ময়মনসিংহ , বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫, ২৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

রাজবাড়ীতে রাসেল ভাইপার আতঙ্ক কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে গামবুট

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০২:৪১:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫
  • ৮ বার পড়া হয়েছে

রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা পাড়ের বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে আবারও দেখা দিয়েছে ভয়ঙ্কর বিষধর সাপ রাসেল ভাইপারের (স্থানীয়ভাবে চন্দ্রবোড়া নামে পরিচিত) উপদ্রব। ফলে কৃষকরা চরম আতঙ্কে রয়েছেন। অনেকেই ফসলের মাঠে যেতে সাহস পাচ্ছেন না। আতঙ্কের মধ্যে কৃষকদের সুরক্ষায় বুধবার (৭ মে) তাদের মাঝে বিনামূল্যে গামবুট বিতরণ করেছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা প্রশাসন।

আজ বুধবার বেলা ১টায় গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের চর দৌলতদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে ১৫০ জন কৃষকের মাঝে গামবুট বিতরণ করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাহিদুর রহমান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. খোকন উজ্জ জামান, উপজেলা পাট কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাহিদুর রহমান বলেন, ‘গত বছর থেকে চরাঞ্চলে রাসেল ভাইপারের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। এবছর এপ্রিল মাসের শুরু থেকেই সাপটির উপস্থিতি বাড়ছে। ইতোমধ্যে তিনজন কৃষক রাসেল ভাইপারের কামড়ে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন। কৃষকদের আতঙ্ক দূর করতে এবং তাদের সুরক্ষায় এই গামবুট বিতরণ করা হয়েছে। আমরা আশা করি, এই উদ্যোগ দেখে অন্যরাও সচেতন হয়ে মাঠে কাজের সময় পায়ে সুরক্ষা ব্যবহার করবেন।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. খোকন উজ্জ জামান জানান, ‘এ সময় চরাঞ্চলে মিষ্টিকুমড়া, ভুট্টা ও পাটের আবাদ হয়ে থাকে। এসব জমিতে কাজ করার সময় কৃষকরা রাসেল ভাইপারের আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। সাপটি সাধারণত নিচু জায়গায় এবং ঘাসের ফাঁকে লুকিয়ে থাকে, ফলে পায়ে কামড় দেয়। এজন্য পায়ের সুরক্ষা হিসেবে গামবুট বিতরণ করা হয়েছে।’

কৃষকরা জানান, পদ্মা তীরবর্তী এলাকায় গত বছরই প্রথম রাসেল ভাইপারের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। সে সময়ও আতঙ্ক দেখা দিলেও মাঝখানে কিছুদিন তা কম ছিল। কিন্তু বর্তমানে আবার ব্যাপকহারে সাপটি দেখা যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন কৃষক এই সাপের কামড়ে আহত হয়েছেন। ফলে তারা চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। অনেকে জমিতে কাজ করতে যেতে সাহস পাচ্ছেন না, ফলে তৈরি হয়েছে কৃষি শ্রমিক সংকট। এতে ফসল কাটা ও পরিচর্যায় বিপাকে পড়েছেন অনেকেই।

স্থানীয় কৃষক আবদুল হালিম বলেন, ‘রাসেল ভাইপার খুবই ভয়ঙ্কর সাপ। এটি খুব দ্রুত কামড় দেয় এবং বিষের প্রভাবও তীব্র। গামবুট পেয়ে আমরা কিছুটা নিরাপদ বোধ করছি। তবে সরকারের উচিত আরও বড় পরিসরে সচেতনতা ও সুরক্ষা উপকরণ বিতরণ করা।’

উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, এই কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে আরও বিস্তৃত করা হবে এবং সাপ নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। সাপের উপদ্রব মোকাবেলায় কৃষকদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে বিশেষ প্রচারণাও চালানো হবে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

রাজবাড়ীতে রাসেল ভাইপার আতঙ্ক কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে গামবুট

আপডেট সময় ০২:৪১:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫

রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা পাড়ের বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে আবারও দেখা দিয়েছে ভয়ঙ্কর বিষধর সাপ রাসেল ভাইপারের (স্থানীয়ভাবে চন্দ্রবোড়া নামে পরিচিত) উপদ্রব। ফলে কৃষকরা চরম আতঙ্কে রয়েছেন। অনেকেই ফসলের মাঠে যেতে সাহস পাচ্ছেন না। আতঙ্কের মধ্যে কৃষকদের সুরক্ষায় বুধবার (৭ মে) তাদের মাঝে বিনামূল্যে গামবুট বিতরণ করেছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা প্রশাসন।

আজ বুধবার বেলা ১টায় গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের চর দৌলতদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে ১৫০ জন কৃষকের মাঝে গামবুট বিতরণ করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাহিদুর রহমান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. খোকন উজ্জ জামান, উপজেলা পাট কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাহিদুর রহমান বলেন, ‘গত বছর থেকে চরাঞ্চলে রাসেল ভাইপারের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। এবছর এপ্রিল মাসের শুরু থেকেই সাপটির উপস্থিতি বাড়ছে। ইতোমধ্যে তিনজন কৃষক রাসেল ভাইপারের কামড়ে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন। কৃষকদের আতঙ্ক দূর করতে এবং তাদের সুরক্ষায় এই গামবুট বিতরণ করা হয়েছে। আমরা আশা করি, এই উদ্যোগ দেখে অন্যরাও সচেতন হয়ে মাঠে কাজের সময় পায়ে সুরক্ষা ব্যবহার করবেন।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. খোকন উজ্জ জামান জানান, ‘এ সময় চরাঞ্চলে মিষ্টিকুমড়া, ভুট্টা ও পাটের আবাদ হয়ে থাকে। এসব জমিতে কাজ করার সময় কৃষকরা রাসেল ভাইপারের আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। সাপটি সাধারণত নিচু জায়গায় এবং ঘাসের ফাঁকে লুকিয়ে থাকে, ফলে পায়ে কামড় দেয়। এজন্য পায়ের সুরক্ষা হিসেবে গামবুট বিতরণ করা হয়েছে।’

কৃষকরা জানান, পদ্মা তীরবর্তী এলাকায় গত বছরই প্রথম রাসেল ভাইপারের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। সে সময়ও আতঙ্ক দেখা দিলেও মাঝখানে কিছুদিন তা কম ছিল। কিন্তু বর্তমানে আবার ব্যাপকহারে সাপটি দেখা যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন কৃষক এই সাপের কামড়ে আহত হয়েছেন। ফলে তারা চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। অনেকে জমিতে কাজ করতে যেতে সাহস পাচ্ছেন না, ফলে তৈরি হয়েছে কৃষি শ্রমিক সংকট। এতে ফসল কাটা ও পরিচর্যায় বিপাকে পড়েছেন অনেকেই।

স্থানীয় কৃষক আবদুল হালিম বলেন, ‘রাসেল ভাইপার খুবই ভয়ঙ্কর সাপ। এটি খুব দ্রুত কামড় দেয় এবং বিষের প্রভাবও তীব্র। গামবুট পেয়ে আমরা কিছুটা নিরাপদ বোধ করছি। তবে সরকারের উচিত আরও বড় পরিসরে সচেতনতা ও সুরক্ষা উপকরণ বিতরণ করা।’

উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, এই কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে আরও বিস্তৃত করা হবে এবং সাপ নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। সাপের উপদ্রব মোকাবেলায় কৃষকদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে বিশেষ প্রচারণাও চালানো হবে।