রংপুর প্রতিনিধি-মামুন
বেতন ভাতা বৃদ্ধি, চিকিৎসক সুরক্ষা আইন ও চিকিৎসকদের কর্মস্থল নিরাপদের দাবিতে কর্মবিরতি করেছেন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন চিকিৎসা নিতে আশা রোগী ও তাদের স্বজনেরা।
সেই সঙ্গে নতুন ভর্তি হওয়া রোগীরা কোনো চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ রোগীর স্বজনদের। সোমবার (২৫ মার্চ) দুপুরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে মানববন্ধনের মাধ্যমে এ কর্মবিরতি করেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা জানান, গত বছর ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তাদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন।
সেই সময় তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বেতন ভাতা বৃদ্ধি করার আশ্বাস দিলে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেক সময় গড়িয়ে গেলেও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করা হয়নি।
এ সময় বক্তারা তাদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করে ৩০ হাজার টাকা করার অনুরোধ জানান। ইন্টার্ন চিকিৎসক ফারহানা আফরিন নিশো বলেন, একজন দিনমজুর ৮ ঘন্টা ডিউটি করে সেখানে একজন ইন্টার্ন চিকিৎসক ১৪ থেকে ১৬ ঘন্টা ডিউটি করে। তারপরও তারা তাদের ন্যায্য বেতন পায় না। তাছাড়া এখন ঘরভাড়া নিতে গেলে প্রতি মাসে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা গুনতে হয়।
সেখানে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বেতন পান ১৫ হাজার টাকা। সেই টাকা দিয়ে কিছুই হয় না যা বর্তমান সময়ে অপ্রতুল। ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ রংপুরের আহবায়ক ডা. রানা বলেন, বেতন ভাতা বৃদ্ধি, চিকিৎসক সুরক্ষা আইন ও চিকিৎসকদের কর্মস্থল নিরাপদের দাবীতে কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। আমরা আমাদের লিখিত দাবি পরিচালক স্যারের মাধ্যমে ঢাকায় পাঠিয়েছি।
এখন পর্যন্ত কোন সমাধান আসেনি। সমাধান না আসা পর্যন্ত এই কর্মবিরতি চলবে।এদিকে, ইন্টার্ন চিকিৎসক দের হঠাৎ ডাকা এই ধর্মঘটে বেশ বিপাকে পড়েছেন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগী ও তাদের স্বজনরা। একাধিক রোগীর স্বজনরা বলছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কারণে আমরা কোনো প্রকার চিকিৎসা পাচ্ছি না।
রোজার মধ্যে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা টানা কর্মবিরতি পালন করলে দুর্ভোগ পোহাতে হবে চিকিৎসা নিতে আশা রোগী ও স্বজনদের। এবিষয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ ইউনুস আলী বলেন, রংপুর বিভাগের এই হাসপাতালে শয্যার বিপরীতে বেশি রোগী ভর্তি আছে। এত রোগী সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় চিকিৎসকদের। ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা থাকলে সামাল দেওয়া সহজ হয়।
তাদের কর্মবিরতিতে অন্যান্য চিকিৎসকদের রোস্টার করে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করার জন্য বলা হয়েছে।যাতে করে চিকিৎসায় ব্যাঘাত না ঘটে। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দাবির বিষয়টি ঢাকায় জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।