ময়মনসিংহ , মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

‘হয়তো অনেক ভুল করেছি’,সোহেল রানা সবার কাছে ক্ষমা চাইলেন

  • ডিজিটাল রিপোর্ট
  • আপডেট সময় ১২:০৬:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ১৭ বার পড়া হয়েছে

বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি নায়ক, প্রযোজক ও পরিচালক মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা। বয়সের ভারে এখন আর ক্যামেরার সামনে নিয়মিত দেখা যায় না তাকে। বার্ধক্যের কারণে বেশিরভাগ সময় কাটছে বাসাতেই। তবে চলচ্চিত্রের প্রতি টান, সহকর্মীদের প্রতি আবেগ আর দেশবাসীর প্রতি দায়িত্ববোধ এখনো অনুভব করেন তিনি।

সেই টান থেকেই সহকর্মী ও দেশবাসীর উদ্দেশে ছুঁড়ে দিলেন হৃদয়ছোঁয়া কথা, ‘যদি কোনো ভুল-ত্রুটি কিংবা অন্যায় করে থাকি, আজ এই মুহূর্তে সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।’

গত রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বিএফডিসিতে প্রয়াত চলচ্চিত্রশিল্পীদের স্মরণে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন সোহেল রানা। নতুন ও পুরোনো শিল্পীদের ভিড়ে তিনি সেখানে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন।

এদিন তার কথায় স্পষ্ট হয়ে ওঠে জীবনের নানা উপলব্ধি। বিনীতভাবে বললেন, ‘আমি ভুল করেছি, ভুল অনেক করেছি। তাই সবার কাছে ক্ষমা চাইছি। যেন মৃত্যুর পর মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে নীতি ও আদর্শ নিয়ে দাঁড়াতে পারি।’

প্রয়াত চলচ্চিত্রশিল্পীদের স্মরণে রোববার বিএফডিসিতে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে কথা বলছেন সোহেল রানা। ছবি: সংগৃহীত

সোহেল রানার পারিবারিক নাম মাসুদ পারভেজ। নায়ক হিসেবে চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশের পর তিনি সোহেল রানা নামেই ব্যাপক পরিচিতি পান। তবে প্রযোজক হিসেবে তার যাত্রা শুরু হয় ১৯৭২ সালে, মাসুদ পারভেজ নামেই।

সোহেল রানা শুধু অভিনেতাই নন, তিনি মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধের অব্যবহিত পরেই প্রযোজনা করেন ঐতিহাসিক চলচ্চিত্র ‘ওরা ১১ জন’। নির্মাতা চাষী নজরুল ইসলামের সঙ্গে মিলে তিনি সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধাদের দিয়েই ক্যামেরার সামনে তুলে ধরেছিলেন যুদ্ধের বাস্তবতা। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে তখন চলচ্চিত্র নির্মাণ করা প্রায় অসম্ভব ছিল, কিন্তু সোহেল রানা সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করেছিলেন।

১৯৭২ সালে ‘পারভেজ ফিল্মস’ নামে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন তিনি। প্রযোজনা করেন প্রায় ৩০টিরও বেশি চলচ্চিত্র। তবে জনপ্রিয়তা পান নায়ক হিসেবেই। ১৯৭৪ সালে কাজী আনোয়ার হোসেনের বিখ্যাত চরিত্র অবলম্বনে নির্মিত ‘মাসুদ রানা’ চলচ্চিত্রে নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। একই সিনেমায় পরিচালক হিসেবেও যাত্রা শুরু করেন তিনি।

এরপর একে একে ‘এপার ওপার’, ‘দস্যু বনহুর’, ‘জীবন নৌকা’সহ প্রায় তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন সোহেল রানা। ‘লালু ভুলু’, ‘অজান্তে’ ও ‘সাহসী মানুষ চাই’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। ২০১৯ সালে পান জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

‘হয়তো অনেক ভুল করেছি’,সোহেল রানা সবার কাছে ক্ষমা চাইলেন

আপডেট সময় ১২:০৬:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি নায়ক, প্রযোজক ও পরিচালক মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা। বয়সের ভারে এখন আর ক্যামেরার সামনে নিয়মিত দেখা যায় না তাকে। বার্ধক্যের কারণে বেশিরভাগ সময় কাটছে বাসাতেই। তবে চলচ্চিত্রের প্রতি টান, সহকর্মীদের প্রতি আবেগ আর দেশবাসীর প্রতি দায়িত্ববোধ এখনো অনুভব করেন তিনি।

সেই টান থেকেই সহকর্মী ও দেশবাসীর উদ্দেশে ছুঁড়ে দিলেন হৃদয়ছোঁয়া কথা, ‘যদি কোনো ভুল-ত্রুটি কিংবা অন্যায় করে থাকি, আজ এই মুহূর্তে সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।’

গত রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বিএফডিসিতে প্রয়াত চলচ্চিত্রশিল্পীদের স্মরণে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন সোহেল রানা। নতুন ও পুরোনো শিল্পীদের ভিড়ে তিনি সেখানে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন।

এদিন তার কথায় স্পষ্ট হয়ে ওঠে জীবনের নানা উপলব্ধি। বিনীতভাবে বললেন, ‘আমি ভুল করেছি, ভুল অনেক করেছি। তাই সবার কাছে ক্ষমা চাইছি। যেন মৃত্যুর পর মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে নীতি ও আদর্শ নিয়ে দাঁড়াতে পারি।’

প্রয়াত চলচ্চিত্রশিল্পীদের স্মরণে রোববার বিএফডিসিতে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে কথা বলছেন সোহেল রানা। ছবি: সংগৃহীত

সোহেল রানার পারিবারিক নাম মাসুদ পারভেজ। নায়ক হিসেবে চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশের পর তিনি সোহেল রানা নামেই ব্যাপক পরিচিতি পান। তবে প্রযোজক হিসেবে তার যাত্রা শুরু হয় ১৯৭২ সালে, মাসুদ পারভেজ নামেই।

সোহেল রানা শুধু অভিনেতাই নন, তিনি মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধের অব্যবহিত পরেই প্রযোজনা করেন ঐতিহাসিক চলচ্চিত্র ‘ওরা ১১ জন’। নির্মাতা চাষী নজরুল ইসলামের সঙ্গে মিলে তিনি সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধাদের দিয়েই ক্যামেরার সামনে তুলে ধরেছিলেন যুদ্ধের বাস্তবতা। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে তখন চলচ্চিত্র নির্মাণ করা প্রায় অসম্ভব ছিল, কিন্তু সোহেল রানা সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করেছিলেন।

১৯৭২ সালে ‘পারভেজ ফিল্মস’ নামে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন তিনি। প্রযোজনা করেন প্রায় ৩০টিরও বেশি চলচ্চিত্র। তবে জনপ্রিয়তা পান নায়ক হিসেবেই। ১৯৭৪ সালে কাজী আনোয়ার হোসেনের বিখ্যাত চরিত্র অবলম্বনে নির্মিত ‘মাসুদ রানা’ চলচ্চিত্রে নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। একই সিনেমায় পরিচালক হিসেবেও যাত্রা শুরু করেন তিনি।

এরপর একে একে ‘এপার ওপার’, ‘দস্যু বনহুর’, ‘জীবন নৌকা’সহ প্রায় তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন সোহেল রানা। ‘লালু ভুলু’, ‘অজান্তে’ ও ‘সাহসী মানুষ চাই’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। ২০১৯ সালে পান জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা।