ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন এক ব্যতিক্রমধর্মী প্রার্থী। উপজেলার বালিপাড়া এলাকার বাসিন্দা আবুল মনসুর ফকির, যিনি স্থানীয়ভাবে একজন ভিক্ষুক হিসেবে পরিচিত, এবার এমপি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন। তার এই সিদ্ধান্তে পুরো ত্রিশালজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক চাঞ্চল্য ও কৌতূহল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আবুল মনসুর দীর্ঘদিন ধরে জীবিকার তাগিদে ভিক্ষাবৃত্তির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তবে তিনি নিজেকে সমাজের অবহেলিত ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে তুলে ধরছেন। তার দাবি, সংসদে গেলে তিনি গরিব, ভিক্ষুক, দিনমজুর ও পিছিয়ে পড়া মানুষের কণ্ঠস্বর হতে চান।
এ বিষয়ে সাংবাদিক মারুফের এক প্রশ্নের উত্তরে আবুল মনসুর ফকির বলেন,
“আমি গরিব মানুষের কষ্ট নিজের জীবন দিয়ে দেখেছি। বড় বড় নেতারা আমাদের কথা বলে, কিন্তু আমাদের জীবনে কোনো পরিবর্তন আনে না। তাই আমি নিজেই দাঁড়িয়েছি।”
তার প্রার্থী হওয়া নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ একে সাহসী উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন, আবার অনেকে বিষয়টিকে নির্বাচনী কৌতুক হিসেবেও দেখছেন। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনা সমাজে শ্রেণিভিত্তিক রাজনীতির বাস্তব চিত্র নতুন করে সামনে এনেছে।
ত্রিশালের প্রবীণ বাসিন্দা হুমায়ূন ও মামুন বলেন,
“এর আগে কখনো এমন ঘটনা দেখিনি। ভিক্ষুক থেকে এমপি প্রার্থী—এটা যেমন অবাক করার, তেমনি ভাবনার বিষয়ও।”
নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে আইনগতভাবে কোনো বাধা নেই, যদি প্রার্থী নির্ধারিত যোগ্যতা পূরণ করেন। সেই হিসেবে আবুল মনসুরের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার বিষয়টি যাচাই-বাছাইয়ের প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
ভিক্ষুক পেশা থেকে সংসদ সদস্য হওয়ার স্বপ্ন—এই ব্যতিক্রমী গল্প শেষ পর্যন্ত কোন দিকে মোড় নেয়, তা জানতে এখন অপেক্ষায় ত্রিশালবাসীসহ গোটা এলাকার মানুষ।

স্টাফ রিপোর্টার 























