঝুঁকিপূর্ণ’ বলা হয়েছে। অর্থাৎ, এবার মোট ভোটকেন্দ্রের প্রায় ৬৭ শতাংশই নিরাপত্তা–ঝুঁকিতে রয়েছে বলে মনে করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

ইসি সূত্র জানায়, গত ২০ অক্টোবর নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও প্রাক্‌–প্রস্তুতিমূলক বৈঠকে এসবি এ তথ্য দেয়। আজ রোববার বৈঠকের কার্যবিবরণী অনুমোদন করা হয়, যেখানে এসব তথ্য উল্লেখ আছে।

বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর প্রতিনিধিরা সম্ভাব্য সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা জানান, নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্র দখল, ব্যালট ছিনতাই এবং ভোট প্রদানে বাধা দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে।

সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, নির্বাচনের সময় ভোটকর্মী, ভোটার ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন বাহিনীর মধ্যে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় থাকা জরুরি। ভোটের আগে-পরে রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর হামলা, কেন্দ্র দখল, ভোটগ্রহণে বাধা, এমনকি ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের আশঙ্কা রয়েছে।

বর্তমানে ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারের আওতায় সেনাবাহিনী ৬২টি জেলায় মোতায়েন রয়েছে। সেনাবাহিনী প্রস্তাব করেছে, নির্বাচনের আগে তিন দিন, ভোটের দিন ও পরের চার দিন—মোট আট দিন বাহিনীকে মাঠে রাখা যেতে পারে।

এসবির পক্ষ থেকে বৈঠকে আরও জানানো হয়, নির্বাচনের সময় অবৈধ অস্ত্রের সরবরাহ বাড়তে পারে। পাশাপাশি নির্বাচনী প্রভাব বিস্তারে অবৈধ অর্থের প্রবাহ রোধে সিআইডিকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে।

সিআইডির প্রতিনিধিরা জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে নির্বাচনে গুজব ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। ইতিমধ্যে এমন বহু কনটেন্ট শনাক্ত করা হয়েছে এবং র‍্যাবের সাইবার ইউনিট এসব বিষয়ে কাজ করছে।

বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন পরিচালনা একটি সাংবিধানিক দায়িত্ব। কমিশনের একার পক্ষে দেশব্যাপী এত বড় কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। তাই সমন্বিত সহযোগিতাই সাফল্যের চাবিকাঠি।’

সিইসি আরও বলেন, আসন্ন নির্বাচনে নানা প্রতিকূলতা ও চ্যালেঞ্জ থাকতে পারে, তবে আন্তরিকতা ও সমন্বয়ের মাধ্যমে তা মোকাবিলা করা সম্ভব।