ময়মনসিংহের ফুলপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত এক ব্যক্তিকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কথা বলে প্রতারণা করেছে একটি চক্র। প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা তুলে নিয়ে গেছে আহত ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব থেকে। এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে ফুলপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
প্রতারণার শিকার ব্যক্তির নাম হাসান ছিদ্দিক ওরফে মুরাদ (২৯)। তিনি ফুলপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আমুয়াকান্দা গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে। তিনি ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ২০ জুলাই ফুলপুর এলাকায় তাঁর হাতে আঘাত লাগে। এরপর দুই মাস বেতন দেওয়ার পর তাঁকে চাকরিচ্যুত করে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে হাসান ছিদ্দিক বাড়িতে আছেন।
জিডিতে হাসান ছিদ্দিক উল্লেখ করেন, ‘তিনি জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত হয়েছিলেন। ১৯ জানুয়ারি দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে তাঁর মুঠোফোনে তিনটি অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন করা হয়। আন্দোলনে আহত হওয়ায় সরকারিভাবে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে বলে জানানো হয়।
অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা তাঁর এটিএম কার্ডের দুই দিকের ছবি চান। তাঁদের বিশ্বাস করে তিনি সেই ছবি পাঠান। এরপর তাঁরা একটি ওটিপি পাঠিয়ে একটি সংখ্যা দিয়ে গুণ করে জানাতে বলেন। আমি সংখ্যাটি বলি। এরপর আমার ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে ঢুকে দেখি ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা নেই। যে মুঠোফোনের নম্বর থেকে ফোন করা হয়েছিল, সেই নম্বরগুলোও বন্ধ।’
হাসান ছিদ্দিক প্রথম আলোকে আরও বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের লোক পরিচয় দিয়ে আহত ব্যক্তি হিসেবে সরকারি তালিকায় যেসব তথ্য আছে, তা বিস্তারিত বলতে থাকেন মুঠোফোনে ফোন করা ব্যক্তি। এতে বিশ্বাস হয়ে যায় তাঁরা সরকারি দপ্তরের লোক। তাঁদের হোয়াটসঅ্যাপেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের লেগো থাকায় অবিশ্বাস হয়নি। পরে চাওয়া সব তথ্য তাঁরা নিয়ে যান। আমাকে বলা হয়েছিল, অনুদান হিসেবে ১ লাখ ৭ হাজার টাকা পাঠাবে। কিন্তু আমার ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা নিয়ে গেছে চক্রটি।’
ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হাদি বলেন, বিষয়টি নিয়ে থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। অপরাধী চক্র দ্রুত আইনের আওতায় আসবে। কেউ যেন এ ধরনের প্রতারণার শিকার না হন, সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।