ময়মনসিংহ , বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

বিচারককে হাইকোর্টে তলব,নির্দেশনা অমান্য করার অভিযোগে

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৪:০১:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫
  • ১৭ বার পড়া হয়েছে

হাইকোর্টের আদেশ অগ্রাহ্য করার অভিযোগে মেহেরপুরের সিনিয়র সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক মেহেদী হাসান মোবারক মুনিমকে সশরীরে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন আদালত।

গতকাল সোমবার (২০ জুলাই) বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদেশের সূত্র ধরে গত ২২ জুলাই হাইকোর্ট বেঞ্চের ৭৯৪ নম্বর স্মারকে সশরীরে তলবের আদেশ পাঠানো হয়েছে। সোমবার (২৮ জুলাই) আদেশের কপি ডাকযোগে আদালতে এসে পৌঁছেছে।

হাইকোর্টের তলব আদেশের চিঠি সূত্রে জানা গেছে, ফ্যামিলি পিটিশন নম্বর ১৩/২০২২ এর আওতায় হাইকোর্ট গত ২৬ জুন একটি স্থগিতাদেশ জারি করে, যাতে বলা হয়, বিবাদী ৫ লাখ টাকা ছয় মাসে পরিশোধ করবেন, ততদিন মামলার কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।

কিন্তু এ স্থগিতাদেশ থাকা সত্ত্বেও গত ৭ জুলাই মেহেরপুর সদর উপজেলা পারিবারিক আদালতের বিচারক এবং সিনিয়র সহকারী জজ মেহেদী হাসান মোবারক মুনিম বিবাদী আবু নাহিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। বিষয়টি উচ্চ আদালতের মর্যাদা ও ন্যায়বিচার প্রক্রিয়াকে প্রশ্নের মুখে ফেলে।

রিটকারী পক্ষের আইনজীবী মো. শাহিদুর রেজা বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনলে আদালত ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘উচ্চ আদালতের আদেশ অগ্রাহ্য করে কোন যুক্তিতে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন একজন বিচারক?’

এ ঘটনায় উচ্চ আদালতের আদেশের সরাসরি অবজ্ঞা আখ্যা দিয়ে বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের একক বেঞ্চ সিনিয়র সহকারী জজ মেহেদী হাসান মোবারক মুনিমকে আগামী ১০ আগস্ট সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে সশরীরে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাটি তাৎক্ষণিকভাবে বাতিলেরও নির্দেশনা দেওয়া হয়।

রিটকারী পক্ষের আইনজীবী মো. শাহিদুর রেজা বলেন, আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে পারিবারিক আদালতে এক আদেশে ১৫ লাখ টাকা পরিশোধের রায় হয়েছিল। আমরা হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করলে বিচারপতি ওই জরিমানা কমিয়ে ৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করেন এবং সে অর্থ পরিশোধের জন্য ৬ মাস সময় দিয়ে মামলার কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করেন। অথচ উচ্চ আদালতের এ আদেশ উপেক্ষা করে মেহেরপুরের পারিবারিক আদালতের বিচারক মো. মেহেদী হাসান মোবারক মুনিম বেআইনিভাবে আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে বিষয়টি আমরা হাইকোর্টের নজরে আনলে আদালত এতে উষ্মা প্রকাশ করেন এবং বিচারককে ১০ আগস্ট সশরীরে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে হাইকোর্ট থেকে স্পষ্ট নির্দেশনা থাকলেও এখন পর্যন্ত সেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রিকল করা হয়নি। এতে আমাদের মনে হচ্ছে, নিম্ন আদালতের বিচারক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার মক্কেলকে হয়রানি করছেন।

মেহেরপুরের সিনিয়র সহকারী জজ মেহেদী হাসান মোবারক মুনিম কালবেলাকে বলেন, আমি আইনের মধ্যে থেকেই নির্দেশনা দিয়েছি। হাইকোর্টের নির্দেশনার কোনো লঙ্ঘন আমি করিনি। রিভিশনকারী হাইকোর্টে তথ্য গোপন করেছেন। আমি মহামান্য হাইকোর্টের জন্য লিখিত বক্তব্য প্রস্তুত করেছি। ১০ তারিখে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে সেটা উপস্থাপন করব।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বিচারককে হাইকোর্টে তলব,নির্দেশনা অমান্য করার অভিযোগে

আপডেট সময় ০৪:০১:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫

হাইকোর্টের আদেশ অগ্রাহ্য করার অভিযোগে মেহেরপুরের সিনিয়র সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক মেহেদী হাসান মোবারক মুনিমকে সশরীরে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন আদালত।

গতকাল সোমবার (২০ জুলাই) বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদেশের সূত্র ধরে গত ২২ জুলাই হাইকোর্ট বেঞ্চের ৭৯৪ নম্বর স্মারকে সশরীরে তলবের আদেশ পাঠানো হয়েছে। সোমবার (২৮ জুলাই) আদেশের কপি ডাকযোগে আদালতে এসে পৌঁছেছে।

হাইকোর্টের তলব আদেশের চিঠি সূত্রে জানা গেছে, ফ্যামিলি পিটিশন নম্বর ১৩/২০২২ এর আওতায় হাইকোর্ট গত ২৬ জুন একটি স্থগিতাদেশ জারি করে, যাতে বলা হয়, বিবাদী ৫ লাখ টাকা ছয় মাসে পরিশোধ করবেন, ততদিন মামলার কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।

কিন্তু এ স্থগিতাদেশ থাকা সত্ত্বেও গত ৭ জুলাই মেহেরপুর সদর উপজেলা পারিবারিক আদালতের বিচারক এবং সিনিয়র সহকারী জজ মেহেদী হাসান মোবারক মুনিম বিবাদী আবু নাহিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। বিষয়টি উচ্চ আদালতের মর্যাদা ও ন্যায়বিচার প্রক্রিয়াকে প্রশ্নের মুখে ফেলে।

রিটকারী পক্ষের আইনজীবী মো. শাহিদুর রেজা বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনলে আদালত ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘উচ্চ আদালতের আদেশ অগ্রাহ্য করে কোন যুক্তিতে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন একজন বিচারক?’

এ ঘটনায় উচ্চ আদালতের আদেশের সরাসরি অবজ্ঞা আখ্যা দিয়ে বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের একক বেঞ্চ সিনিয়র সহকারী জজ মেহেদী হাসান মোবারক মুনিমকে আগামী ১০ আগস্ট সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে সশরীরে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাটি তাৎক্ষণিকভাবে বাতিলেরও নির্দেশনা দেওয়া হয়।

রিটকারী পক্ষের আইনজীবী মো. শাহিদুর রেজা বলেন, আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে পারিবারিক আদালতে এক আদেশে ১৫ লাখ টাকা পরিশোধের রায় হয়েছিল। আমরা হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করলে বিচারপতি ওই জরিমানা কমিয়ে ৫ লাখ টাকা নির্ধারণ করেন এবং সে অর্থ পরিশোধের জন্য ৬ মাস সময় দিয়ে মামলার কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করেন। অথচ উচ্চ আদালতের এ আদেশ উপেক্ষা করে মেহেরপুরের পারিবারিক আদালতের বিচারক মো. মেহেদী হাসান মোবারক মুনিম বেআইনিভাবে আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে বিষয়টি আমরা হাইকোর্টের নজরে আনলে আদালত এতে উষ্মা প্রকাশ করেন এবং বিচারককে ১০ আগস্ট সশরীরে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে হাইকোর্ট থেকে স্পষ্ট নির্দেশনা থাকলেও এখন পর্যন্ত সেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রিকল করা হয়নি। এতে আমাদের মনে হচ্ছে, নিম্ন আদালতের বিচারক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার মক্কেলকে হয়রানি করছেন।

মেহেরপুরের সিনিয়র সহকারী জজ মেহেদী হাসান মোবারক মুনিম কালবেলাকে বলেন, আমি আইনের মধ্যে থেকেই নির্দেশনা দিয়েছি। হাইকোর্টের নির্দেশনার কোনো লঙ্ঘন আমি করিনি। রিভিশনকারী হাইকোর্টে তথ্য গোপন করেছেন। আমি মহামান্য হাইকোর্টের জন্য লিখিত বক্তব্য প্রস্তুত করেছি। ১০ তারিখে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে সেটা উপস্থাপন করব।