অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ‘কোনো জবাবদিহি করেন না’ বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। মান্না বলেছেন, সামনাসামনি প্রশ্ন করলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মুহাম্মদ ইউনূস প্রশ্নের জবাব না দিয়ে মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে বিদায় করে দেন অথবা কোনো কথাই বলেন না। একটি মাত্র রাজনৈতিক দল নির্বাচন চায়, এ বক্তব্যের বিষয়ে উনি কোনো ব্যাখ্যা দেননি বলেও অভিযোগ করেন মান্না।
গত মঙ্গলবার (৩ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে গণ অধিকার পরিষদ আয়োজিত ‘গণহত্যার বিচার, রাষ্ট্র সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন মাহমুদুর রহমান মান্না।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস চার-পাঁচবার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান বলেন, বৈঠকের শুরুতে তিনি বলে থাকেন রাজনীতিবিদদের সঙ্গে কথা বললে তিনি আশাবাদী হয়ে ওঠেন। কিন্তু সেখানে রাষ্ট্র সংস্কার, গণতন্ত্র কিংবা নির্বাচনের বিষয়ে কোনো কথা বলেননি।
নির্বাচন নিয়ে যেখানে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে, সেখানে এ ধরনের অস্পষ্টতা হতাশাজনক বলে মন্তব্য করেন মাহমুদুর রহমান মান্না। মান্না বলেন, বিদেশি পরামর্শদাতা বলেছেন, হিউম্যান করিডর নিয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে, আবার নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বলছেন, এমন কোনো আলোচনা হয়নি। এতে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক করে ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘রাজনীতি করতে হলে বুঝে করতে হয়। শক্তি থাকলেই হয় না। ভুল নীতির ওপর দেশ পরিচালনা সম্ভব নয়।’ যাঁরা ক্ষমতায় আছেন, তাঁরা যেন দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেন—সেই প্রত্যাশা জানান মান্না।
প্রতিবেশী রাষ্ট্রের দিক থেকে একটি বড় হুমকি রয়েছে মন্তব্য করে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘প্রতিবেশী একটি দেশ পতিত স্বৈরাচারকে আশ্রয় দিচ্ছে, মদদ দিচ্ছে এবং তাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সব রকম সহায়তা করছে। এতে যেকোনো সময় সীমান্তে ছোট ঘটনা থেকে বড় যুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।’ এ প্রসঙ্গে মান্না আরও বলেন, ‘এই অবস্থায় ভারত যদি আবার বাংলাদেশকে করায়ত্ত করার চেষ্টা করে, আমরা জানি না তার পথ কী হতে পারে। অতীতে যেমন ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশকে টার্গেট করা হয়েছিল, আজও একই রকম পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।’
গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হকের সভাপতিত্বে এবং দলের সহসভাপতি ফারুক হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থ, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, এলডিপির মহাসচিব রেদওয়ান আহমেদ, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফওজুল হাকিম ও গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।