ময়মনসিংহ , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

পশুর হাটে ক্যাশলেস লেনদেন দ্বিগুণ

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় ০১:০৮:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই ২০২৪
  • ৫২ বার পড়া হয়েছে

সংগৃহীত ছবি

অনলাইন নিউজ-

২০৩১ সালের মধ্যে শতভাগ ক্যাশলেস লেনদেন অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন সরকার। তারই অংশ হিসেবে গত কোরবানির ঈদে পশুর হাটগুলোতে ক্যাশলেস লেনদেনকে সফল করার উদ্দেশ্যে ব্যাংকিং সেবা নিয়ে হাজির হয় ৯টি ব্যাংক ও দুটি মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান গুলো। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী এ বছর নগদ টাকা ছাড়াই পশুর হাটে ৯৪ কোটি টাকার পশু বেচাকেনা হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রতিবছর কোরবানির ঈদকেন্দ্রিক পশু কেনা-বেচায় একটি বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়।বেশির ভাগই সম্পন্ন হয় নগদ টাকায়। কিন্তু গত দুই বছরের মতো স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামের পশুর হাটগুলোতে ক্যাশলেস লেনদেন চালুর উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

এ বছর ঢাকা-চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও নাটোরের সিংড়া পৌরসভাসহ মোট ১০টি হাটে ক্যাশলেস লেনদেনের কার্যক্রম চালু ছিল। এসব হাটে নগদ টাকার পরিবর্তে মোবাইল ব্যাংকিং ও কার্ডের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করে পশু কেনাবেচা হয়।এ বছর ঢাকা ও চট্টগ্রাম মিলে মোট ১০টি হাটে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ স্মার্ট হাট’ কর্মসূচি চালু ছিল। উত্তরা দিয়াবাড়ী স্মার্ট হাট কার্যক্রমে প্রতিনিধিত্ব করে ব্র্যাক ব্যাংক। এটিএম বুথ এবং পস সিস্টেমের মাধ্যমে টাকা তুলেছেন পশু ক্রেতারা। অন্যদিকে পশু বিক্রির টাকা এজেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে জমা দিয়েছেন ব্যাপারীগন।এতে করে দুই পক্ষই উপকৃত হয়েছেন। কারণ ডিজিটাল লেনদেনের সুযোগ থাকার কারণে কোনো পক্ষকেই মোটা অঙ্কের টাকা বহন করতে হয় না। এতে ছিনতাই ঝুঁকি কমে। পাশাপাশি কমে যায় নকল টাকার ঝামেলা। চলতি ২০২৩ সালে স্মার্ট হাট ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে মোট ৪৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত তথ্য বলছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ভাটারা সুতিভোলা পশুর হাট ও উত্তরা দিয়াবাড়ী পশুর হাটে ক্যাশলেস লেনদেন পরিচালনার দায়িত্বে ছিল ব্যাংক এশিয়া ও ব্র্যাক ব্যাংক। মোহাম্মদপুর বসিলা ও গাবতলী পশুর হাটে এই দায়িত্বে ছিল সিটি ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংক। পাশাপাশি নগদ ও বিকাশ এসব হাটে তাদের বুথ বসানো হয়। আর মিরপুর ইস্টার্ন হাউজিংয়ে এবি ব্যাংক ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাশের পশুর হাটে ক্যাশলেস লেনদেনের দায়িত্বে ছিল আইএফআইসি ব্যাংক ও পিওএস সরবারহ করে পূবালী ব্যাংক। অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের হাজারীবাগ বাজারের দায়িত্বে ছিল পূবালী ব্যাংক ও বিকাশ। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাগরিকা হাটে ইসলামী ব্যাংক ও নগদ, নূরনগর হাটে ইউসিবি ব্যাংক ও নগদ, নাটোরের সিংড়া পৌরসভার পশুর হাটে ক্যাশলেস লেনদেন বাস্তবায়নের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক ও নগদকে। এসব হাটে সম্ভাব্য যেসব জেলা থেকে খামারি ও ব্যবসায়ীরা আসতে পারেন, তাঁদের ব্যাংক হিসাব খুলে দেওয়ার কার্যক্রম হাতে নেন ব্যাংকগুলো।

দেশের লেনদেনব্যবস্থার আধুনিকায়ন ঘটলেও স্বল্পমেয়াদি পশুর হাটের বিপুল পরিমাণ লেনদেনের বেশির ভাগই নগদ অর্থে সংঘটিত হয়। ফলে একদিকে নগদ অর্থের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়,অন্যদিকে ব্যাংক, এটিএমসমূহে অর্থ জোগান দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত নোট ছাপানো ও সরবরাহের প্রয়োজন হয়। নগদ অর্থের এই ব্যাপক লেনদেনের ফলে বিভিন্ন ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যেমন জাল টাকার বিস্তার, চুরি-ছিনতাই ইত্যাদি নানা ধরনের অপরাধ বৃদ্ধি পায়। ফলে এই সময় পশু ক্রেতা-বিক্রেতার অর্থের নিরাপত্তা বিধান, অপরাধী শনাক্তকরণ এবং জাল টাকা শনাক্তকরণে সতর্কতা অবলম্বন করা হয়।

পশুর হাটে ক্যাশলেস লেনদেন দ্বিগুণ

এসব সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে ২০২২ সালে কোরবানির ঈদকেন্দ্রিক ঢাকায় অবস্থিত ছয়টি পশুর হাটে লেনদেন ডিজিটাল মাধ্যমে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে পাইলট কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সেই পাইলট কার্যক্রমে প্রায় ৩৩ কোটি টাকার লেনদেন ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পাদিত হয়। সফলভাবে এই পাইলট কার্যক্রম পরিচালনার পরিপ্রেক্ষিতে ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ’ প্রকল্পের আওতায় ২০২৩ সালের কোরবানির পশুর হাটেও সেই কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। বিভিন্ন সুবিধার কারণে পশুর হাটে দিনের পর দিন ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে বলে জানা গেছে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

পশুর হাটে ক্যাশলেস লেনদেন দ্বিগুণ

আপডেট সময় ০১:০৮:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই ২০২৪

অনলাইন নিউজ-

২০৩১ সালের মধ্যে শতভাগ ক্যাশলেস লেনদেন অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন সরকার। তারই অংশ হিসেবে গত কোরবানির ঈদে পশুর হাটগুলোতে ক্যাশলেস লেনদেনকে সফল করার উদ্দেশ্যে ব্যাংকিং সেবা নিয়ে হাজির হয় ৯টি ব্যাংক ও দুটি মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান গুলো। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী এ বছর নগদ টাকা ছাড়াই পশুর হাটে ৯৪ কোটি টাকার পশু বেচাকেনা হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রতিবছর কোরবানির ঈদকেন্দ্রিক পশু কেনা-বেচায় একটি বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়।বেশির ভাগই সম্পন্ন হয় নগদ টাকায়। কিন্তু গত দুই বছরের মতো স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামের পশুর হাটগুলোতে ক্যাশলেস লেনদেন চালুর উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

এ বছর ঢাকা-চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও নাটোরের সিংড়া পৌরসভাসহ মোট ১০টি হাটে ক্যাশলেস লেনদেনের কার্যক্রম চালু ছিল। এসব হাটে নগদ টাকার পরিবর্তে মোবাইল ব্যাংকিং ও কার্ডের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করে পশু কেনাবেচা হয়।এ বছর ঢাকা ও চট্টগ্রাম মিলে মোট ১০টি হাটে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ স্মার্ট হাট’ কর্মসূচি চালু ছিল। উত্তরা দিয়াবাড়ী স্মার্ট হাট কার্যক্রমে প্রতিনিধিত্ব করে ব্র্যাক ব্যাংক। এটিএম বুথ এবং পস সিস্টেমের মাধ্যমে টাকা তুলেছেন পশু ক্রেতারা। অন্যদিকে পশু বিক্রির টাকা এজেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে জমা দিয়েছেন ব্যাপারীগন।এতে করে দুই পক্ষই উপকৃত হয়েছেন। কারণ ডিজিটাল লেনদেনের সুযোগ থাকার কারণে কোনো পক্ষকেই মোটা অঙ্কের টাকা বহন করতে হয় না। এতে ছিনতাই ঝুঁকি কমে। পাশাপাশি কমে যায় নকল টাকার ঝামেলা। চলতি ২০২৩ সালে স্মার্ট হাট ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে মোট ৪৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত তথ্য বলছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ভাটারা সুতিভোলা পশুর হাট ও উত্তরা দিয়াবাড়ী পশুর হাটে ক্যাশলেস লেনদেন পরিচালনার দায়িত্বে ছিল ব্যাংক এশিয়া ও ব্র্যাক ব্যাংক। মোহাম্মদপুর বসিলা ও গাবতলী পশুর হাটে এই দায়িত্বে ছিল সিটি ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংক। পাশাপাশি নগদ ও বিকাশ এসব হাটে তাদের বুথ বসানো হয়। আর মিরপুর ইস্টার্ন হাউজিংয়ে এবি ব্যাংক ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাশের পশুর হাটে ক্যাশলেস লেনদেনের দায়িত্বে ছিল আইএফআইসি ব্যাংক ও পিওএস সরবারহ করে পূবালী ব্যাংক। অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের হাজারীবাগ বাজারের দায়িত্বে ছিল পূবালী ব্যাংক ও বিকাশ। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাগরিকা হাটে ইসলামী ব্যাংক ও নগদ, নূরনগর হাটে ইউসিবি ব্যাংক ও নগদ, নাটোরের সিংড়া পৌরসভার পশুর হাটে ক্যাশলেস লেনদেন বাস্তবায়নের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক ও নগদকে। এসব হাটে সম্ভাব্য যেসব জেলা থেকে খামারি ও ব্যবসায়ীরা আসতে পারেন, তাঁদের ব্যাংক হিসাব খুলে দেওয়ার কার্যক্রম হাতে নেন ব্যাংকগুলো।

দেশের লেনদেনব্যবস্থার আধুনিকায়ন ঘটলেও স্বল্পমেয়াদি পশুর হাটের বিপুল পরিমাণ লেনদেনের বেশির ভাগই নগদ অর্থে সংঘটিত হয়। ফলে একদিকে নগদ অর্থের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়,অন্যদিকে ব্যাংক, এটিএমসমূহে অর্থ জোগান দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত নোট ছাপানো ও সরবরাহের প্রয়োজন হয়। নগদ অর্থের এই ব্যাপক লেনদেনের ফলে বিভিন্ন ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যেমন জাল টাকার বিস্তার, চুরি-ছিনতাই ইত্যাদি নানা ধরনের অপরাধ বৃদ্ধি পায়। ফলে এই সময় পশু ক্রেতা-বিক্রেতার অর্থের নিরাপত্তা বিধান, অপরাধী শনাক্তকরণ এবং জাল টাকা শনাক্তকরণে সতর্কতা অবলম্বন করা হয়।

পশুর হাটে ক্যাশলেস লেনদেন দ্বিগুণ

এসব সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে ২০২২ সালে কোরবানির ঈদকেন্দ্রিক ঢাকায় অবস্থিত ছয়টি পশুর হাটে লেনদেন ডিজিটাল মাধ্যমে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে পাইলট কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সেই পাইলট কার্যক্রমে প্রায় ৩৩ কোটি টাকার লেনদেন ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পাদিত হয়। সফলভাবে এই পাইলট কার্যক্রম পরিচালনার পরিপ্রেক্ষিতে ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ’ প্রকল্পের আওতায় ২০২৩ সালের কোরবানির পশুর হাটেও সেই কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। বিভিন্ন সুবিধার কারণে পশুর হাটে দিনের পর দিন ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে বলে জানা গেছে।