ময়মনসিংহ , শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

সাবেক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীকে বালুতে পুঁতে ৪ কোটি টাকা আদায়ের অভিযোগ

যশোরের অভয়নগরে বালুতে পুঁতে ও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে শাহনেওয়াজ কবীর টিপু নামে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে দুই দফায় ৪ কোটি টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির সাবেক নেতা আসাদুজ্জামান জনির নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে টিপুর পরিবার। 

সবশেষ বুধবার (৩০ জুলাই) অভয়নগর থানা ও ৩১ জুলাই অভয়নগর আর্মি ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর স্ত্রী মোছা. আসমা খাতুন। তবে থানায় দেওয়া অভিযোগটি পুলিশ গ্রহণ করেনি।

শাহনেওয়াজ কবীর টিপু নওয়াপাড়ার জাফ্রিদী এন্টারপ্রাইজ নামের প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী। অপর দিকে অভিযুক্তরা হলেন উপজেলার নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির (পদ স্থগিত) সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান জনি ও নওয়াপাড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান।

আসমা খাতুনের অভিযোগ, গত ২ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় শাহনেওয়াজ কবীর টিপুকে সুকৌশলে নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান জনির অফিসে ডেকে নিয়ে যায় সৈকত হোসেন হিরা নামের এক ব্যক্তি। এসময় আসাদুজ্জামান জনি ব্যবসায়ী টিপুকে মারধর করে এবং অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দুই কোটি টাকা দাবি করে। এরপর টিপুর স্ত্রী সাউথ বাংলা ব্যাংক থেকে বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান জনির নিজ প্রতিষ্ঠানের একাউন্টে ২ কোটি টাকা রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট (RTGS) করেন। টাকা পেয়ে ওই দিন ব্যবসায়ী টিপুকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এরপর ম্যানেজার সাংবাদিক মফিজের একাউন্টে পূবালী ব্যাংক থেকে ৬৮ লাখ ও সাউথ বাংলা ব্যাংক থেকে ৩২ লাখ টাকা রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট (RTGS) করে। এসময় মফিজ আরও ১ কোটি টাকার চেক আদায় করে‌। পাশাপাশি জনির নামে ক্রয় করা ৩টি ও দিলিপ সাহার নামে ক্রয় করা ৩টি ১০০ টাকার ফাঁকা স্টাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। কাউকে কিছু না জানানো ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

অভিযোগের বিষয় জানতে নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির (পদস্থগিত) সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান জনির মুঠোফোনে কল দিয়ে বন্ধ‌ পাওয়া যায়।

নওয়াপাড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মফিজ উদ্দিনের মুঠোফোনে কল দিয়ে সেটিও বন্ধ‌ পাওয়া যায়।

তবে জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, সংগঠন বিরোধী কর্মকাণ্ডে জনির বিরুদ্ধে আগেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সে এখন আমাদের কেউ না। ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা আদায় সম্পর্কে কোনো তথ্য জানা নেই। তার কর্মকাণ্ডে আমাদের দল কোনো দায় নেবে না।

অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আলিম জানান, একটি মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। তবে আপনি ব্যবসায়ী টিপুর স্ত্রীকে বলেন থানায় অভিযোগ দিতে। অভিযোগটি গ্রহণ করে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

সাবেক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীকে বালুতে পুঁতে ৪ কোটি টাকা আদায়ের অভিযোগ

আপডেট সময় ১০:০২:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ অগাস্ট ২০২৫

যশোরের অভয়নগরে বালুতে পুঁতে ও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে শাহনেওয়াজ কবীর টিপু নামে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে দুই দফায় ৪ কোটি টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির সাবেক নেতা আসাদুজ্জামান জনির নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে টিপুর পরিবার। 

সবশেষ বুধবার (৩০ জুলাই) অভয়নগর থানা ও ৩১ জুলাই অভয়নগর আর্মি ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর স্ত্রী মোছা. আসমা খাতুন। তবে থানায় দেওয়া অভিযোগটি পুলিশ গ্রহণ করেনি।

শাহনেওয়াজ কবীর টিপু নওয়াপাড়ার জাফ্রিদী এন্টারপ্রাইজ নামের প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী। অপর দিকে অভিযুক্তরা হলেন উপজেলার নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির (পদ স্থগিত) সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান জনি ও নওয়াপাড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান।

আসমা খাতুনের অভিযোগ, গত ২ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় শাহনেওয়াজ কবীর টিপুকে সুকৌশলে নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান জনির অফিসে ডেকে নিয়ে যায় সৈকত হোসেন হিরা নামের এক ব্যক্তি। এসময় আসাদুজ্জামান জনি ব্যবসায়ী টিপুকে মারধর করে এবং অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দুই কোটি টাকা দাবি করে। এরপর টিপুর স্ত্রী সাউথ বাংলা ব্যাংক থেকে বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান জনির নিজ প্রতিষ্ঠানের একাউন্টে ২ কোটি টাকা রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট (RTGS) করেন। টাকা পেয়ে ওই দিন ব্যবসায়ী টিপুকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এরপর ম্যানেজার সাংবাদিক মফিজের একাউন্টে পূবালী ব্যাংক থেকে ৬৮ লাখ ও সাউথ বাংলা ব্যাংক থেকে ৩২ লাখ টাকা রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট (RTGS) করে। এসময় মফিজ আরও ১ কোটি টাকার চেক আদায় করে‌। পাশাপাশি জনির নামে ক্রয় করা ৩টি ও দিলিপ সাহার নামে ক্রয় করা ৩টি ১০০ টাকার ফাঁকা স্টাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। কাউকে কিছু না জানানো ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

অভিযোগের বিষয় জানতে নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির (পদস্থগিত) সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান জনির মুঠোফোনে কল দিয়ে বন্ধ‌ পাওয়া যায়।

নওয়াপাড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মফিজ উদ্দিনের মুঠোফোনে কল দিয়ে সেটিও বন্ধ‌ পাওয়া যায়।

তবে জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, সংগঠন বিরোধী কর্মকাণ্ডে জনির বিরুদ্ধে আগেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সে এখন আমাদের কেউ না। ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা আদায় সম্পর্কে কোনো তথ্য জানা নেই। তার কর্মকাণ্ডে আমাদের দল কোনো দায় নেবে না।

অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আলিম জানান, একটি মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। তবে আপনি ব্যবসায়ী টিপুর স্ত্রীকে বলেন থানায় অভিযোগ দিতে। অভিযোগটি গ্রহণ করে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।