ইশরাককে মেয়র পদে বসানোর দাবিতে গত ১৪ মে থেকে ‘আমরা ঢাকাবাসী’র ব্যানারে শত শত মানুষ নগর ভবন অবরোধ করে আন্দোলন চালিয়ে আসছে। এতে যোগ দিয়েছেন সংস্থাটির অধিকাংশ কর্মচারীও। এ নিয়ে আদালতে করা রিটের রায় আজ ঘোষণার কথা রয়েছে।
সকাল ১০টা থেকে নগর ভবনের সামনের সড়কে বসে পড়েন ইশরাক সমর্থকরা। ভবনের প্রধান ফটকের সামনে একটি অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়। সেই মঞ্চ থেকে সংগীত পরিবেশন করে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন বিভিন্ন শিল্পী।
ইশরাক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘আমরা সমালোচনা করি, রাজনৈতিক বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তাদের সতর্ক করি, তাদের ভুল ধরিয়ে দিই কিন্তু অবশ্যই ভাষাগত শিষ্টাচার মেনে। অনেক তো দেখে আসছি আর পেছনের দিকে দেশটিকে নিতে চাই না। অবশ্যই আমরা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মোকাবিলা করব, দেশের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র রুখে দেব, নির্বাচনী স্পষ্ট রোডম্যাপ আদায়ের মাধ্যমে আমাদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য পদক্ষেপ নেব। এমনকি বর্তমানে বিতর্কিত উপদেষ্টাদের পদত্যাগে কঠোর গণতান্ত্রিক আন্দোলনও করব। কিন্তু ভাষা ও ব্যবহারে শত্রুও যাতে সমালোচনা করতে না পারে।’
তবে ইশরাকের এই অনুরোধ রাখেননি তার সমর্থক আর বিএনপি নেতাকর্মীরা। সকাল থেকে নগর ভবনের সামনে থেকে তারা স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে দায়ী করে তার পদত্যাগ চেয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। দুপুরের দিকে মাইক হাতে নিয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন ‘দফা এক দাবি এক, আসিফের পদত্যাগ’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
বিকাল ৫টার দিকে ষষ্ঠ দিনের অবস্থান কর্মসূচি থেকে আন্দোলনের সমন্বয়কারী সাবেক সচিব মশিউর রহমান বলেন, আমরা বুধবার সকাল ১০টা পর্যন্ত অপেক্ষা করব, এর মধ্যে ইশরাক হোসেনকে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত না এলে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেব। প্রয়োজনে ঢাকা অচল করে দেওয়া হবে।
এ সময় সিটি করপোরেশনের পাঁচটি কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত হয়ে ঢাকাবাসীর এই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। তারা বলেন, দাবি মানা না হলে সব ধরনের নাগরিক সেবা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
ইশরাক হোসেনকে ডিএসসিসির মেয়র হিসেবে ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দেওয়া গেজেট স্থগিত চেয়ে রিটের শুনানি শেষ হয়েছে। আজ এ বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরী সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল মঙ্গলবার শুনানি শেষে এ দিন ধার্য করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান মিলন। ইশরাক হোসেনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
সরকার গায়ের জোরে ইশরাক হোসেনকে মেয়র হতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বয়স অনেক কম। হঠাৎ রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেয়ে গেছেন। এজন্য তাঁর কথাবার্তায় ভারসাম্যহীনতা রয়েছে। আদালতের রায় ঘোষণার পরও ইশরাককে শপথ নিতে দেওয়া হচ্ছে না। চট্টগ্রামে ডা. শাহাদাত হোসেন মেয়র হতে পারলে ইশরাক কী দোষ করল?