ময়মনসিংহ , মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ একটি জঙ্গি সংগঠন বললেন সাদিক কায়েম একইসঙ্গে জিতলেন হজের লটারি মিসরের তিন ভাইবোন আপিলের রায়ের তারিখ ঘোষণা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে সেনাপ্রধানের আহ্বান আর্মি সার্ভিস কোরকে লাল কেল্লা তিন দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা ৯৭ শতাংশ মুসলিম ভোটার মামদানিকে ভোট দিয়েছেন ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আটক ফেসবুকে ‘১৩ তারিখ ঢাকা যাওয়ার’ পোস্ট, তারেক রহমান যদি চাইতেন ৫ আগস্টই ক্ষমতা নিতে পারতেন বললেন আব্দুস সালাম ১০ম দিনের আপিল শুনানি শুরু তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে ঝিনাইদহে মধ্যরাতে মৃদুস্বরে স্লোগান দিয়ে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের মশাল মিছিল
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে দ্বিতীয় দিনের মতো নাহিদ ইসলাম ট্রাইব্যুনালে

  • ডিজিটাল রিপোর্ট
  • আপডেট সময় ১১:৫৩:০৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৬৫ বার পড়া হয়েছে

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সংক্রান্ত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং আরও একজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে দ্বিতীয় দিনের মতো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

আজ বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ জবানবন্দি দেওয়ার কথা রয়েছে তার। মামলার শেষ সাক্ষী ধরা হয়েছে তাকে।

 জবানবন্দিতে নাহিদ বলেন, ‘গত বছরের ১৪ জুলাই শেখ হাসিনা এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা এবং রাজাকারের নাতিপুতি অ্যাখ্যা দিয়ে কোটাপ্রথার পক্ষে অবস্থান নেন। মূলত এই বক্তব্যের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের ওপর আক্রমণের একটি বৈধতা দেয়া হয়। কারণ, তারা সবসময় দেখেছেন, সরকারের বিরুদ্ধে কোনো ন্যায্য আন্দোলন করা হলে তাদের রাজাকারের বাচ্চা আখ্যা দিয়ে আন্দোলনের ন্যায্যতা নস্যাৎ করা হতো।’

তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রদের রাজাকারের বাচ্চা এবং রাজাকারের নাতিপুতি আখ্যায়িত করায় সারাদেশের ছাত্রছাত্রীরা অপমানিত বোধ করেন। সেই রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা প্রতিবাদমুখর হয়ে রাস্তায় নেমে আসেন।’

জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ বলেন, ‘১৫ জুলাই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, আন্দোলন ঠেকাতে ছাত্রলীগই যথেষ্ট। এর পরদিন (১৬ জুলাই) আমরা দেশজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দেই। ওইদিন পুলিশের গুলিতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ শহীদ হন। এছাড়া চট্টগ্রামের ওয়াসিমসহ সারাদেশে ছয়জন শহীদ হন। ১৭ জুলাই ডিজিএফআই বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে সরকারের সঙ্গে সংলাপের জন্য আমাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘১৭ জুলাই রাতে দেশব্যাপী কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৮ জুলাই সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা রাস্তায় নেমে আসেন। বিশেষত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদরাসার শিক্ষার্থীরা সেদিন রাজপথে ব্যাপক প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। আন্দোলনের নেতাদের জীবন হুমকির মুখে পড়ে এবং গ্রেফতার এড়াতে তারা আত্মগোপনে চলে যান। সেদিন সারা দেশে অনেক ছাত্র-জনতা আহত ও নিহত হন। সেদিন রাতে সারা দেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়া হয়। একইভাবে ১৯ জুলাই পুলিশ এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচার গুলি চালায়। এদিনও অনেক ছাত্র-জনতা আহত ও নিহত হন।’

জবানবন্দিতে এনসিপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘১৯ জুলাই তারা বুঝতে পারি সরকার ইলেকট্রনিক মিডিয়া সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তাদের আন্দোলনের ও হতাহতদের কোনো খবর কোনো মিডিয়ায় প্রচার হচ্ছিল না।’

এদিন দুপুরে মামলার ৪৬তম সাক্ষী হিসেবে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের জবানবন্দির জেরা শেষ করা হয়। গত সোমবার ও মঙ্গলবারও তার সাক্ষ্যগ্রহণ করেন ট্রাইব্যুনাল।
মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও অন্য দুই আসামি হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এর মধ্যে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এ মামলায় ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হয়ে জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ সাক্ষ্যগ্রহণের সময় তিনি ট্রাইব্যুনালে হাজির ছিলেন।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ একটি জঙ্গি সংগঠন বললেন সাদিক কায়েম

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে দ্বিতীয় দিনের মতো নাহিদ ইসলাম ট্রাইব্যুনালে

আপডেট সময় ১১:৫৩:০৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সংক্রান্ত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং আরও একজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে দ্বিতীয় দিনের মতো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

আজ বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ জবানবন্দি দেওয়ার কথা রয়েছে তার। মামলার শেষ সাক্ষী ধরা হয়েছে তাকে।

 জবানবন্দিতে নাহিদ বলেন, ‘গত বছরের ১৪ জুলাই শেখ হাসিনা এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা এবং রাজাকারের নাতিপুতি অ্যাখ্যা দিয়ে কোটাপ্রথার পক্ষে অবস্থান নেন। মূলত এই বক্তব্যের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের ওপর আক্রমণের একটি বৈধতা দেয়া হয়। কারণ, তারা সবসময় দেখেছেন, সরকারের বিরুদ্ধে কোনো ন্যায্য আন্দোলন করা হলে তাদের রাজাকারের বাচ্চা আখ্যা দিয়ে আন্দোলনের ন্যায্যতা নস্যাৎ করা হতো।’

তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রদের রাজাকারের বাচ্চা এবং রাজাকারের নাতিপুতি আখ্যায়িত করায় সারাদেশের ছাত্রছাত্রীরা অপমানিত বোধ করেন। সেই রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা প্রতিবাদমুখর হয়ে রাস্তায় নেমে আসেন।’

জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ বলেন, ‘১৫ জুলাই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, আন্দোলন ঠেকাতে ছাত্রলীগই যথেষ্ট। এর পরদিন (১৬ জুলাই) আমরা দেশজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দেই। ওইদিন পুলিশের গুলিতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ শহীদ হন। এছাড়া চট্টগ্রামের ওয়াসিমসহ সারাদেশে ছয়জন শহীদ হন। ১৭ জুলাই ডিজিএফআই বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে সরকারের সঙ্গে সংলাপের জন্য আমাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘১৭ জুলাই রাতে দেশব্যাপী কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৮ জুলাই সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা রাস্তায় নেমে আসেন। বিশেষত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদরাসার শিক্ষার্থীরা সেদিন রাজপথে ব্যাপক প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। আন্দোলনের নেতাদের জীবন হুমকির মুখে পড়ে এবং গ্রেফতার এড়াতে তারা আত্মগোপনে চলে যান। সেদিন সারা দেশে অনেক ছাত্র-জনতা আহত ও নিহত হন। সেদিন রাতে সারা দেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়া হয়। একইভাবে ১৯ জুলাই পুলিশ এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচার গুলি চালায়। এদিনও অনেক ছাত্র-জনতা আহত ও নিহত হন।’

জবানবন্দিতে এনসিপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘১৯ জুলাই তারা বুঝতে পারি সরকার ইলেকট্রনিক মিডিয়া সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তাদের আন্দোলনের ও হতাহতদের কোনো খবর কোনো মিডিয়ায় প্রচার হচ্ছিল না।’

এদিন দুপুরে মামলার ৪৬তম সাক্ষী হিসেবে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের জবানবন্দির জেরা শেষ করা হয়। গত সোমবার ও মঙ্গলবারও তার সাক্ষ্যগ্রহণ করেন ট্রাইব্যুনাল।
মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও অন্য দুই আসামি হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এর মধ্যে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এ মামলায় ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হয়ে জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ সাক্ষ্যগ্রহণের সময় তিনি ট্রাইব্যুনালে হাজির ছিলেন।