অনলাইন সংবাদ-
ময়মনসিংহ ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচিতে শহরের মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়েছে কোটা সংস্কারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা টাউন হল চত্বরে জড়ো হয়। পরে সেখান থেকে তারা বিক্ষোভ শুরু করে। শিক্ষার্থীদের হাতে লাঠিসোঁটা ছিল। আনন্দমোহন কলেজ, মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজ, নাসিরাবাদ কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের পক্ষে স্লোগান দিচ্ছেন।
আন্দোলনের সমন্বয়কারীদের অন্যতম আনন্দমোহন কলেজের শিক্ষার্থী মানিক সাহা বলেন, “শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে বিভিন্নভাবে বাধা দেওয়া হচ্ছে। বাধা উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করছে। অনেক শিক্ষার্থীর অভিভাবকও আসছেন আন্দোলনে। “দেশে ৯০ শতাংশ মানুষ কোটার বিপক্ষে। আমরা চাই, মেধায় এগিয়ে যেতে, কোটায় নয়। আমাদের যৌক্তিক দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব। আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না।”
আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী আফিফা জান্নাত বলেন, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে আমাদের আন্দোলন দমানো যাবে না। ঢাকা থেকে বাধ্য হয়ে চলে আসতে হয়েছে; তাই ময়মনসিংহের আন্দোলনে অংশগ্রহণ করছি। আমার মতো সব শিক্ষার্থী বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে দাবি আদায় করেই ছাড়বে। “ছাত্রলীগের একজন কর্মী মারা গেছে, প্রধানমন্ত্রী গতকাল তার নাম নিয়েছেন। কিন্তু রাজপথে থেকে আমার কতগুলো ভাই মারা গেল তাদের নাম একবারও নিলেন না। তাহলে আন্দোলন কিভাবে থামবে আপনি আশা করেন। এদেশের ছাত্রসমাজ জেগেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে তাদের দমানো যাবে না।”
ময়মনসিংহে শাটডাউন শিক্ষার্থীরা শহরের মোড়ে মোড়ে অবস্থান করছে-
আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী নাসিরাবাদ কলেজের শিক্ষার্থী সুনীল দাশ বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলনকারীদের সরকার থামাতে না পেরে ইন্টারনেট বন্ধ করে দিসে। এতে করে কি আন্দোলনে লোকজন কম হচ্ছে বলেন? অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছায় যোগ দিচ্ছে। স্বাধীনতার এতো বছরেও কেন কোটা প্রয়োজন? তাহলে স্মার্ট বাংলাদেশ কিভাবে হবে?”
‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচিতে শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেওয়ায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মোতায়েন রয়েছে অতিরিক্ত পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে নগরীতে যানবাহন কম চলাচল করায় ভোগান্তিতে পড়েছেন পরিবহন চালক ও যাত্রীরা। অটোরিকশা চালক ইদ্রিস আলী বলেন, “শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের কারণে শহরে এক প্রকার অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। মানুষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না। তাই ভাড়াও অনেক কমে গেছে। চলাটাই অনেক কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।”