ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আচরণবিধি প্রতিপালনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিন। একইসঙ্গে নির্বাচন আয়োজনে নিজেদের নিরপেক্ষ রেফারির ভূমিকায় দেখতে চান বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকালে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের শুরুত্বে সভাপতি হিসেবে স্বাগত বক্তব্য দেন সিইসি। এসময় প্রথম পর্বে ডাক পাওয়া ছয়টি দলের প্রতনিধি উপস্থিত ছিলেন।
এবার পোস্টাল ব্যালটে প্রবাসীদের ভোট নেওয়া, এআই অপব্যবহার রোধসহ নানা ধরনের কাজের কথা তুলে ধরে সিইসি বলেন, অনেকগুলো এক্সট্রা বার্ডেন এসে গেছে। সব নিয়েই এগোতে হচ্ছে, নানা ধরনের যুদ্ধ মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
সিইসি বলেন, দেখুন, খেলবেন আপনারা। আপনারা প্লেয়ার, আমরা রেফারির ভূমিকায়। প্রকৃত অর্থে একদম নিরপেক্ষ রেফারির ভূমিকায় থাকতে চাই। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া রেফারির কাজ করা বড় মুশকিল। সুষ্ঠুভাবে খেলা পরিচালনা করা মুশকিল। আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, জাতির কাছে আমরা সুষ্ঠু সুন্দর গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে চাই। আপনাদের সহযোগিতা নিয়েই এ উপহার দিতে হবে।
দলগুলোর সহায়তা না পেলে ভোট প্রশ্নবিদ্ধ হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, মূলত রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা নিতে হবে। কারণ, মূল প্লেয়ারদের সহযোগিতা না পেলে প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন হয়ে যাবে। আমরা আপনাদের সঙ্গে পেতে চাই।
এ সময় সিইসি বলেন, এখানে একটা বিষয় পরিষ্কার করা প্রয়োজন, আপনারা অন্যভাবে নেবেন না। দলের বড়-ছোট নেই ইসির কাছে। সব দলই আমাদের কাছে সমান, সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখতে চাই। বড়-ছোট মাপার ক্রাইটেরিয়া আমাদের কাছে নেই। আমাদের কাছে যারা নিবন্ধিত, সবাই আমাদের কাছে সমান। মূল্যবান মতাত, পরামর্শ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবো, গ্রহণযোগ্য হলে আমাদের উপকার হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের দিন ও নির্বাচনের পরে- এ তিনটি ফেইজে আপনাদের সহযোগিতা লাগবে। এরইমধ্যে ঢাকা শহর পোস্টারে ছেয়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
সিইসি বলেন, এখন ঢাকা শহরে পোস্টারে ছেয়ে গেছে। অলরেডি পোস্টার লাগিয়ে ফেলেছে। অথচ আমরা পোস্টার নিষিদ্ধ করেছি। আমরা গণমাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছি এগুলো সরাতে হবে। এ ধরনের পোস্টার অ্যালাউ করবো না। আগেভাগে জানিয়ে দিচ্ছি-যারা পোস্টার লাগিয়েছেন দয়া করে নিজেরা সরিয়ে ফেলেন। এটা হবে ভদ্র আচরণ। আর যেন কেউ পোস্টার লাগাবেন না।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আচরণবিধি প্রকাশ হয়েছে। আচরণবিধি অনুযায়ী বিহেভ করবেন। যে দল এটা করবেন না আমরা মনে করবো, নিয়ত সাফ নয়। কারণ, এসব ক্ষেত্রে আমরা স্পেয়ার করবো না। যেখানে ব্যত্যয় ঘটবে আমরা ঝাঁপিয়ে পড়বো, যখন তফসিল ঘোষণা করবো। আশা করবো, ভদ্রোচিতভাবে এসব সরিয়ে ফেলা, আর না লাগানো।
অনেক অতিরিক্ত দায়িত্বে ইসি, তার উপরে এসে গেছে গণভোটে
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট নেওয়া, সরকারি কর্মকর্তা ও কারা হেফাজতে থাকা ব্যক্তিদের ভোট নেওয়াসহ বিভিন্ন কাজের বিষয় তুলে ধরেন সিইসি। এর সঙ্গে গণভোটের বিষয়টি অফিসিয়িালি না জানলেও কাজের পরিধির কথা তুলে ধরেন তিনি।
সিইসি বলেন, সুন্দর জাতীয় নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য আপনাদের সঙ্গে পেতে চাই। আমাদের অনেকগুলো অতিরিক্ত দায়িত্ব এসে পড়েছে- আউট অব কান্ট্রি ভোটিংয়ের দিকে যাচ্ছি, নির্বাচনী কাজে জড়িতদের ভোটের ব্যবস্থা, সরকারি চাকরিজীবীদের ভোটের ব্যবস্থা…। আরেকটি বিষয় খুবই আলোচনায় আছে যে, রেফারেন্ডাম একটা বিষয়, এখনো অফিশিয়ালি আমরা কিছু জানি না। কিন্তু আলোচনা যা দেখছি, এইটাও যদি আমাদের আমাদের ওপর এসে পড়ে! এমনিতেই তো এক ধরনের বিশেষ পরিস্থিতির মধ্যে, একটি বিশেষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হচ্ছে।
মুসিবত মোকাবিলা করতে হবে
সোশাল মিডিয়ার অপব্যবহারের বিষয়টিকে এ সময় মুসিবত উল্লেখ করেন সিইসি। তিনি বলেন, এ মুসিবত, এআই অপব্যহার করে বোগাস জিনিস ছুড়ে দেওয়া আগে ছিল না। যুদ্ধ কত ফ্রন্টে করতে হচ্ছে আমাদের। কতটা ফ্রন্ট্রে আমাদের যুদ্ধ করতে হবে। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া পারবো না। আপনাদের সহযোগিতা চাই।

ডিজিটাল রিপোর্ট 




















