জামাতা কর্তৃক শ্বাশুড়ি খুন
ঘাতক জামাইকে ২ দিনেই কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই ময়মনসিংহ জেলা
গত ০৩/০৫/২০২৫ তারিখ দিবাগত রাত অনুমান ০২.০০ ঘটিকায় কুমিল্লা জেলার সদর থানাধীন কোটবাড়ী কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে এজাহারনামীয় আসামী মোঃ মনির হোসেন (২৫) কে গ্রেফতার করেছে পিবিআই ময়মনসিংহ জেলা।
এজাহারের বর্ণনা মতে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে গত ০১/০৫/২০২৫ তারিখ রাত অনুমান ০২.০০ ঘটিকায় আসামী মনির অন্যান্য আসামীদের সাথে নিয়ে বেআইনী জনতাবদ্ধে বাদীর মায়ের বসত ঘরে প্রবেশ করে। অন্যান্য আসামীদের হুকুমে আসামী মনির তার হাতে থাকা ধারলো চাকু দিয়ে বাদীর বোন রুমা আক্তারকে ঘুমন্ত অবস্থায় হত্যার উদ্দেশ্যে তার কপালে, বাম কানের উপরে ও বাম হাতে পরপর তিনটি ঘাই দিয়ে গুরুতর জখম করে। বাদীর বোনের ডাক চিৎকারে বাদী ও তার মা ফজিলা বেগম আসামী মনিরকে ফিরাতে গেলে মনির তার হাতে থাকা রক্তমাখা চাকু দিয়ে ফজিলা বেগমকে হত্যার উদ্দেশ্যে পেটের মাঝ বরাবর উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। আশেপাশের লোকজন জখমী রুমা ও তার মা ফজিলা বেগমকে প্রথমে মুক্তাগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফজিলা বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন। উক্ত ঘটনায় ডিসিস্টের মেয়ে তাছলিমার অভিযোগে মুক্তাগাছা থানার মামলা নং-০৩, তারিখ-০১/০৫/২০২৫ ধারা-১৪৩/৪৪৭/৪৪৮/৩২৬/৩০৭/৩০২/৫০৬/১১৪/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০ রুজু হয়। থানা পুলিশের তদন্তকালে গত ০৩/০৫/২৫ তারিখে পিবিআই ময়মনসিংহ জেলা স্বউদ্যোগে মামলাটি অধিগ্রহণ করে।
অ্যাডিশনাল আইজিপি, পিবিআই জনাব মোঃ মোস্তফা কামাল এর তত্ত্বাবধানে পিবিআই ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার জনাব মোঃ রকিবুল আক্তার এর সার্বিক সহযোগীতায় তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নিঃ) খাজেম মাহমুদ মামলার তদন্ত শুরু করেন।
পিবিআই টিম তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ০৩/০৫/২০২৫ তারিখ দিবাগত রাত অনুমান ০২.০০ ঘটিকায় হত্যাকান্ডে জড়িত এজাহারনামীয় আসামী মোঃ মনির হোসেন (২৫), পালক পিতা-মোঃ সেলিম, মাতা-কল্পনা আক্তার, গ্রাম-হরিরামপুর, ১নং দুল্লা ইউনিয়ন, থানা-মুক্তাগাছা, জেলা-ময়মনসিংহকে কুমিল্লা জেলার সদর থানাধীন কোটবাড়ী কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারকৃত এজাহারনামীয় আসামী মনিরকে অদ্য ০৪/০৫/২০২৫ তারিখে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। উক্ত আসামী বিজ্ঞ আদালতে নিজেকে সম্পৃক্ত করে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
এ বিষয়ে পিবিআই, ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার জনাব মোঃ রকিবুল আক্তার এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, পারিবারিক বিরোধের জের ধরে ঘাতক জামাতা মনির তার স্ত্রী রুনা ও তার শ্বাশুড়ি ফজিলা বেগমকে হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করে পালিয়ে যায়। অতপর জখমীদ্বয়কে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে শ্বাশুড়ি মারা যায়। উক্ত ঘটনার পর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। উক্ত ঘটনার পর আসামী তার পরিচয় গোপন করে কুমিল্লা জেলার সদর থানাধীন কোটবাড়ী কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আত্মগোপনে ছিল। পিবিআই ময়মনসিংহের একটি আভিযানিক টিম তথ্য প্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উক্ত আসামীকে গ্রেফতার করে। এ হত্যাকান্ডে আরো কারো সম্পৃক্ততা আছে কিনা তা তদন্ত সাপেক্ষে প্রকাশিত হবে।
পিবিআই ময়মনসিংহ জেলার সকল অফিসার ও ফোর্সের আন্তরিকতা, নিরলস প্রচেষ্টা ও পিবিআই হেডকোয়ার্টার্সের সহযোগীতায় মাত্র দুই দিনের মধ্যেই হত্যাকান্ডের সহিত জড়িত প্রধান আসামী মনিরকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়।