কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ২৪-২৫ সেশনের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ইন্টারমিডিয়েট শাখার সামনে কিশোর গ্যাংয়ের প্রকাশ্য শোডাউনের ঘটনায় পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
গতকাল শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় কিশোর গ্যাং সদস্যদের হাতে দেশীয় অস্ত্র দেখা গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা নিশ্চিত করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, বিকাল ৪টার দিকে প্রায় ১৬-১৭ বছর বয়সী কিশোরদের হাতে লোহার রড, হকিস্টিক, বাঁশের লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র দেখা গেছে। তারা আতশবাজি ফুটিয়ে, বাইকের হর্ণ বাজিয়ে ও গালিগালাজ করে ভয়ভীতি ছড়িয়ে তাদের গ্যাংয়ের শক্তি প্রদর্শন করে।
এদিন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনসিসি সদস্য রহমত বিন হানিফ পরীক্ষাকেন্দ্রে দায়িত্ব পালনের সময় ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, ‘পরীক্ষার সময় বাইরে হঠাৎ মিছিলের শব্দ শুনে বেরিয়ে দেখি বেশ কয়েকজন কিশোরের হাতে রামদা, চাপাতি, ছুরি। আমি তাদের বলি—এভাবে শব্দ না করতে, পরীক্ষা চলছে। কিন্তু তারা উল্টো অস্ত্র দেখিয়ে আরও বেশি শব্দ করে চলে যায়। পরে পুলিশকে জানালে তারা গুরুত্ব দেয়নি।’
ঘটনাস্থলে উপস্থিত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অনেকেই আতঙ্কে পাশের সড়কে দাঁড়িয়ে পড়েন। একজন অভিভাবক বলেন, ‘আমার সন্তান পরীক্ষা দিতে এসেছে, কিন্তু বাইরে এমন আতঙ্কজনক পরিস্থিতি দেখে খুব চিন্তায় পড়েছি। প্রশাসন কী করছে?’
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিন ইশরাক মিজার বলেন, ‘৫ আগস্টের পর থেকে কুমিল্লায় কিশোর গ্যাংয়ের তাণ্ডব বেড়েছে। প্রশাসনের নির্লিপ্ততাই এর জন্য দায়ী। মাঝে মাঝে কাউকে আটক করা হলেও তারা ফের ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। যারা এসব গ্যাংকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে, তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে।’
কুবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল হাকিম বলেন, ‘ঘটনার কথা জানার পর আমি প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।’
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিনুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। বাকি গ্যাং সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’