ময়মনসিংহ , বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

বাংলাদেশে কেউ মন্ত্রী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার মানসিকতা বদলে যায় বললেন মির্জা ফখরুল

বাংলাদেশে কেউ মন্ত্রী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার মানসিকতা বদলে যায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে যে-ই মন্ত্রী হয়ে গেল, সে সম্পূর্ণভাবে ভিন্ন জগতে চলে গেল। তার স্যালুট, তার বাঁশি, তার গাড়ির সামনে একটা গাড়ি, পেছনে আরেকটা গাড়ি—এই যে মানসিকতাটা তৈরি হয়, এই মানসিকতা আমাকে ধীরে ধীরে ওই ডিক্টেটরের (স্বৈরশাসক) দিকে নিয়ে যায়।’ এই মানসিকতা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাজধানীর বাংলা একাডেমিতে ‘সিভিল ডিসকোর্স ন্যাশনালস-২০২৫’-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। ঢাকা কলেজ ডিবেটিং সোসাইটি এবং দ্য বাংলাদেশ ডায়ালগ যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সময় তো ভালো যাচ্ছে না এখন, অনেকেই অনেক কথা বলছেন। অনেকেই মন খারাপ করছেন। আমি সব সময় আশাবাদী মানুষ। বয়স আমার অনেক, তবে আমি সব সময় আশাবাদী মানুষ। আমি মনে করি, এরপর ভালো সময় আসবে। আরও ভালো সময় আসবে।’

তিনি বলেন, ‘জেনারেশন গ্যাপ (প্রজন্মের দূরত্ব) অনেক বেশি। ওদের বুঝতে আমার সময় লাগে। আমার মনে হয়, আমাদের বুঝতেও হয়তো সময় লাগে। যে কারণে এখন অনেক রাজনৈতিক সমস্যাও কিছু কিছু দেখা দিচ্ছে। এটিকে অন্তত একখানে আনা যেত, তাহলে বোধ হয় অনেকগুলো সমস্যার সমাধান হতো।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘জেন-জিদের সঙ্গে আমাদের পরিচয় খুব কম। পরিচয়টা বাড়ানো দরকার। আবার ঢাকার চিন্তাভাবনার সঙ্গে ঠাকুরগাঁওয়ের চিন্তাভাবনা এক নয়। এই দূরত্ব মেটাতে হবে। তা না হলে আমরা যে প্রজন্ম, যে শক্তি, যে আর্মি তৈরি করতে চাচ্ছি, যেই আর্মি আমার বাংলাদেশকে বদলে দেবে, সেই জায়গায় আমরা আসতে পারব না।’

তরুণেরা দেশের জন্য ভবিষ্যতে জোরালো ভূমিকা রাখবেন, এমন আশাবাদ রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের তরুণেরা আমাদের চেয়েও অনেক অনেক বেশি যোগ্য হয়ে উঠছে এবং তারা এ দেশে ভবিষ্যতে আরও বেশি বড় ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। তবে তর্ক আছে, বিতর্ক আছে, মতের অমিল আছে। আমরা লিবারেল ডেমোক্রেসিতে বিশ্বাস করি। আমরা বিশ্বাস করি, আমার কথা বলার স্বাধীনতা থাকতে হবে, তোমারও কথা বলার স্বাধীনতা থাকতে হবে এবং এটাই হচ্ছে উপযুক্ত গণতন্ত্র।’

বিতর্ক করার সময় ‘মাননীয়’ শব্দ পরিহারের অনুরোধ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমার একটা আপত্তি আছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আর মাননীয় স্পিকার কথাটা কি আমরা বাদ দিতে পারি না? আমার কেন জানি মনে হয়, এই মাননীয় কথাটা থেকেই কিন্তু সমস্ত অটোক্রেসির (স্বৈরাচার) জন্ম হয়।’

টিবিডির পরিচালক সাইফ রুবাবের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক একেএম ইলিয়াস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মাদ নাজমুজ্জামান ভূঁইয়া, আইনজীবী রাশনা ইমাম, অ্যাডকম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজিম ফারহান চৌধুরী, বিএনপির আন্তর্জাতিক কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু, ঢাকা কলেজ ডিবেটিং সোসাইটির (ডিসিডিএস) সভাপতি শাহাদাত হোসাইন, ডিসিডিএসের প্রধান মডারেটর অধ্যাপক আকতারুজ্জামান, টিবিডির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবায়েত মান্নান রাফি প্রমুখ।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশে কেউ মন্ত্রী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার মানসিকতা বদলে যায় বললেন মির্জা ফখরুল

আপডেট সময় ১০:৪০:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫

বাংলাদেশে কেউ মন্ত্রী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার মানসিকতা বদলে যায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে যে-ই মন্ত্রী হয়ে গেল, সে সম্পূর্ণভাবে ভিন্ন জগতে চলে গেল। তার স্যালুট, তার বাঁশি, তার গাড়ির সামনে একটা গাড়ি, পেছনে আরেকটা গাড়ি—এই যে মানসিকতাটা তৈরি হয়, এই মানসিকতা আমাকে ধীরে ধীরে ওই ডিক্টেটরের (স্বৈরশাসক) দিকে নিয়ে যায়।’ এই মানসিকতা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাজধানীর বাংলা একাডেমিতে ‘সিভিল ডিসকোর্স ন্যাশনালস-২০২৫’-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। ঢাকা কলেজ ডিবেটিং সোসাইটি এবং দ্য বাংলাদেশ ডায়ালগ যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সময় তো ভালো যাচ্ছে না এখন, অনেকেই অনেক কথা বলছেন। অনেকেই মন খারাপ করছেন। আমি সব সময় আশাবাদী মানুষ। বয়স আমার অনেক, তবে আমি সব সময় আশাবাদী মানুষ। আমি মনে করি, এরপর ভালো সময় আসবে। আরও ভালো সময় আসবে।’

তিনি বলেন, ‘জেনারেশন গ্যাপ (প্রজন্মের দূরত্ব) অনেক বেশি। ওদের বুঝতে আমার সময় লাগে। আমার মনে হয়, আমাদের বুঝতেও হয়তো সময় লাগে। যে কারণে এখন অনেক রাজনৈতিক সমস্যাও কিছু কিছু দেখা দিচ্ছে। এটিকে অন্তত একখানে আনা যেত, তাহলে বোধ হয় অনেকগুলো সমস্যার সমাধান হতো।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘জেন-জিদের সঙ্গে আমাদের পরিচয় খুব কম। পরিচয়টা বাড়ানো দরকার। আবার ঢাকার চিন্তাভাবনার সঙ্গে ঠাকুরগাঁওয়ের চিন্তাভাবনা এক নয়। এই দূরত্ব মেটাতে হবে। তা না হলে আমরা যে প্রজন্ম, যে শক্তি, যে আর্মি তৈরি করতে চাচ্ছি, যেই আর্মি আমার বাংলাদেশকে বদলে দেবে, সেই জায়গায় আমরা আসতে পারব না।’

তরুণেরা দেশের জন্য ভবিষ্যতে জোরালো ভূমিকা রাখবেন, এমন আশাবাদ রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের তরুণেরা আমাদের চেয়েও অনেক অনেক বেশি যোগ্য হয়ে উঠছে এবং তারা এ দেশে ভবিষ্যতে আরও বেশি বড় ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। তবে তর্ক আছে, বিতর্ক আছে, মতের অমিল আছে। আমরা লিবারেল ডেমোক্রেসিতে বিশ্বাস করি। আমরা বিশ্বাস করি, আমার কথা বলার স্বাধীনতা থাকতে হবে, তোমারও কথা বলার স্বাধীনতা থাকতে হবে এবং এটাই হচ্ছে উপযুক্ত গণতন্ত্র।’

বিতর্ক করার সময় ‘মাননীয়’ শব্দ পরিহারের অনুরোধ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমার একটা আপত্তি আছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আর মাননীয় স্পিকার কথাটা কি আমরা বাদ দিতে পারি না? আমার কেন জানি মনে হয়, এই মাননীয় কথাটা থেকেই কিন্তু সমস্ত অটোক্রেসির (স্বৈরাচার) জন্ম হয়।’

টিবিডির পরিচালক সাইফ রুবাবের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক একেএম ইলিয়াস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মাদ নাজমুজ্জামান ভূঁইয়া, আইনজীবী রাশনা ইমাম, অ্যাডকম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজিম ফারহান চৌধুরী, বিএনপির আন্তর্জাতিক কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু, ঢাকা কলেজ ডিবেটিং সোসাইটির (ডিসিডিএস) সভাপতি শাহাদাত হোসাইন, ডিসিডিএসের প্রধান মডারেটর অধ্যাপক আকতারুজ্জামান, টিবিডির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবায়েত মান্নান রাফি প্রমুখ।