বাগেরহাটের রামপালে ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন।
রোববার (৩ আগস্ট) বিকেল চারটা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়েক দফায় এই সংঘর্ষের ঘটনা। এসময় প্রতিপক্ষের লোকজনকে মারধরের পাশাপাশি বাজারের অন্তত ২০টি দোকান ও পাশের কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে নেতাকর্মীরা।
মারধরের প্রতিবাদ ও হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে রোববার বিকেলে আব্দুল আলিমের প্রতিদ্বন্দ্বী সভাপতি প্রার্থী সাজারুল ইসলাম সাজু ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শামীম হাসান পলকের লোকজন পুলিশের অনুমতিতে মানববন্ধনের আয়োজন করেন। মানববন্ধনের জন্য জড়ো হলে আব্দুল আলিম হাওলাদারের লোকজন অতর্কিতভাবে সাজারুল ইসলাম সাজু ও তার লোকজনের উপর হামলা করে। এতে সভাপতি প্রার্থী সাজারুল ইসলাম সাজুসহ কয়েকজন গুরুত্বর আহত হয়। এই হামলার বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে সাজারুল ইসলাম সাজু ও তাল লোকজন আব্দুল আলিমের লোকজনের উপর হামলা করে। তারা আব্দুল আলিমের বসত বাড়ি, সন্নাসী বাজারের ২০টি দোকান ভাংচুর করেন।
কিছুক্ষণ পরে রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতিকুর রহমান ঘটনাস্থলে আসেন। বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। কয়েক মিনিটের জন্য শান্ত হলেও, পরে পুলিশের সামনেই আবারও লাঠিসোঁটা নিয়ে দোকান ও পাশে থাকা আব্দুল আলিমের বসতবাড়ি ভাঙচুর করেন।
সবশেষ সন্ধ্যার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানান রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতিকুর রহমান। তিনি বলেন, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি পরিস্থিতি শান্ত রাখতে। উভয়পক্ষ ইটপাটকেল ছুড়েছে। কয়েকজন আহত হয়েছেন। আমরা তাদেরকে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছি।
সাবেক যুবদল নেতা জাহিদুল ইসলাম বলেন, সভাপতি প্রার্থী সাজারুল ইসলাম সাজু ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শামীম হাসান পলকের বিপুল জনপ্রিয়তা দেখে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী সভাপতি প্রার্থী নিজেদের ভরাডুবি ভেবে নির্বাচন বানচাল করার জন্য আমাদের লোকদের উপর হামলা করে। আমাদের নেতাকর্মীদের উপর হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। সাবেক ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান মিঠু ও মজনুর নেতৃত্বে এই হামলা হয়।
মল্লিকেরবের ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, পুলিশ আসছিল রামপাল থানা থেকে। পুলিশের সামনেই আব্দুল আলিমের লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাদের উপর হামলা করেছে।
সংঘর্ষে আহত ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রার্থী সাজারুল ইসলাম সাজু বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বী সভাপতি প্রার্থী আব্দুল আলিম হাওলাদারের লোকজন আমাদের হামলা করে। আমাদের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আমরা চেয়েছিলাম শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন করতে, কিন্তু তারা অতর্কিতভাবে আমাদের উপর হামলা করে।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সভাপতি প্রার্থী আব্দুল আলিম হাওলাদারকে বারবার ফোন করলেও, তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এদিকে সংঘর্ষ চলাকালে সংবাদ সংগ্রহের সময় অন্তত তিন সংবাদকর্মী আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন, দৈনিক দিনকালের স্টাফ রিপোর্টার হেদায়েত হোসেন লিটন, দীপ্ত টেলিভিশনের বাগেরহাট প্রতিনিধি মামুন আহমেদ, নাগরিক টেলিভিশনের বাগেরহাট প্রতিনিধি শেখ আহমেদ তারিক।