ময়মনসিংহ , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

হাসপাতালের টয়লেট থেকে রোগীর মরদেহ উদ্ধার

  • Reporter Name
  • আপডেট সময় ০৩:৩০:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ জুলাই ২০২৪
  • ৫৭ বার পড়া হয়েছে
মাটি ও মানুষ ডেস্ক:

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের টয়লেট থেকে বাবু বেপারি (৪০) নামে এক রোগীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার (১৩ জুলাই) সকালে হাসপাতালের তৃতীয় তলার গোসলখানা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।বাবু বেপারি বরিশালের মুলাদি উপজেলার তয়কা সেলিমপুর এলাকার আলী বাপারীর ছেলে। গত বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দুপুরে শ্বাসকষ্টের সমস্যা হওয়ায় তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।এরপর ওইদিন রাত ১টার দিকে তিনি হাসপাতালের ওয়ার্ড থেকে নিখোঁজ হন।

সদর হাসপাতাল নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার (১১ জুলাই) বাবু বেপারি অসুস্থ হলে তাকে গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুরে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে হাসপাতালের তৃতীয় তলার মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল।ওই দিন দিবাগত রাত ১টার দিকে বাবু বেপারি টয়লেটে যাওয়ার কথা বলে বের হন। এরপর আর তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বাবুর সঙ্গে থাকা তার মা রোকেয়া বেগম (৮০) নার্সদের বিষয়টি জানালেও তারা খোঁজার বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। পরে তার মা রোকেয়া দিশেহারা হয়ে ছেলেকে খুজঁতে পরদিন শুক্রবার (১২ জুলাই) গ্রামে ফিরে যান।তখন খবর পেয়ে অন্য স্বজনরা সদর হাসপাতালে ছুটে যান। তারাও বাবু বেপারির কোনো সন্ধান না পেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানায়। এরপরও তারা কোনো সহায়তা পায়নি। এরপর আজ শনিবার (১৩ জুলাই) সকালে হাসপাতালের তৃতীয় তলায় মেডিসিন ওয়ার্ডের গোসলখানায় এক ব্যাক্তিকে পড়ে থাকতে দেখে নার্সদের জানান অন্য এক রোগী। তখন বাবুর স্বজনরা ওটা বাবুর লাশ বলে সনাক্ত করেন।দায়িত্বরত নার্সরা বিষয়টি পালং মডেল থানার পুলিশকে জানান। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

নিহত বাবুর মা রোকেয়া বেগম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘অসুস্থতার পর আমার পোলাডারে নিয়া এই হাসপাতালে আইছি। টয়লেটে যাওয়ার কথা কইয়া পোলাডারে আর পাই না। পোলাডারে খুইজ্জা না পাইয়া নার্সেগো জানাইছি। পাগলের মতো খুজ্জি পোলাডারে কোন হানে পাই নাই। নার্স ও হাসপাতালের লোকেরা অবহেলা করছে। হেরা যদি দায়িত্ব লইয়া খুঁজতো আগে তাইলে হয়তো বাজান আমার বাইচ্চা যাইত। পরে তো খুঁইজ্জা পাইয়া দেখি বাজান আমার নাই।’এ বিষয়ে জানতে চাইলে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হাবীবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ওই রোগী উচ্চ রক্তচাপ ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। তার হৃদরোগের সমস্যা ছিল। কেউ খেয়াল না করায় হয়তোবা হৃদরোগের কারণে গোসলখানায় গিয়ে তার মৃত্যু হয়। নার্সদের অবহেলার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রায়ই রোগীরা দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক ও নার্সদের না জানিয়ে হাসপাতাল থেকে চলে যান। এ ক্ষেত্রেও এমনটা ভেবে নিখোঁজের বিষয়টি হয়তো গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। যেহেতু হাসপাতালের গোসলখানা থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে সেক্ষেত্রে মনে হচ্ছে, দায়িত্ব যারা পালন করেছেন তাদের অবহেলা ছিল। এখন এই ঘটনার জন্য একটি তদন্ত কমিটি করা হবে। তদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর জড়িতদের বিষয়ে অবশ্যই বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এ ব্যাপারে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দীন আহম্মেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, আমাদের হাসপাতাল থেকে জানানোর পর গোসলখানা থেকে এক রোগীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখন বিষয়টি সম্পূর্ণই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। আমাদের কাছে এই বিষয়ে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি। লিখিত অভিযোগ পেলেই তদন্তের মাধ্যমে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

হাসপাতালের টয়লেট থেকে রোগীর মরদেহ উদ্ধার

আপডেট সময় ০৩:৩০:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ জুলাই ২০২৪
মাটি ও মানুষ ডেস্ক:

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের টয়লেট থেকে বাবু বেপারি (৪০) নামে এক রোগীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার (১৩ জুলাই) সকালে হাসপাতালের তৃতীয় তলার গোসলখানা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।বাবু বেপারি বরিশালের মুলাদি উপজেলার তয়কা সেলিমপুর এলাকার আলী বাপারীর ছেলে। গত বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দুপুরে শ্বাসকষ্টের সমস্যা হওয়ায় তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।এরপর ওইদিন রাত ১টার দিকে তিনি হাসপাতালের ওয়ার্ড থেকে নিখোঁজ হন।

সদর হাসপাতাল নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার (১১ জুলাই) বাবু বেপারি অসুস্থ হলে তাকে গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুরে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে হাসপাতালের তৃতীয় তলার মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল।ওই দিন দিবাগত রাত ১টার দিকে বাবু বেপারি টয়লেটে যাওয়ার কথা বলে বের হন। এরপর আর তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বাবুর সঙ্গে থাকা তার মা রোকেয়া বেগম (৮০) নার্সদের বিষয়টি জানালেও তারা খোঁজার বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। পরে তার মা রোকেয়া দিশেহারা হয়ে ছেলেকে খুজঁতে পরদিন শুক্রবার (১২ জুলাই) গ্রামে ফিরে যান।তখন খবর পেয়ে অন্য স্বজনরা সদর হাসপাতালে ছুটে যান। তারাও বাবু বেপারির কোনো সন্ধান না পেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানায়। এরপরও তারা কোনো সহায়তা পায়নি। এরপর আজ শনিবার (১৩ জুলাই) সকালে হাসপাতালের তৃতীয় তলায় মেডিসিন ওয়ার্ডের গোসলখানায় এক ব্যাক্তিকে পড়ে থাকতে দেখে নার্সদের জানান অন্য এক রোগী। তখন বাবুর স্বজনরা ওটা বাবুর লাশ বলে সনাক্ত করেন।দায়িত্বরত নার্সরা বিষয়টি পালং মডেল থানার পুলিশকে জানান। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

নিহত বাবুর মা রোকেয়া বেগম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘অসুস্থতার পর আমার পোলাডারে নিয়া এই হাসপাতালে আইছি। টয়লেটে যাওয়ার কথা কইয়া পোলাডারে আর পাই না। পোলাডারে খুইজ্জা না পাইয়া নার্সেগো জানাইছি। পাগলের মতো খুজ্জি পোলাডারে কোন হানে পাই নাই। নার্স ও হাসপাতালের লোকেরা অবহেলা করছে। হেরা যদি দায়িত্ব লইয়া খুঁজতো আগে তাইলে হয়তো বাজান আমার বাইচ্চা যাইত। পরে তো খুঁইজ্জা পাইয়া দেখি বাজান আমার নাই।’এ বিষয়ে জানতে চাইলে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হাবীবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ওই রোগী উচ্চ রক্তচাপ ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। তার হৃদরোগের সমস্যা ছিল। কেউ খেয়াল না করায় হয়তোবা হৃদরোগের কারণে গোসলখানায় গিয়ে তার মৃত্যু হয়। নার্সদের অবহেলার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রায়ই রোগীরা দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক ও নার্সদের না জানিয়ে হাসপাতাল থেকে চলে যান। এ ক্ষেত্রেও এমনটা ভেবে নিখোঁজের বিষয়টি হয়তো গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। যেহেতু হাসপাতালের গোসলখানা থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে সেক্ষেত্রে মনে হচ্ছে, দায়িত্ব যারা পালন করেছেন তাদের অবহেলা ছিল। এখন এই ঘটনার জন্য একটি তদন্ত কমিটি করা হবে। তদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর জড়িতদের বিষয়ে অবশ্যই বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এ ব্যাপারে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দীন আহম্মেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, আমাদের হাসপাতাল থেকে জানানোর পর গোসলখানা থেকে এক রোগীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখন বিষয়টি সম্পূর্ণই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। আমাদের কাছে এই বিষয়ে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি। লিখিত অভিযোগ পেলেই তদন্তের মাধ্যমে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।