নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন তারেক রহমান বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নগরীর কাজীর দেউরীস্থ আলমাস সিনেমার সামনে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির র্যালি পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আমির খসরু বলেন, ‘এখন আমাদের প্রথম কাজ হবে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হলে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার গঠন করতে হবে। জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের মালিকানার ভিত্তিতে আগামীর বাংলাদেশ হবে জনপ্রতিনিধিত্বমূলক। জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সংসদের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের চাওয়া পাওয়ার কথাগুলো বলতে পারবে, যা এখন কেউ বলতে পারছে না।’
দেশের স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার বিষয়ে বিএনপির এই সদস্য বলেন, ‘দেশের মানুষের বিনামূল্যে প্রাথমিক চিকিৎসার সব ধরনের কার্যক্রম শেষ হয়েছে। অর্থাৎ বিএনপি যদি দায়িত্ব পায়, দেশের সাধারণ মানুষের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য পকেট থেকে কোনো টাকা খরচ করতে হবে না। দেশের মানুষের শিক্ষা এবং দক্ষতা বাড়ানোর জন্য বিশাল বিনিয়োগের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এই স্লোগানটি শুধু রাজনীতিকে গণতন্ত্রায়ণ নয়, অর্থনীতিকেও গণতন্ত্রায়ণ করতে হবে। অর্থনীতিকে গণতন্ত্রায়ণ করে বাংলাদেশের প্রত্যেক মানুষ যাতে আগামী বাংলাদেশে অর্থনীতিতে উন্নয়নের সহযোগিতা করতে পারে, অংশগ্রহণ করতে পারে, নিজেদের জীবনযাপনের মান উন্নয়ন করতে পারে, এটাই হবে আগামী বাংলাদেশ, তারেক রহমানের নেতৃত্বে। আরও অনেক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।’
দেশের অর্থনীতি ও পরিকল্পনার বিষয়ে আমির খসরু বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য বিশাল প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে। এছাড়া আরও অনেক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে কামারকুমার থেকে শুরু করে যারা কাজ করছে, তাদের জন্য বিশাল প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে, ইনশাআল্লাহ। বাড়িতে বসে পণ্য তৈরি করে বিদেশে রফতানি করার ব্যবস্থা করা হবে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে শেয়ারবাজার, ব্যাংকিংসহ সবকিছু সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার মাধ্যমে সবাই যাতে এই সুযোগ পায়, সবাই যাতে ব্যবসা এবং চাকরিতে অংশগ্রহণ করতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষের হৃদয় জানে, আজকে বাংলাদেশে ধানের শীষের জোয়ার শুরু হয়েছে। এই জোয়ারকে কেউ বাধাগ্রস্ত করতে চাইলে তারা ভেসে যাবে। আমরা চাই সুষ্ঠু নির্বাচন। দেশের মানুষ যাকে ইচ্ছা নির্বাচিত করতে পারবে। এখন কেউ যদি মনে করে তারা নির্বাচিত হতে পারবে না, সেজন্য নির্বাচনের প্রয়োজন নেই, সেটা তাদের সমস্যা, এটা বাংলাদেশের মানুষের সমস্যা নয়। সুতরাং বার্তা পরিষ্কার, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সমস্ত জনগণ নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আপনাদেরকে গ্রামেগঞ্জে যেতে হবে, তারেক রহমানের নির্দেশিত খালকাটা প্রকল্প হাতে নিতে হবে। প্রত্যেক এলাকার খালগুলো কেটে পানির নিষ্কাশনব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে হবে। সবকিছু সমাধান হবে ইনশাআল্লাহ। তারেক রহমান সাহেব ৩০ কোটি গাছ লাগাবেন। সকলে মিলে আগামী বাংলাদেশ গড়তে হবে। নেতা নয়, সকলের অবদান থাকতে হবে। এজন্য রাজনীতির সঙ্গে সঙ্গে আমরা অর্থনীতিতেও গণতন্ত্রের কথাও বলছি।’
এদিকে প্রধান বক্তার বক্তব্যে মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, ‘আমরা এখন নির্বাচনের সড়কে ঢুকেছি। আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য জনগণ উন্মুখ হয়ে আছে। দেশের মানুষ ধানের শীষের অপেক্ষায় আছে। লক্ষ জনতা আজকে এখানে জমায়েত হয়েছে শুধুমাত্র গণতন্ত্রের যে অগ্রযাত্রায় আমরা নেমেছি, সেটিকে সফলভাবে আরও বেশি সমাদৃত করতে। এ গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রাকে কেউ যাতে বাধাগ্রস্ত করতে না পারে- সেদিকে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।’
কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘জনগণ এখন নির্বাচনমুখী। এখন থেকেই ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যেতে হবে। সেইসঙ্গে নির্বাচন বানচালের যেকোনো ষড়যন্ত্র রুখে দিতে বিএনপির নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব নাজিমুর রহমানের পরিচালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শামসুল আলম। বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইদ্রিস মিয়া, সদস্য সচিব লায়ন হেলাল উদ্দিন, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ আজিজ প্রমুখ।