ময়মনসিংহ , শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

বিএনপির সন্দেহ সরকারের অবস্থান নিয়ে , ভোট-পদ্ধতি নিয়ে মতবিরোধ তুঙ্গে

  • ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:০৩:৪৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫
  • ১৮ বার পড়া হয়েছে

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ফের ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। ভোটের সময় ও পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ বাড়ছে। সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট নির্দেশনা না আসায় নির্বাচন নিয়ে সংশয়ে পড়েছে বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দল। বগুড়া, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশালের তৃণমূল বিএনপির নেতারা মনে করছেন, সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে ধোঁয়াশা তৈরি করছে। লন্ডন বৈঠকের পর তিন সপ্তাহ পার হলেও নির্বাচন কমিশনকে সময়সূচি বা পরিকল্পনা নিয়ে কোনো বার্তা দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তাদের।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তার সাক্ষাতে নির্বাচনের সময় নিয়ে আলোচনা হয়নি। কমিশন ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে ভোট অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ অবস্থাকে অস্পষ্ট ও দ্বিধান্বিত বলে অভিহিত করেছেন বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। তাদের আশঙ্কা, সরকার নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার সুযোগ খুঁজছে।

এদিকে নির্বাচন পদ্ধতি নিয়েও রাজনৈতিক অঙ্গনে চরম বিভক্তি দেখা দিয়েছে। বিএনপি ও মিত্ররা সরাসরি ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচনের পক্ষে। বিপরীতে জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস ও গণঅধিকার পরিষদসহ কয়েকটি ইসলামপন্থি দল চায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক (পিআর) ব্যবস্থা।

এই দাবিতে তারা জোটবদ্ধ অবস্থান তৈরির চেষ্টা করছে। জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান জানিয়েছেন, এবারের নির্বাচনেই পিআর পদ্ধতি চালুর দাবি তাদের। ইসলামি আন্দোলনের একটি সমাবেশে এই দাবির পক্ষে প্রচার চালানো হয়, যেখানে বিএনপিসহ পিআর বিরোধীরা আমন্ত্রিত ছিলেন না।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, সংসদের নিম্নকক্ষে সরাসরি ভোট এবং উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতির প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে বিএনপি উচ্চকক্ষেও পিআর চায় না, বরং নিম্নকক্ষের আসন সংখ্যার ভিত্তিতে দলগুলোকে উচ্চকক্ষে প্রতিনিধিত্ব দেওয়ার পক্ষে।

অন্যদিকে জামায়াতসহ ছোট দলগুলো বলছে, পিআর পদ্ধতিতে প্রত্যেকটি ভোটের মূল্য থাকে এবং ছোট দলগুলোর জন্যও সংসদে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয়। এমনকি ১ শতাংশ ভোট পেলেও সংসদে জায়গা পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।

একাধিক উপদেষ্টা জানিয়েছেন, নির্বাচন প্রলম্বিত করার কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে পদ্ধতি ও সময়সূচি নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো অবস্থান আসেনি। এতে রাজনৈতিক দলগুলো সরকারের সমন্বয়হীনতা ও সিদ্ধান্তহীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ভোটের সময় ও পদ্ধতি নিয়ে স্পষ্টতা না থাকায় অস্থিরতা বাড়ছে, যা জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশকে জটিল করে তুলছে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বিএনপির সন্দেহ সরকারের অবস্থান নিয়ে , ভোট-পদ্ধতি নিয়ে মতবিরোধ তুঙ্গে

আপডেট সময় ১১:০৩:৪৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ফের ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। ভোটের সময় ও পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ বাড়ছে। সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট নির্দেশনা না আসায় নির্বাচন নিয়ে সংশয়ে পড়েছে বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দল। বগুড়া, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশালের তৃণমূল বিএনপির নেতারা মনে করছেন, সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে ধোঁয়াশা তৈরি করছে। লন্ডন বৈঠকের পর তিন সপ্তাহ পার হলেও নির্বাচন কমিশনকে সময়সূচি বা পরিকল্পনা নিয়ে কোনো বার্তা দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তাদের।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তার সাক্ষাতে নির্বাচনের সময় নিয়ে আলোচনা হয়নি। কমিশন ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে ভোট অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ অবস্থাকে অস্পষ্ট ও দ্বিধান্বিত বলে অভিহিত করেছেন বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। তাদের আশঙ্কা, সরকার নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার সুযোগ খুঁজছে।

এদিকে নির্বাচন পদ্ধতি নিয়েও রাজনৈতিক অঙ্গনে চরম বিভক্তি দেখা দিয়েছে। বিএনপি ও মিত্ররা সরাসরি ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচনের পক্ষে। বিপরীতে জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিস ও গণঅধিকার পরিষদসহ কয়েকটি ইসলামপন্থি দল চায় আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক (পিআর) ব্যবস্থা।

এই দাবিতে তারা জোটবদ্ধ অবস্থান তৈরির চেষ্টা করছে। জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান জানিয়েছেন, এবারের নির্বাচনেই পিআর পদ্ধতি চালুর দাবি তাদের। ইসলামি আন্দোলনের একটি সমাবেশে এই দাবির পক্ষে প্রচার চালানো হয়, যেখানে বিএনপিসহ পিআর বিরোধীরা আমন্ত্রিত ছিলেন না।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, সংসদের নিম্নকক্ষে সরাসরি ভোট এবং উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতির প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে বিএনপি উচ্চকক্ষেও পিআর চায় না, বরং নিম্নকক্ষের আসন সংখ্যার ভিত্তিতে দলগুলোকে উচ্চকক্ষে প্রতিনিধিত্ব দেওয়ার পক্ষে।

অন্যদিকে জামায়াতসহ ছোট দলগুলো বলছে, পিআর পদ্ধতিতে প্রত্যেকটি ভোটের মূল্য থাকে এবং ছোট দলগুলোর জন্যও সংসদে প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয়। এমনকি ১ শতাংশ ভোট পেলেও সংসদে জায়গা পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।

একাধিক উপদেষ্টা জানিয়েছেন, নির্বাচন প্রলম্বিত করার কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে পদ্ধতি ও সময়সূচি নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো অবস্থান আসেনি। এতে রাজনৈতিক দলগুলো সরকারের সমন্বয়হীনতা ও সিদ্ধান্তহীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ভোটের সময় ও পদ্ধতি নিয়ে স্পষ্টতা না থাকায় অস্থিরতা বাড়ছে, যা জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশকে জটিল করে তুলছে।