ময়মনসিংহ , মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
পরীক্ষা বন্ধ রাখলে শাস্তির মুখোমুখি হবে বললেন শিক্ষা উপদেষ্টা চলন্ত বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া যাত্রীর মৃত্যু রাজশাহীতে ‘বড় কিছু’ লুকানো হচ্ছে ইমরান খানের শারীরিক অবস্থা নিয়ে ডাক্তারদের চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারছেন খালেদা জিয়া বললেন ডা. জাহিদ সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার পথে এমবাপ্পে ২০২৫ সালের তাপমাত্রা নেমে ১২ ডিগ্রিতে কুড়িগ্রামে দেশবাসীর সম্মিলিত সমর্থনই আমাদের পরিবারের শক্তি বললেন তারেক রহমান মার্কিন সংস্থার জরিপ: নির্বাচনে বিএনপি পাবে ৩০% ভোট, জামায়াত ২৬% রাষ্ট্রদূত মুশফিকের অনুরোধ বিভ্রান্তি না ছড়ানো এবং এভারকেয়ার হাসপাতালকে মিলনস্থল না বানানোর প্রধান উপদেষ্টা ও অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর সন্তুষ্ট ৭০ শতাংশ মানুষ জানিয়েছে আইআরআই জরিপ
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

‘বড় কিছু’ লুকানো হচ্ছে ইমরান খানের শারীরিক অবস্থা নিয়ে

  • ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১২:৫৪:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ১৫ বার পড়া হয়েছে

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের শারীরিক অবস্থা নিয়ে ‘বড় কিছু’ লুকানো হচ্ছে বলে আশঙ্কা করছে তার পরিবার। 

দীর্ঘদিন ধরে তিনি কারাবন্দি রয়েছেন তিনি। তবে কয়েক সপ্তাহ ধরে তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে না পরিবার বা দলের কেউ, সরকারও যেন মুখে কুলুপ এটেছে। এ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইমরান খানের ছেলে কাসিম খান।

তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে আদিয়ালা কারাগারের বাইরে ইমরানের বোনেরা, পিটিআই নেতারা ও সমর্থকরা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। আদালতের নির্দেশে সাপ্তাহিক সাক্ষাতের অনুমতি থাকলেও এতদিন ইমরান খানের সঙ্গে পরিবারের কোনো সরাসরি দেখা কিংবা যাচাইযোগ্য যোগাযোগ হয়নি বলে জানিয়েছেন কাসিম।

তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, এ পরিস্থিতি পরিবারকে আরও আতঙ্কিত করে তুলেছে।

কাসিম বলেন, ‘আপনার বাবা নিরাপদ কি না, আহত কি না, এমনকি তিনি জীবিত কি না—এটা না জানা মানসিক নির্যাতনের মতো।’ গত কয়েক মাস ধরেই কোনো স্বাধীনভাবে নিশ্চিত যোগাযোগ না থাকায় পরিবারের শঙ্কা বাড়ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। ‘আজ আমরা তার অবস্থা সম্পর্কে কোনো যাচাইযোগ্য তথ্যই পাচ্ছি না। আমাদের সবচেয়ে বড় ভয়—তার সম্পর্কে অপ্রত্যাবর্তনীয় কিছু লুকানো হচ্ছে।’

পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে কোনো সাড়া দেয়নি। তবে এক কারা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ইমরান খান সুস্থ আছেন এবং তাকে আরও উচ্চ নিরাপত্তার স্থানে স্থানান্তরের কোনো পরিকল্পনার কথা তিনি জানেন না।

৭২ বছর বয়সী ইমরান খান ২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকে কারাগারে রয়েছেন। রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রির অভিযোগে তোষাখানা মামলায় তার প্রথম দণ্ড হয়। এরপর সাইফার মামলা এবং আল কাদির ট্রাস্ট মামলায়ও দীর্ঘমেয়াদি সাজা হয়। এগুলোকে তিনি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন।

পিটিআইয়ের অভিযোগ, এই মামলাগুলো ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে ইমরানকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্যই সাজানো হয়েছিল।

কাসিম বলেন, দীর্ঘদিনের অপ্রকাশ্যতা ও যোগাযোগহীনতা পরিবারকে আরও উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। ‘এই বিচ্ছিন্নতা ইচ্ছাকৃত। তারা তাকে আড়ালে রাখতে চায়,’ দাবি করেন ইমরান খানের পুত্র। ‘তিনি পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা। গণতান্ত্রিকভাবে তাকে পরাজিত করা সম্ভব নয় বলেই তাকে আলাদা করে রাখা হচ্ছে।’

কাসিম জানান, তিনি ও তার বড় ভাই সুলাইমান ইসা খান রাজনীতি থেকে দূরে থাকলেও বাবার কারাবন্দি অবস্থা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহল ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেষ্টা করছেন।

তিনি জানান, তারা সর্বশেষ বাবার সঙ্গে দেখা করেছিলেন ২০২২ সালের নভেম্বরে, যখন তিনি হত্যাচেষ্টা থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন। ‘তার সেই অবস্থার ছবি আজও স্মৃতিতে ভাসে। এখন কয়েক সপ্তাহ ধরে কোনো যোগাযোগ নেই, কোনো প্রমাণ নেই তিনি ঠিক আছেন কি না—সেই স্মৃতি আজ আলাদা ভার তৈরি করছে।’

এদিকে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছিলেন, ইমরানের ছেলেরা চাইলে বাবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারে। এর জবাবে ইমরানের সাবেক স্ত্রী জেমাইমা গোল্ডসমিথ বলেন, ‘তারা তার সঙ্গে ফোনে কথা বলতেও পারছে না। কেউই পারছে না।’

পাকিস্তান মানবাধিকার কমিশন (এইচআরসিপি) ইমরান খানের বন্দিত্বের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলেছে, পরিবার, ঘনিষ্ঠজন ও আইনজীবীদের সাক্ষাতের সুযোগ না দেওয়া গুরুতর অভিযোগ এবং আটক ব্যক্তির মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন।

সংস্থাটি লিখেছে, বন্দির সঙ্গে নিয়মিত ও নির্বিঘ্ন যোগাযোগ নিশ্চিত করা এক ধরনের সুরক্ষা, যা বিচ্ছিন্ন করে রাখার অপব্যবহার রোধ করে। তারা পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার এবং পাঞ্জাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সাংবিধানিক অধিকার ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড অনুযায়ী আচরণের আহ্বান জানিয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

পরীক্ষা বন্ধ রাখলে শাস্তির মুখোমুখি হবে বললেন শিক্ষা উপদেষ্টা

‘বড় কিছু’ লুকানো হচ্ছে ইমরান খানের শারীরিক অবস্থা নিয়ে

আপডেট সময় ১২:৫৪:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৫

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের শারীরিক অবস্থা নিয়ে ‘বড় কিছু’ লুকানো হচ্ছে বলে আশঙ্কা করছে তার পরিবার। 

দীর্ঘদিন ধরে তিনি কারাবন্দি রয়েছেন তিনি। তবে কয়েক সপ্তাহ ধরে তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে না পরিবার বা দলের কেউ, সরকারও যেন মুখে কুলুপ এটেছে। এ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইমরান খানের ছেলে কাসিম খান।

তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে আদিয়ালা কারাগারের বাইরে ইমরানের বোনেরা, পিটিআই নেতারা ও সমর্থকরা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। আদালতের নির্দেশে সাপ্তাহিক সাক্ষাতের অনুমতি থাকলেও এতদিন ইমরান খানের সঙ্গে পরিবারের কোনো সরাসরি দেখা কিংবা যাচাইযোগ্য যোগাযোগ হয়নি বলে জানিয়েছেন কাসিম।

তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, এ পরিস্থিতি পরিবারকে আরও আতঙ্কিত করে তুলেছে।

কাসিম বলেন, ‘আপনার বাবা নিরাপদ কি না, আহত কি না, এমনকি তিনি জীবিত কি না—এটা না জানা মানসিক নির্যাতনের মতো।’ গত কয়েক মাস ধরেই কোনো স্বাধীনভাবে নিশ্চিত যোগাযোগ না থাকায় পরিবারের শঙ্কা বাড়ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। ‘আজ আমরা তার অবস্থা সম্পর্কে কোনো যাচাইযোগ্য তথ্যই পাচ্ছি না। আমাদের সবচেয়ে বড় ভয়—তার সম্পর্কে অপ্রত্যাবর্তনীয় কিছু লুকানো হচ্ছে।’

পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে কোনো সাড়া দেয়নি। তবে এক কারা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ইমরান খান সুস্থ আছেন এবং তাকে আরও উচ্চ নিরাপত্তার স্থানে স্থানান্তরের কোনো পরিকল্পনার কথা তিনি জানেন না।

৭২ বছর বয়সী ইমরান খান ২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকে কারাগারে রয়েছেন। রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রির অভিযোগে তোষাখানা মামলায় তার প্রথম দণ্ড হয়। এরপর সাইফার মামলা এবং আল কাদির ট্রাস্ট মামলায়ও দীর্ঘমেয়াদি সাজা হয়। এগুলোকে তিনি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন।

পিটিআইয়ের অভিযোগ, এই মামলাগুলো ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে ইমরানকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্যই সাজানো হয়েছিল।

কাসিম বলেন, দীর্ঘদিনের অপ্রকাশ্যতা ও যোগাযোগহীনতা পরিবারকে আরও উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। ‘এই বিচ্ছিন্নতা ইচ্ছাকৃত। তারা তাকে আড়ালে রাখতে চায়,’ দাবি করেন ইমরান খানের পুত্র। ‘তিনি পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা। গণতান্ত্রিকভাবে তাকে পরাজিত করা সম্ভব নয় বলেই তাকে আলাদা করে রাখা হচ্ছে।’

কাসিম জানান, তিনি ও তার বড় ভাই সুলাইমান ইসা খান রাজনীতি থেকে দূরে থাকলেও বাবার কারাবন্দি অবস্থা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহল ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেষ্টা করছেন।

তিনি জানান, তারা সর্বশেষ বাবার সঙ্গে দেখা করেছিলেন ২০২২ সালের নভেম্বরে, যখন তিনি হত্যাচেষ্টা থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন। ‘তার সেই অবস্থার ছবি আজও স্মৃতিতে ভাসে। এখন কয়েক সপ্তাহ ধরে কোনো যোগাযোগ নেই, কোনো প্রমাণ নেই তিনি ঠিক আছেন কি না—সেই স্মৃতি আজ আলাদা ভার তৈরি করছে।’

এদিকে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছিলেন, ইমরানের ছেলেরা চাইলে বাবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারে। এর জবাবে ইমরানের সাবেক স্ত্রী জেমাইমা গোল্ডসমিথ বলেন, ‘তারা তার সঙ্গে ফোনে কথা বলতেও পারছে না। কেউই পারছে না।’

পাকিস্তান মানবাধিকার কমিশন (এইচআরসিপি) ইমরান খানের বন্দিত্বের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলেছে, পরিবার, ঘনিষ্ঠজন ও আইনজীবীদের সাক্ষাতের সুযোগ না দেওয়া গুরুতর অভিযোগ এবং আটক ব্যক্তির মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন।

সংস্থাটি লিখেছে, বন্দির সঙ্গে নিয়মিত ও নির্বিঘ্ন যোগাযোগ নিশ্চিত করা এক ধরনের সুরক্ষা, যা বিচ্ছিন্ন করে রাখার অপব্যবহার রোধ করে। তারা পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার এবং পাঞ্জাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সাংবিধানিক অধিকার ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড অনুযায়ী আচরণের আহ্বান জানিয়েছে।