ময়মনসিংহ , বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
একই স্থানে বিএনপির দুই গ্রুপের কর্মসূচিতে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা কুমিল্লায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের রায় নিয়ে যা : আমির খসরু তারেক রহমান জন্মদিনে নারীদের ৫ প্রতিশ্রুতি দিলেন সাফল্য-ব্যর্থতার সমালোচনায় পুরো চিত্র প্রতিফলিত হয় না বললেন শফিকুল আলম রাঙ্গামাটিতে চলছে হরতাল কোটা বৈষম্যের প্রতিবাদে মুশফিক শততম ম্যাচে সেঞ্চুরি দিয়েই রাঙালেন রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের নিয়োগে কোটা বৈষম্যের প্রতিবাদে হরতাল চলছে শেখ হাসিনা-কামালকে দেশে ফেরাতে এনসিবির ইন্টারপোলকে চিঠির প্রস্তুতি বাড়ছে শীতের দাপট পঞ্চগড়ে , তাপমাত্রা নেমে ১৩ ডিগ্রির ঘরে বাবা আমার সঙ্গেই আছে বললেন নিষাদ হুমায়ূন
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

বাবা আমার সঙ্গেই আছে বললেন নিষাদ হুমায়ূন

  • ডিজিটাল ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১০:১০:২৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫
  • ১৪ বার পড়া হয়েছে

কথাসাহিত্যিক হ‌ুমায়ূন আহমেদের ছেলে নিষাদ হ‌ুমায়ূনের স্বপ্ন বড় হয়ে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠা। এছাড়া বাবার মত নির্মাতার মত জীবনও তাকে টাকে। নিষাদ চান কিংবদন্তি পরিচালক সত্যজিৎ রায় কিংবা হ‌ুমায়ূন আহমেদের মতো নির্মাতার মত জীবন বেছে নিতে।

গেল ১৩ নভেম্বর ছিল হ‌ুমায়ূন আহমেদের ৭৭তম জন্মবার্ষিকী। সেদিন গাজীপুরে নুহাশপল্লীতে জন্মদিনের আয়োজনে একটি টেলিভিশন চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে হ‌ুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে স্মৃতির দরজা খোলেন ছেলে নিষাদ।

হ‌ুমায়ূনপুত্রের ওই ভিডিওটি ঘুরছে সোশাল মিডিয়ায়। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে নেই হ‌ুমায়ূন আহমেদ, কিন্তু তার গল্প, চরিত্র আর স্মৃতির ভেতর দিয়ে ছেলে নিষাদের জীবনে এখনো আলো হয়ে জ্বলে বাবার কথা।

বাবার সৃষ্ট কোন চরিত্রটি সবচেয়ে ভালো লাগে প্রশ্নে নিষাদ জানিয়েছেন, তার ‘মিসির আলী’ তার সবচেয়ে পছন্দের।

নির্মাণের ইচ্ছার কথা জানিয়ে নিষাদ বলেন, ‘বাবার প্রচুর নাটক আমি দেখেছি। কিন্তু এখনকার ইন্ডাস্ট্রি খুবই পঁচা, শুধু ভালোবাসা, এটা-সেটা নিয়ে নাটক, সিনেমা বানায়। এগুলো খুব একটা টানে না আমাকে। আমার ইচ্ছে আছে বাবার মত কিংবা সত্যজিৎ রায়ের মত নাটক-সিনেমা বানানোর। আমি চাই একদম নতুন মানুষকে আনতে, যারা পুরোই ফ্রেশ, নতুন ভাবনা নিয়ে কাজ করবে। মানুষের জীবনের গল্প যা আমাদের ভাবাবে এমন সব কাজ করতে চাই। সহজ-সরল জীবন আমার ভীষণ পছন্দের। আর সেই শান্ত জীবনের গল্পই তুলে ধরতে চাই আমার নির্মাণে।’

নতুন প্রজন্মের কাছে হ‌ুমায়ূন আহমেদের সৃষ্টি সম্ভার তুলে ধরতে তার গল্প নিয়ে সিনেমা বানানোর প্রয়োজন বলে মনে করেন নিষাদ।

তিনি বলেন, ‘বাবার লেখা বইয়ের গল্প নিয়ে সিনেমা বানাতে পারলে ভালো হতো। এখনকার প্রজন্ম তো বই পড়ে না; সিনেমা দেখলে অন্তত তারা গল্পগুলো জানতে পারবে।’

অনেকেই তার সঙ্গে হ‌ুমায়ূনের অনেক ‘মিল খুঁজে পান’ বলে জানান নিষাদ। এ ধরনের কথা শুনলে নিষাদের মনে হয়, বাবা তার সঙ্গেই আছেন।

নিষাদ বলেন, ‘সবাই যখন বলে তুমি তোমার বাবার মতো, তখন মনে হয় বাবা আমার সঙ্গে আছে। বাবার সঙ্গে আমার খুব অল্প সময়ের স্মৃতি, বাবার যখন কেমোথেরাপি চলত তখন সে তার কষ্টটা বুঝতে দিত না। আমিও তখন খুব বেশি বুঝতাম না। এই স্মৃতিগুলো খুব মনে পড়ে।’

জন্মদিনে বাবাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে নিষাদ বলেন, ‘এই দিনটা আমার জন্য অসাধারণ। বাবার সঙ্গে কাটানো স্মরণীয় দিনগুলো মনে পড়ে যায়।’

হ‌ুমায়ূন আহমেদের লেখা একটি বইয়ের নাম ‘নিষাদ’। শৈশবে এই বইকে ঘিরে এক মজার স্মৃতিও শোনান নিষাদ।

বলেন, ‘একবার বইমেলায় এক পাঠক স্টলে এসে বললেন, ‘একটা নিষাদ হবে, নিষাদ দেন তো।’ আমি অবাক হয়ে ভাবলাম আমাকে নেবে নাকি! আমাকে টাকা দিয়ে কিনে নিবে, উনার সঙ্গে আমার চলে যেতে হবে। পরে বুঝলাম, তিনি বাবার ‘নিষাদ’ বইয়ের কথা বলছেন।’

১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন নন্দিত কথাসাহিত্যিক, চলচ্চিত্রকার ও নাট্যকার হ‌ুমায়ূন আহমেদ। আশি থেকে নব্বইয়ের প্রজন্মের কাছে হ‌ুমায়ূন আহমেদ ছিলেন গল্পের জাদুকর৷ ধারাবাহিক নাটক ‘এইসব দিনরাত্রি’থেকে শুরু করে ‘বহুব্রীহি’, ‘অয়োময়’, ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘নক্ষত্রের রাত’এর মত জনপ্রিয় নাটক নির্মীত হয় তার গল্পেই।

১৯৯২ সালের ‘শঙ্খনীল কারাগার’ সিনেমাটির গল্পকারও তিনিই। এই সিনেমার মাধ্যমেই সেরা গল্পকারের জাতীয় চলচ্চিত্রকারের সম্মান অর্জন করেন হ‌ুমায়ূন আহমেদ।

ধীরে ধীরে এক ঘণ্টার নাটক তৈরির মাধ্যমে পরিচালনাতেও আসেন হ‌ুমায়ূন। ১৯৯৪ সালে মুক্তি পায় হ‌ুমায়ূন আহমেদ নির্মীত প্রথম চলচ্চিত্র ‘আগুনের পরশমণি’। এরপর একে একে তিনি নির্মাণ করেছেন আরও সাতটি সিনেমা। ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘দুই দুয়ারী’, ‘চন্দ্রকথা’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘নয় নম্বর বিপদ সংকেত’, ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ তার জনপ্রিয় সৃষ্টি।

হুমায়ূন আহমেদ প্রথম বিয়ে করেন ১৯৭৩ সালে গুলতেকিন খানকে। তাদের চার সন্তান হলেন- নোভা আহমেদ, শীলা আহমেদ, বিপাশা আহমেদ ও নুহাশ আহমেদ

নুহাশ পরিচালকের খাতায় নাম লিখিয়েছেন আরো আগেই। এই তরুণের নাটক, সিরিজ এসেছে প্রচারে।

২০০৫ সালে গুলতেকিন খানের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর বিয়ে করেন মেহের আফরোজ শাওনকে। এই দম্পতিরই দুই সন্তান- নিষাদ আহমেদ ও নিনিত আহমেদ

২০১২ সালে ১৯ জুলাই ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে নিউ ইয়র্কের একটি হাসপাতালে মারা যান তিনি।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

একই স্থানে বিএনপির দুই গ্রুপের কর্মসূচিতে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা কুমিল্লায়

বাবা আমার সঙ্গেই আছে বললেন নিষাদ হুমায়ূন

আপডেট সময় ১০:১০:২৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫

কথাসাহিত্যিক হ‌ুমায়ূন আহমেদের ছেলে নিষাদ হ‌ুমায়ূনের স্বপ্ন বড় হয়ে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠা। এছাড়া বাবার মত নির্মাতার মত জীবনও তাকে টাকে। নিষাদ চান কিংবদন্তি পরিচালক সত্যজিৎ রায় কিংবা হ‌ুমায়ূন আহমেদের মতো নির্মাতার মত জীবন বেছে নিতে।

গেল ১৩ নভেম্বর ছিল হ‌ুমায়ূন আহমেদের ৭৭তম জন্মবার্ষিকী। সেদিন গাজীপুরে নুহাশপল্লীতে জন্মদিনের আয়োজনে একটি টেলিভিশন চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে হ‌ুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে স্মৃতির দরজা খোলেন ছেলে নিষাদ।

হ‌ুমায়ূনপুত্রের ওই ভিডিওটি ঘুরছে সোশাল মিডিয়ায়। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে নেই হ‌ুমায়ূন আহমেদ, কিন্তু তার গল্প, চরিত্র আর স্মৃতির ভেতর দিয়ে ছেলে নিষাদের জীবনে এখনো আলো হয়ে জ্বলে বাবার কথা।

বাবার সৃষ্ট কোন চরিত্রটি সবচেয়ে ভালো লাগে প্রশ্নে নিষাদ জানিয়েছেন, তার ‘মিসির আলী’ তার সবচেয়ে পছন্দের।

নির্মাণের ইচ্ছার কথা জানিয়ে নিষাদ বলেন, ‘বাবার প্রচুর নাটক আমি দেখেছি। কিন্তু এখনকার ইন্ডাস্ট্রি খুবই পঁচা, শুধু ভালোবাসা, এটা-সেটা নিয়ে নাটক, সিনেমা বানায়। এগুলো খুব একটা টানে না আমাকে। আমার ইচ্ছে আছে বাবার মত কিংবা সত্যজিৎ রায়ের মত নাটক-সিনেমা বানানোর। আমি চাই একদম নতুন মানুষকে আনতে, যারা পুরোই ফ্রেশ, নতুন ভাবনা নিয়ে কাজ করবে। মানুষের জীবনের গল্প যা আমাদের ভাবাবে এমন সব কাজ করতে চাই। সহজ-সরল জীবন আমার ভীষণ পছন্দের। আর সেই শান্ত জীবনের গল্পই তুলে ধরতে চাই আমার নির্মাণে।’

নতুন প্রজন্মের কাছে হ‌ুমায়ূন আহমেদের সৃষ্টি সম্ভার তুলে ধরতে তার গল্প নিয়ে সিনেমা বানানোর প্রয়োজন বলে মনে করেন নিষাদ।

তিনি বলেন, ‘বাবার লেখা বইয়ের গল্প নিয়ে সিনেমা বানাতে পারলে ভালো হতো। এখনকার প্রজন্ম তো বই পড়ে না; সিনেমা দেখলে অন্তত তারা গল্পগুলো জানতে পারবে।’

অনেকেই তার সঙ্গে হ‌ুমায়ূনের অনেক ‘মিল খুঁজে পান’ বলে জানান নিষাদ। এ ধরনের কথা শুনলে নিষাদের মনে হয়, বাবা তার সঙ্গেই আছেন।

নিষাদ বলেন, ‘সবাই যখন বলে তুমি তোমার বাবার মতো, তখন মনে হয় বাবা আমার সঙ্গে আছে। বাবার সঙ্গে আমার খুব অল্প সময়ের স্মৃতি, বাবার যখন কেমোথেরাপি চলত তখন সে তার কষ্টটা বুঝতে দিত না। আমিও তখন খুব বেশি বুঝতাম না। এই স্মৃতিগুলো খুব মনে পড়ে।’

জন্মদিনে বাবাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে নিষাদ বলেন, ‘এই দিনটা আমার জন্য অসাধারণ। বাবার সঙ্গে কাটানো স্মরণীয় দিনগুলো মনে পড়ে যায়।’

হ‌ুমায়ূন আহমেদের লেখা একটি বইয়ের নাম ‘নিষাদ’। শৈশবে এই বইকে ঘিরে এক মজার স্মৃতিও শোনান নিষাদ।

বলেন, ‘একবার বইমেলায় এক পাঠক স্টলে এসে বললেন, ‘একটা নিষাদ হবে, নিষাদ দেন তো।’ আমি অবাক হয়ে ভাবলাম আমাকে নেবে নাকি! আমাকে টাকা দিয়ে কিনে নিবে, উনার সঙ্গে আমার চলে যেতে হবে। পরে বুঝলাম, তিনি বাবার ‘নিষাদ’ বইয়ের কথা বলছেন।’

১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন নন্দিত কথাসাহিত্যিক, চলচ্চিত্রকার ও নাট্যকার হ‌ুমায়ূন আহমেদ। আশি থেকে নব্বইয়ের প্রজন্মের কাছে হ‌ুমায়ূন আহমেদ ছিলেন গল্পের জাদুকর৷ ধারাবাহিক নাটক ‘এইসব দিনরাত্রি’থেকে শুরু করে ‘বহুব্রীহি’, ‘অয়োময়’, ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘নক্ষত্রের রাত’এর মত জনপ্রিয় নাটক নির্মীত হয় তার গল্পেই।

১৯৯২ সালের ‘শঙ্খনীল কারাগার’ সিনেমাটির গল্পকারও তিনিই। এই সিনেমার মাধ্যমেই সেরা গল্পকারের জাতীয় চলচ্চিত্রকারের সম্মান অর্জন করেন হ‌ুমায়ূন আহমেদ।

ধীরে ধীরে এক ঘণ্টার নাটক তৈরির মাধ্যমে পরিচালনাতেও আসেন হ‌ুমায়ূন। ১৯৯৪ সালে মুক্তি পায় হ‌ুমায়ূন আহমেদ নির্মীত প্রথম চলচ্চিত্র ‘আগুনের পরশমণি’। এরপর একে একে তিনি নির্মাণ করেছেন আরও সাতটি সিনেমা। ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘দুই দুয়ারী’, ‘চন্দ্রকথা’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘নয় নম্বর বিপদ সংকেত’, ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ তার জনপ্রিয় সৃষ্টি।

হুমায়ূন আহমেদ প্রথম বিয়ে করেন ১৯৭৩ সালে গুলতেকিন খানকে। তাদের চার সন্তান হলেন- নোভা আহমেদ, শীলা আহমেদ, বিপাশা আহমেদ ও নুহাশ আহমেদ

নুহাশ পরিচালকের খাতায় নাম লিখিয়েছেন আরো আগেই। এই তরুণের নাটক, সিরিজ এসেছে প্রচারে।

২০০৫ সালে গুলতেকিন খানের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর বিয়ে করেন মেহের আফরোজ শাওনকে। এই দম্পতিরই দুই সন্তান- নিষাদ আহমেদ ও নিনিত আহমেদ

২০১২ সালে ১৯ জুলাই ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে নিউ ইয়র্কের একটি হাসপাতালে মারা যান তিনি।