ময়মনসিংহ , বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

করোনার পর এইচএমপিভি ভারতে আক্রান্ত ২

  • স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট সময় ১১:০৪:০৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৫
  • ২ বার পড়া হয়েছে

করোনা ভাইরাসের পর নতুন এক ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) নামের এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে চীনে। সতর্কতায় বলা হয়েছে- শিশু, প্রাপ্তবয়স্ক এবং যাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল তারা এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মারাত্মক অসুস্থ হতে পারেন।

 

সোমবার ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্স (আইসিএমআর) এ বিষয়ে সতর্কতা দিয়েছে। তারা বলেছে, এরই মধ্যে ভারত সহ বিশ্ব জুড়ে বিস্তার লাভ করেছে এই ভাইরাস।

 

তাতে আরও বলা হয়, শ্বাস-প্রশ্বাসের অসুস্থতা বৃদ্ধি পাওয়ার যেকোনো ঝুঁকি মোকাবিলায় সক্ষম তারা। এ খবর দিয়ে অনলাইন এনডিটিভি বলছে, কোভিড-১৯ সংক্রমণের ৫ বছর পরে এই ভাইরাসের সংক্রমণে আক্রান্ত ব্যক্তিদের হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। বিভিন্ন রিপোর্ট এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্ট অনুযায়ী, হাসপাতালগুলো এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীতে উপচে পড়ছে। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পাদনের স্থানে ভিড় শুরু হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী বেশ কিছু অ্যাকাউন্ট থেকে দাবি করা হয়েছে ইনফ্লুয়েঞ্জা এ,এইচএমপিভি, মাইকোপ্লাজমা নিউমোনিয়া এবং কোভিড-১৯ এর মতো বহুবিধ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে চীনে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, চীনে ঘোষণা করা হয়েছে জরুরি অবস্থা। তবে এ বিষয়ে সরকারি কোনো নিশ্চিত বার্তা দেয়া হয়নি। রিপোর্টে আরও বলা হয়, ফ্লু’র মতো লক্ষণ সৃষ্টি করে এইচএমপিভি। এই ভাইরাস শ্বাসযন্ত্রের উপরের অংশকে আক্রান্ত করে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা শ্বাসযন্ত্রের নিচের অংশকেও সংক্রমিত করে থাকে। শীতকালে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় এইচএমপিভি। আবার বসন্তের শুরুতেও এ সংক্রমণ হয়। ফ্লু বা সাধারণ ঠাণ্ডাজনিত রোগের মতোই লক্ষণ দেখায় এইচএমপিভি। হাঁচি, কাশি, ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে এই ভাইরাস একজনের দেহ থেকে অন্যজনকে সংক্রমিত করতে পারে।

এক্ষেত্রে যেসব লক্ষণ দেখা যায় তা হলো- কাশি, জ্বর, নাক দিয়ে পানি পড়া, গলার ভেতর চুলকানি, শ্বাস-প্রশ্বাস ছোট হয়ে আসা। সংক্রমণের ভয়াবহতার ওপর নির্ভর করে রোগীকে এক্ষেত্রে তিন থেকে ৬ দিন ইনকিউবেশন পিরিয়ডে রাখা প্রয়োজন হয়। এইচএমপিভি সংক্রমণ কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভয়াবহ হতে পারে। এর ফলে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হতে পারে। কিছু জটিলতার মধ্যে আছে ব্রোকিওলাইটিস, ব্রোঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, কানের সংক্রমণ ইত্যাদি। প্রতিরোধে যেসব ব্যবস্থা নেয়া যায় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ১. সংক্রমণ থেকে নিরাপদ হতে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে। ২. হাঁচি বা কাশির সময় নাক ও মুখ ঢেকে রাখতে হবে। ৩. আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে রক্ষা পেতে মুখে মাস্ক পরতে হবে এবং তার সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে। ৪. চোখে, নাকে, মুখে হাত না ধুয়ে স্পর্শ করা এড়িয়ে যেতে হবে। ৫. যদি আক্রান্ত হন তাহলে একা থাকার অভ্যাস করতে হবে।

ওদিকে আইসিএমআর এক বিবৃতিতে বলেছে, এরই মধ্যে ভারতের বেঙ্গালুরুতে এইচএমপিভি’তে দু’জন আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে একটি শিশুর বয়স তিন মাস। তাকে চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আক্রান্ত অন্য শিশুর বয়স আট মাস। তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগ বলেছে, ভারতের অন্য কোথাও এই ভাইরাসের তথ্য পাওয়া যায়নি। একই সঙ্গে আক্রান্ত দুই শিশু বা তাদের পরিবার সাম্প্রতিক সময়ে কোথাও সফর করেনি। নিয়মিত নজরদারির অধীনে এই দুটি সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়েছে। এর আগে তারা বলেছে, এইচএমপিভি এবং শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত বিভিন্ন সংক্রমণের বিষয়ে নজরদারি করছে। বিশেষ করে চীনে এই ভাইরাসের বিস্তার ঘটার পর তারা সর্তক হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্স এবং অন্য স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি জয়েন্ট মনিটরিং গ্রুপ (জেএমজি) গঠন করা হয়েছে পরিস্থিতি মূল্যায়ন করার জন্য। কর্ণাটক ও মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকার নাগরিকদের জন্য নির্দেশনা জারি করেছে। কেরালার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ প্রবীণ এবং অন্তঃসত্ত্বাদেরকে মুখে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে এ সময়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই বলে জানান তিনি।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

করোনার পর এইচএমপিভি ভারতে আক্রান্ত ২

আপডেট সময় ১১:০৪:০৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৫

করোনা ভাইরাসের পর নতুন এক ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) নামের এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে চীনে। সতর্কতায় বলা হয়েছে- শিশু, প্রাপ্তবয়স্ক এবং যাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল তারা এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মারাত্মক অসুস্থ হতে পারেন।

 

সোমবার ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্স (আইসিএমআর) এ বিষয়ে সতর্কতা দিয়েছে। তারা বলেছে, এরই মধ্যে ভারত সহ বিশ্ব জুড়ে বিস্তার লাভ করেছে এই ভাইরাস।

 

তাতে আরও বলা হয়, শ্বাস-প্রশ্বাসের অসুস্থতা বৃদ্ধি পাওয়ার যেকোনো ঝুঁকি মোকাবিলায় সক্ষম তারা। এ খবর দিয়ে অনলাইন এনডিটিভি বলছে, কোভিড-১৯ সংক্রমণের ৫ বছর পরে এই ভাইরাসের সংক্রমণে আক্রান্ত ব্যক্তিদের হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। বিভিন্ন রিপোর্ট এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্ট অনুযায়ী, হাসপাতালগুলো এই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীতে উপচে পড়ছে। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পাদনের স্থানে ভিড় শুরু হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী বেশ কিছু অ্যাকাউন্ট থেকে দাবি করা হয়েছে ইনফ্লুয়েঞ্জা এ,এইচএমপিভি, মাইকোপ্লাজমা নিউমোনিয়া এবং কোভিড-১৯ এর মতো বহুবিধ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে চীনে। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, চীনে ঘোষণা করা হয়েছে জরুরি অবস্থা। তবে এ বিষয়ে সরকারি কোনো নিশ্চিত বার্তা দেয়া হয়নি। রিপোর্টে আরও বলা হয়, ফ্লু’র মতো লক্ষণ সৃষ্টি করে এইচএমপিভি। এই ভাইরাস শ্বাসযন্ত্রের উপরের অংশকে আক্রান্ত করে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা শ্বাসযন্ত্রের নিচের অংশকেও সংক্রমিত করে থাকে। শীতকালে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় এইচএমপিভি। আবার বসন্তের শুরুতেও এ সংক্রমণ হয়। ফ্লু বা সাধারণ ঠাণ্ডাজনিত রোগের মতোই লক্ষণ দেখায় এইচএমপিভি। হাঁচি, কাশি, ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে এই ভাইরাস একজনের দেহ থেকে অন্যজনকে সংক্রমিত করতে পারে।

এক্ষেত্রে যেসব লক্ষণ দেখা যায় তা হলো- কাশি, জ্বর, নাক দিয়ে পানি পড়া, গলার ভেতর চুলকানি, শ্বাস-প্রশ্বাস ছোট হয়ে আসা। সংক্রমণের ভয়াবহতার ওপর নির্ভর করে রোগীকে এক্ষেত্রে তিন থেকে ৬ দিন ইনকিউবেশন পিরিয়ডে রাখা প্রয়োজন হয়। এইচএমপিভি সংক্রমণ কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভয়াবহ হতে পারে। এর ফলে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হতে পারে। কিছু জটিলতার মধ্যে আছে ব্রোকিওলাইটিস, ব্রোঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, কানের সংক্রমণ ইত্যাদি। প্রতিরোধে যেসব ব্যবস্থা নেয়া যায় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ১. সংক্রমণ থেকে নিরাপদ হতে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে। ২. হাঁচি বা কাশির সময় নাক ও মুখ ঢেকে রাখতে হবে। ৩. আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে রক্ষা পেতে মুখে মাস্ক পরতে হবে এবং তার সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে। ৪. চোখে, নাকে, মুখে হাত না ধুয়ে স্পর্শ করা এড়িয়ে যেতে হবে। ৫. যদি আক্রান্ত হন তাহলে একা থাকার অভ্যাস করতে হবে।

ওদিকে আইসিএমআর এক বিবৃতিতে বলেছে, এরই মধ্যে ভারতের বেঙ্গালুরুতে এইচএমপিভি’তে দু’জন আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে একটি শিশুর বয়স তিন মাস। তাকে চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আক্রান্ত অন্য শিশুর বয়স আট মাস। তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগ বলেছে, ভারতের অন্য কোথাও এই ভাইরাসের তথ্য পাওয়া যায়নি। একই সঙ্গে আক্রান্ত দুই শিশু বা তাদের পরিবার সাম্প্রতিক সময়ে কোথাও সফর করেনি। নিয়মিত নজরদারির অধীনে এই দুটি সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়েছে। এর আগে তারা বলেছে, এইচএমপিভি এবং শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত বিভিন্ন সংক্রমণের বিষয়ে নজরদারি করছে। বিশেষ করে চীনে এই ভাইরাসের বিস্তার ঘটার পর তারা সর্তক হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্স এবং অন্য স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি জয়েন্ট মনিটরিং গ্রুপ (জেএমজি) গঠন করা হয়েছে পরিস্থিতি মূল্যায়ন করার জন্য। কর্ণাটক ও মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকার নাগরিকদের জন্য নির্দেশনা জারি করেছে। কেরালার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ প্রবীণ এবং অন্তঃসত্ত্বাদেরকে মুখে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে এ সময়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই বলে জানান তিনি।