সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ সংশোধনের আভাস দিয়েছেন সরকারের দুজন উপদেষ্টা। চাকরি অধ্যাদেশ নিয়ে কর্মচারীদের দাবির বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা হবে বলেও জানিয়েছেন তারা।
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে রোববার (১ জুন) খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে স্মারকলিপি দেন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মচারী ঐক্য ফোরামের নেতারা। এ সময় অধ্যাদেশ বাতিলের সপক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন তারা। তার আগে বেলা ১১টার দিকে সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের সামনে বাদামতলায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন কর্মচারীরা।
জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, ‘এটার (অধ্যাদেশ) যে একটা ত্রুটি আছে, সেটা সম্পর্কে কিন্তু আমরা সম্পূর্ণ সচেতন। আমি আপনাদের বাতিল করার দাবি উপদেষ্টা পরিষদে জানাব। আপনারা ভেবে দেখবেন, এই অধ্যাদেশটি রেখে কী কী সেফ গার্ডস ইন্ট্রোডিউস করলে এটা গ্রহণযোগ্য হবে।’
রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন ‘কথা বলার চ্যানেলটা খোলা থাকুক। আপনারা অপব্যবহারের ভয় পাচ্ছেন, প্রয়োগ তো হয়নি। মিস ইউজের ভয় বিবেচনায় নিলাম। আইনটিকে আপনারা একভাবে দেখছেন, সরকার অন্যভাবে দেখেছে। আপনাদের কথাগুলো কনভে করা হবে। আমরা বৃহত্তর পরিসরে আলোচনা করব। যদি আপনাদের সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন হয়, আবারও কথা বলব।’
উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠকের সময় বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-মহাসচিব নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছি। এই আইন করে প্রত্যেক কর্মচারীকে আঘাত দেওয়া হয়েছে।’
বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এই আইন প্রয়োগ করবেন আর ভোগ করব আমরা। আমাদের দাসত্বে রূপান্তরের জন্য এটা করা হয়েছে। আংশিক সংশোধন নয়, আমরা এটা সম্পূর্ণ বাতিল চাই।’
বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান বাদিউল কবীর বলেন, ‘ভেতর থেকে কে এই কালো আইন করতে উৎসাহিত করল, যখন পরিস্থিতি অস্থিতিশীল। এ আইন না করলে কী ক্ষতি হতো আর এটা প্রয়োগ করলে কী ক্ষতি হবে, সেটা ভেবে দেখার অনুরোধ করছি। এই আইনের ফলে সরকারি কর্মচারীদের সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড় করানো হচ্ছে।’
স্মারকলিপি জমা দেওয়ার আগে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে নূরুল ইসলাম বলেন, ‘তিন উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দেওয়ার পর আমরা আমাদের সহায়তাকারী ভূমিসচিব স্যারের সঙ্গে বসব। এরপর আমরা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব। সারা দেশের ১৮ লাখ সরকারি কর্মচারীর জন্য আমাদের মেসেজ হলো, আমরা যে কর্মসূচি দেব, আপনারা দেশব্যাপী সেই কর্মসূচি পালন করবেন।’
নূরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি একজন সচিবকে বলেছি, স্যার, ঈদের ছুটি শুরু হয়ে যাবে। ঈদের ছুটির আগে আমাদের একটা ভালো খবর দেন। আমরা সবাই যাতে হাসিমুখে, খুশিমনে ঈদ করতে যেতে পারি। আর যদি তা না হয়, এই আন্দোলন এমন দুর্বার গতিতে চলবে যে আমরা বাধ্য হব এই দাবির সঙ্গে অন্যান্য দাবি এক করতে।’