ময়মনসিংহ , শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

শিশু শ্রম নিরসনে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন বললেন ড. এম সাখাওয়াত হোসেন

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, শিশু শ্রম নিরসনে প্রয়োজন সকল মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত উদ্যোগ।

গতকাল শনিবার শ্রীমঙ্গল উপজেলার এক হোটেলে শিশু শ্রম নিরসন বিষয়ক এক কর্মশালায় উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শিশু শ্রম এখনও একটি বড় সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে। কৃষক পরিবারের শিশুরা মাঠে কাজ করছে, জেলেরা তাদের সন্তানদের নিয়ে মাছ ধরছে, ইটভাটায় শিশুরা শ্রম দিচ্ছে, আর অনেক পথশিশু স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পায় না। এসব শিশু পরিবারের আর্থিক চাপ কমাতে বাধ্য হয়ে কাজে নামছে, যা তাদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।  শিশু শ্রম নিরসনে গঠিত জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটি এবং উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের কমিটিগুলো কাজ করছে। সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাও শিশুদের শিক্ষা ও বিকাশের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

উপদেষ্টা আরও বলেন, শিশু শ্রম নিরসনে কর্মশালা আয়োজন করে কমিটির কার্যপরিধি চূড়ান্ত করা হবে।
এছাড়াও শ্রীমঙ্গল উপজেলার এক হোটেলে আয়োজিত ‘‘জাতীয় শিশুশ্রম কল্যাণ পরিষদ” এর ১৩ তম সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় উপদেষ্টা বলেন, শিশুদের অধিকার সুরক্ষা ও তাদের সার্বিক বিকাশ নিশ্চিত করতে জাতীয় শিশু কল্যাণ পরিষদ কাজ করে যাচ্ছে। সুবিধাবঞ্চিত, পথশিশু, শ্রমজীবী ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে বসবাসকারী শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারি ও বেসরকারি সকল সংস্থাকে কাজ করার আহ্বান জানান।

জাতীয় শিশুশ্রম কল্যাণ পরিষদের সভায় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, আইএলও কনভেনশন-১৩৮ এ শিশুশ্রম বন্ধ সম্পর্কে বলা আছে। শ্রম ও কর্মসংস্থান আইএলও কনভেনশন অনুযায়ী শিশুশ্রম বন্ধে কাজ করে যাচ্ছে।

বক্তারা বলেন, শিশুশ্রম নিরসনে সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি। শিশু শ্রম বন্ধে সরকারের পদক্ষেপ ইতিবাচক হলেও বাস্তবায়নে আরও জোরদার করা প্রয়োজন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই পারে একটি শিশুবান্ধব বাংলাদেশ গড়তে। দারিদ্র্য ও সচেতনতার অভাব শিশু শ্রমের প্রধান কারণ। তাই শুধু আইন প্রয়োগ নয়, পরিবারগুলোর আর্থিক সক্ষমতা বাড়ানো এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি। শিশু শ্রম বন্ধে সমন্বিত উদ্যোগের তাগিদ দিয়েছেন তারা।

সভায় সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার প্রতিনিধি নিরান রামজুথান।

কর্মশালায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, মৌলভীবাজার জেলার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার,
ইউনিসেফ বাংলাদেশ, আইএলও কান্ট্রি অফিস বাংলাদেশ, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদল, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট, বাংলাদেশ গার্মেন্টস সংহতি ফেডারেশন, এডুকো বাংলাদেশ, অপরাজেয়-বাংলাদেশ, বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশন, শিশু পল্লি প্লাস, শাপলা নীড়, গ্রামবাংলা উন্নয়ন কমিটি, কারিতাস বাংলাদেশ, কেন্দ্রীয় মনিটরিং কমিটি, ইনসিডিন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি এর প্রতিনিধিবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শিশু শ্রম নিরসনে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন বললেন ড. এম সাখাওয়াত হোসেন

আপডেট সময় ১১:১৬:৪৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, শিশু শ্রম নিরসনে প্রয়োজন সকল মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত উদ্যোগ।

গতকাল শনিবার শ্রীমঙ্গল উপজেলার এক হোটেলে শিশু শ্রম নিরসন বিষয়ক এক কর্মশালায় উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শিশু শ্রম এখনও একটি বড় সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে। কৃষক পরিবারের শিশুরা মাঠে কাজ করছে, জেলেরা তাদের সন্তানদের নিয়ে মাছ ধরছে, ইটভাটায় শিশুরা শ্রম দিচ্ছে, আর অনেক পথশিশু স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পায় না। এসব শিশু পরিবারের আর্থিক চাপ কমাতে বাধ্য হয়ে কাজে নামছে, যা তাদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।  শিশু শ্রম নিরসনে গঠিত জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটি এবং উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের কমিটিগুলো কাজ করছে। সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাও শিশুদের শিক্ষা ও বিকাশের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

উপদেষ্টা আরও বলেন, শিশু শ্রম নিরসনে কর্মশালা আয়োজন করে কমিটির কার্যপরিধি চূড়ান্ত করা হবে।
এছাড়াও শ্রীমঙ্গল উপজেলার এক হোটেলে আয়োজিত ‘‘জাতীয় শিশুশ্রম কল্যাণ পরিষদ” এর ১৩ তম সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় উপদেষ্টা বলেন, শিশুদের অধিকার সুরক্ষা ও তাদের সার্বিক বিকাশ নিশ্চিত করতে জাতীয় শিশু কল্যাণ পরিষদ কাজ করে যাচ্ছে। সুবিধাবঞ্চিত, পথশিশু, শ্রমজীবী ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে বসবাসকারী শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারি ও বেসরকারি সকল সংস্থাকে কাজ করার আহ্বান জানান।

জাতীয় শিশুশ্রম কল্যাণ পরিষদের সভায় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, আইএলও কনভেনশন-১৩৮ এ শিশুশ্রম বন্ধ সম্পর্কে বলা আছে। শ্রম ও কর্মসংস্থান আইএলও কনভেনশন অনুযায়ী শিশুশ্রম বন্ধে কাজ করে যাচ্ছে।

বক্তারা বলেন, শিশুশ্রম নিরসনে সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি। শিশু শ্রম বন্ধে সরকারের পদক্ষেপ ইতিবাচক হলেও বাস্তবায়নে আরও জোরদার করা প্রয়োজন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই পারে একটি শিশুবান্ধব বাংলাদেশ গড়তে। দারিদ্র্য ও সচেতনতার অভাব শিশু শ্রমের প্রধান কারণ। তাই শুধু আইন প্রয়োগ নয়, পরিবারগুলোর আর্থিক সক্ষমতা বাড়ানো এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি। শিশু শ্রম বন্ধে সমন্বিত উদ্যোগের তাগিদ দিয়েছেন তারা।

সভায় সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার প্রতিনিধি নিরান রামজুথান।

কর্মশালায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, মৌলভীবাজার জেলার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার,
ইউনিসেফ বাংলাদেশ, আইএলও কান্ট্রি অফিস বাংলাদেশ, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদল, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট, বাংলাদেশ গার্মেন্টস সংহতি ফেডারেশন, এডুকো বাংলাদেশ, অপরাজেয়-বাংলাদেশ, বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশন, শিশু পল্লি প্লাস, শাপলা নীড়, গ্রামবাংলা উন্নয়ন কমিটি, কারিতাস বাংলাদেশ, কেন্দ্রীয় মনিটরিং কমিটি, ইনসিডিন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি এর প্রতিনিধিবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।