ময়মনসিংহ , শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

দেড় কিলোমিটার সড়কে হেলেদুলে চলছে গাড়ি,

রাজশাহীর বানেশ্বর থেকে পাবনার ঈশ্বরদী সড়ক প্রশস্তকরণ কাজ নির্ধারিত সময়ে (চলতি অর্থবছরে) শেষ হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জমি অধিগ্রহণে জটিলতা, টানা বৃষ্টি, ক্ষতিপূরণ না পাওয়া জমির মালিকদের বাধা ও সড়কের বৈদ্যুতিক স্থাপনা অপসারণ না করায় সৃষ্টি হয়েছে এ পরিস্থিতি। এই পরিস্থিতিতে ওই সড়কটি ঘিরে ঈদযাত্রা চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রীরা।

তাছাড়া চুক্তি অনুযায়ী কাজের মেয়াদকাল শেষ হয়ে আসায় তড়িঘড়ি করে কাজ চলছে ওই সড়কে। গুরুত্বপূর্ণ সড়কটিতে রাতদিন কাজ করছেন শ্রমিকরা। এতে কাজের মান নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। তাছাড়া রাতদিন সমান তালে কাজ চলতে থাকায় সৃষ্টি হচ্ছে ভয়াবহ যানজট।

ঠিকাদারের তত্ত্বাবধায়ক আনোয়ার হোসেন উজ্জল জানান, টানা বৃষ্টি, ক্ষতিপূরণ না পাওয়া জমির মালিকদের বাধা ও সড়কের বিদ্যুতের পোল অপসারণ না করায় পদে পদে বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। এত বিড়ম্বনায় কংক্রিটের ঢালাই সড়ক নির্মাণ করা যায় না। সড়ক বিভাগ এখনও পুরো সড়ক আমাদের বুঝিয়ে দিতে পারেননি। এরপরও প্রায় ৩০ শতাংশ কাজ শেষ করেছি। বিষয়টি সড়ক বিভাগকে জানানো হয়েছে। তবে সড়ক বিভাগ এখনও কিছু জানায়নি।

 সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন পয়েন্টে খুঁড়ে ফেলা হয়েছে রাস্তা। কোথাও কোথাও ফেলা হয়েছে ক্রংকিট। এ অবস্থায় বৃষ্টির কারণে সড়কজুড়ে কাঁদা দেখা গেছে। সড়কের কিছু পয়েন্টে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। কিছু পয়েন্টে চলছে ঢালাইয়ের কাজ। সড়কের বেহাল দশায় ঈদযাত্রায় যেমন দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। কোরবানি গরু আনা নেওয়ায়ও বিপাকে পড়েছেন তারা। সড়কে গর্তের কারণে হেলেদুলে চলছে গাড়ি। এ কারণে সড়কে প্রায় গাড়ি উল্টে দুর্ঘটনা ঘটছে। তাছাড়া অনেকেই এখনও ক্ষতিপূরণের টাকা না পাননি বলে অভিযোগ করেছেন।

চারঘাট বাজার এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মুরাদ পাশা বলেন, আমি জমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ এখনও পাইনি। তাই ঠিকাদারকে আর কাজ করতে দিব না। সড়কের কাজ শেষের আগেই আমাদের ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে হবে।

স্থানীয় সিফাত আলী বলেন, বাঘা বাজারে আগে ও পরে সব জায়গাতে সড়ক ভালো আছে। বৃষ্টিতে শুধুমাত্র বাজার এলাকার সড়কে হাঁটু পানির গর্তে গাড়ি উল্টে দুর্ঘটনা ঘটছে। সেখানে কাজ চলছে। এখন শুনছি অনেকেই অধিগ্রহণের টাকা না পাওয়ায় কাজে বাধা দিচ্ছেন। কাজ শেষ হতে দেরি হলে দুর্ভোগ আরও বাড়বে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চেয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করাহ হলে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সানজিদা আফরীন ঝিনুকের কল রিসিভ করেননি। এতে তার বক্তব্য জানা যায়নি।

তবে প্রকল্প পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান বলেন, সড়ক নির্মাণ কাজ চলছে। আগামী ৩০ জুনেই শেষ হবে। মেয়াদ বাড়াতে ঠিকাদারের আবেদনের বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের উপর নির্ভর করছে। সময় না বাড়লে অন্য একটি এমটিও প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ শেষ করা হবে।

জমি অধিগ্রহণের জটিলতার বিষয়ে তিনি বলেন, এক বছর আগেই জেলা প্রশাসকের বরাবরে টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। জমির মালিকরা কেন টাকা পাননি, সেটা জেলা প্রশাসকের অফিস ভালো বলতে পারবে।

রাজশাহীর জেলা প্রশাসকের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সিনিয়র সহকারী কমিশনার মানজুরা মুশাররফ বলেন, ‘আমরা ভূমি অধিগ্রহণ শেষ করেছি। নির্দিষ্ট কাগজের অভাবে কিছু মালিক ক্ষতিপূরণের টাকা পাননি। তারা কাগজ জমা দিলেই টাকা পেয়ে যাবেন। বিষয়টি একটি চলমান প্রক্রিয়া।

উল্লেখ্য, বানেশ্বর থেকে চারঘাট, বাঘা ও লালপুর হয়ে ঈশ্বরদী পর্যন্ত সড়কটি ১৮ ফুট প্রশস্ত ছিল, সড়কটি এখন ৩৪ ফুট পর্যন্ত প্রশস্ত করা হয়েছে। ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর সড়কটি নির্মাণ কাজ শেষের কথা ছিল। সময় বাড়ানোর পরও চারঘাট ও বাঘা সদর বাজার এলাকার দেড় কিলোমিটার প্রশস্তকরণ, আলোকায়ন, ড্রেন ও কংক্রিটের ঢালাই সড়ক নির্মাণ এখনও শেষ হয়নি।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

দেড় কিলোমিটার সড়কে হেলেদুলে চলছে গাড়ি,

আপডেট সময় ১১:২৩:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫

রাজশাহীর বানেশ্বর থেকে পাবনার ঈশ্বরদী সড়ক প্রশস্তকরণ কাজ নির্ধারিত সময়ে (চলতি অর্থবছরে) শেষ হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জমি অধিগ্রহণে জটিলতা, টানা বৃষ্টি, ক্ষতিপূরণ না পাওয়া জমির মালিকদের বাধা ও সড়কের বৈদ্যুতিক স্থাপনা অপসারণ না করায় সৃষ্টি হয়েছে এ পরিস্থিতি। এই পরিস্থিতিতে ওই সড়কটি ঘিরে ঈদযাত্রা চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রীরা।

তাছাড়া চুক্তি অনুযায়ী কাজের মেয়াদকাল শেষ হয়ে আসায় তড়িঘড়ি করে কাজ চলছে ওই সড়কে। গুরুত্বপূর্ণ সড়কটিতে রাতদিন কাজ করছেন শ্রমিকরা। এতে কাজের মান নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। তাছাড়া রাতদিন সমান তালে কাজ চলতে থাকায় সৃষ্টি হচ্ছে ভয়াবহ যানজট।

ঠিকাদারের তত্ত্বাবধায়ক আনোয়ার হোসেন উজ্জল জানান, টানা বৃষ্টি, ক্ষতিপূরণ না পাওয়া জমির মালিকদের বাধা ও সড়কের বিদ্যুতের পোল অপসারণ না করায় পদে পদে বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। এত বিড়ম্বনায় কংক্রিটের ঢালাই সড়ক নির্মাণ করা যায় না। সড়ক বিভাগ এখনও পুরো সড়ক আমাদের বুঝিয়ে দিতে পারেননি। এরপরও প্রায় ৩০ শতাংশ কাজ শেষ করেছি। বিষয়টি সড়ক বিভাগকে জানানো হয়েছে। তবে সড়ক বিভাগ এখনও কিছু জানায়নি।

 সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন পয়েন্টে খুঁড়ে ফেলা হয়েছে রাস্তা। কোথাও কোথাও ফেলা হয়েছে ক্রংকিট। এ অবস্থায় বৃষ্টির কারণে সড়কজুড়ে কাঁদা দেখা গেছে। সড়কের কিছু পয়েন্টে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। কিছু পয়েন্টে চলছে ঢালাইয়ের কাজ। সড়কের বেহাল দশায় ঈদযাত্রায় যেমন দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। কোরবানি গরু আনা নেওয়ায়ও বিপাকে পড়েছেন তারা। সড়কে গর্তের কারণে হেলেদুলে চলছে গাড়ি। এ কারণে সড়কে প্রায় গাড়ি উল্টে দুর্ঘটনা ঘটছে। তাছাড়া অনেকেই এখনও ক্ষতিপূরণের টাকা না পাননি বলে অভিযোগ করেছেন।

চারঘাট বাজার এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মুরাদ পাশা বলেন, আমি জমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ এখনও পাইনি। তাই ঠিকাদারকে আর কাজ করতে দিব না। সড়কের কাজ শেষের আগেই আমাদের ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে হবে।

স্থানীয় সিফাত আলী বলেন, বাঘা বাজারে আগে ও পরে সব জায়গাতে সড়ক ভালো আছে। বৃষ্টিতে শুধুমাত্র বাজার এলাকার সড়কে হাঁটু পানির গর্তে গাড়ি উল্টে দুর্ঘটনা ঘটছে। সেখানে কাজ চলছে। এখন শুনছি অনেকেই অধিগ্রহণের টাকা না পাওয়ায় কাজে বাধা দিচ্ছেন। কাজ শেষ হতে দেরি হলে দুর্ভোগ আরও বাড়বে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চেয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করাহ হলে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সানজিদা আফরীন ঝিনুকের কল রিসিভ করেননি। এতে তার বক্তব্য জানা যায়নি।

তবে প্রকল্প পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান বলেন, সড়ক নির্মাণ কাজ চলছে। আগামী ৩০ জুনেই শেষ হবে। মেয়াদ বাড়াতে ঠিকাদারের আবেদনের বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের উপর নির্ভর করছে। সময় না বাড়লে অন্য একটি এমটিও প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ শেষ করা হবে।

জমি অধিগ্রহণের জটিলতার বিষয়ে তিনি বলেন, এক বছর আগেই জেলা প্রশাসকের বরাবরে টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। জমির মালিকরা কেন টাকা পাননি, সেটা জেলা প্রশাসকের অফিস ভালো বলতে পারবে।

রাজশাহীর জেলা প্রশাসকের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সিনিয়র সহকারী কমিশনার মানজুরা মুশাররফ বলেন, ‘আমরা ভূমি অধিগ্রহণ শেষ করেছি। নির্দিষ্ট কাগজের অভাবে কিছু মালিক ক্ষতিপূরণের টাকা পাননি। তারা কাগজ জমা দিলেই টাকা পেয়ে যাবেন। বিষয়টি একটি চলমান প্রক্রিয়া।

উল্লেখ্য, বানেশ্বর থেকে চারঘাট, বাঘা ও লালপুর হয়ে ঈশ্বরদী পর্যন্ত সড়কটি ১৮ ফুট প্রশস্ত ছিল, সড়কটি এখন ৩৪ ফুট পর্যন্ত প্রশস্ত করা হয়েছে। ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর সড়কটি নির্মাণ কাজ শেষের কথা ছিল। সময় বাড়ানোর পরও চারঘাট ও বাঘা সদর বাজার এলাকার দেড় কিলোমিটার প্রশস্তকরণ, আলোকায়ন, ড্রেন ও কংক্রিটের ঢালাই সড়ক নির্মাণ এখনও শেষ হয়নি।