হামলার পাশাপাশি ইসরায়েল গাজাতে সর্বাত্মক অবরোধও জারি রেখেছে। ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে গত এক মাস ধরে গাজায় গমের একটা দানাও ঢুকতে দিচ্ছে না বর্বর ইসরায়েল।
এতে করে ফিলিস্তিনের এই উপত্যকায় দেখা দিয়েছে তীব্র খাদ্য সংকট। এই বিষয়ে বিশ্বজুড়ে ক্ষোভের সঞ্চার হলেও ইসরায়েল বলছে, গাজায় গমের একটা দানাও ঢুকবে না। খবর আনাদোলুর।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, ইসরায়েলি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ সোমবার অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় “গমের একটি দানাও” প্রবেশ করা রোধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ইসরায়েলি দৈনিক ইয়েদিওথ আহরোনোথের প্রকাশিত বিবৃতিতে স্মোট্রিচ বলেছেন, “গমের একটি দানাও গাজায় প্রবেশ করবে না।”
স্থানীয় সরকার এবং মানবাধিকার প্রতিবেদন অনুসারে, গত ২ মার্চ থেকে গাজার সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। এর ফলে এই অঞ্চলে মানবিক, ত্রাণ এবং চিকিৎসা সহায়তার সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে এবং এতে করে সেখানে এক অভূতপূর্ব মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে।
মূলত গাজায় নতুন করে আক্রমণের অংশ হিসেবেই এই অবরোধটি আরোপ করা হয়েছে। গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি বিমান হামলায় প্রায় ১৪০০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৩৪০০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের বর্বর এই হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তিও ভেঙে দিয়েছে।
স্মোট্রিচ বলেছেন, তিনি এখনও গাজা থেকে ইসরায়েলি বন্দিদের ফিরিয়ে আনার চেয়ে হামাসকে পরাজিত করাকেই অগ্রাধিকার দেন।
গত সপ্তাহান্তে নেতানিয়াহু গাজায় আক্রমণ আরও বাড়ানোর ঘোষণা দেন। এছাড়া ফিলিস্তিনি এই ছিটমহল থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের বিষয়ে ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টাও চলছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় নৃশংস ইসরায়েলি আক্রমণে ৫০ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
এর আগে গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে আগ্রাসনের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও হয়েছে ইসরায়েল।