ময়মনসিংহ , মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

৩৪ কোটি টাকার সম্পদের সন্ধান তোফায়েলের পালক পুত্রের

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের পালকপুত্র মইনুল হোসেন বিপ্লব ও তার স্ত্রী ইসরাত জাহান বিন্তির নামে প্রায় ৩৪ কোটি টাকার সম্পদ থাকার তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর মধ্যে বৈধ উৎসবিহীন প্রায় সোয়া ১২ কোটি টাকার সম্পদ থাকার অভিযোগে স্বামী-স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে সংস্থাটি।

দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিপ্লব মূলত তোফায়েল আহমেদের বড় ভাই আলী আশরাফের সন্তান। ছোটবেলা থেকেই তাকে নিজের সন্তান হিসেবে পরিচয় দিয়ে মানুষ করেন সাবেক এই মন্ত্রী। ক্ষমতার ছায়ায় বেড়ে ওঠা বিপ্লব ত্যাগী নেতাদের উপেক্ষা করে ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন।

দুদকের তদন্তে দেখা গেছে, বিপ্লব বিভিন্ন সময়ে আয়কর নথিতে ৭৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকার আয় দেখালেও তার অধিকাংশই ভুয়া। রেমিট্যান্স, মাছ চাষ, গাড়ি বিক্রি ইত্যাদি খাতে দেখানো আয়গুলোর পক্ষে কোনো বৈধ কাগজপত্র দিতে পারেননি তিনি। একাধিকবার নোটিশ দিয়েও ব্যর্থ হয় দুর্নীতির উৎস ব্যাখ্যায়।

তদন্ত অনুযায়ী, তার প্রকৃত বৈধ আয় থেকে জীবনযাত্রার ব্যয় বাদ দিলে ২১ কোটি ৯৪ লাখ টাকার হিসাব মিললেও, বিপ্লবের মোট সম্পদ ৩৩ কোটি টাকার বেশি। ফলে ১১ কোটি ৭৫ লাখ টাকার উৎসবিহীন সম্পদ পাওয়া গেছে তার নামে। একইভাবে তার স্ত্রী বিন্তির নামেও পাওয়া গেছে ৩৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ।

দুদক আইন অনুযায়ী, বিপ্লবের বিরুদ্ধে ২৭ (১) ধারায় এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ২৭ (২) ধারায় মামলা করেছেন কমিশনের সহকারী পরিচালক খোন্দকার কামরুজ্জামান। মামলার বর্ণনায় উল্লেখ করা হয়, ভবিষ্যতে আরও অবৈধ সম্পদের তথ্য মিললে তা তদন্ত প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

প্রসঙ্গত, বিপ্লবের স্ত্রী বিন্তি সাবেক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী একেএম শাহজাহান কামালের কন্যা। বর্তমানে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই আত্মগোপনে রয়েছেন।

ভোলা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম নবী আলমগীর বলেন, “এটা ভোলায় আওয়ামী আমলের বেপরোয়া লুটপাটের ছোট উদাহরণ মাত্র। বিপ্লবের আরও বহু সম্পদের খোঁজ মেলেনি এখনও। পৌরসভা থেকে গণপূর্ত—সব দপ্তরই ছিল তার দখলে। এর নেপথ্যে ছিলেন তার পালক পিতা তোফায়েল আহমেদ।”

এই বিষয়ে বিপ্লব বা তার স্ত্রীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও, তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

৩৪ কোটি টাকার সম্পদের সন্ধান তোফায়েলের পালক পুত্রের

আপডেট সময় ১২:৫৮:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের পালকপুত্র মইনুল হোসেন বিপ্লব ও তার স্ত্রী ইসরাত জাহান বিন্তির নামে প্রায় ৩৪ কোটি টাকার সম্পদ থাকার তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর মধ্যে বৈধ উৎসবিহীন প্রায় সোয়া ১২ কোটি টাকার সম্পদ থাকার অভিযোগে স্বামী-স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে সংস্থাটি।

দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, বিপ্লব মূলত তোফায়েল আহমেদের বড় ভাই আলী আশরাফের সন্তান। ছোটবেলা থেকেই তাকে নিজের সন্তান হিসেবে পরিচয় দিয়ে মানুষ করেন সাবেক এই মন্ত্রী। ক্ষমতার ছায়ায় বেড়ে ওঠা বিপ্লব ত্যাগী নেতাদের উপেক্ষা করে ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন।

দুদকের তদন্তে দেখা গেছে, বিপ্লব বিভিন্ন সময়ে আয়কর নথিতে ৭৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকার আয় দেখালেও তার অধিকাংশই ভুয়া। রেমিট্যান্স, মাছ চাষ, গাড়ি বিক্রি ইত্যাদি খাতে দেখানো আয়গুলোর পক্ষে কোনো বৈধ কাগজপত্র দিতে পারেননি তিনি। একাধিকবার নোটিশ দিয়েও ব্যর্থ হয় দুর্নীতির উৎস ব্যাখ্যায়।

তদন্ত অনুযায়ী, তার প্রকৃত বৈধ আয় থেকে জীবনযাত্রার ব্যয় বাদ দিলে ২১ কোটি ৯৪ লাখ টাকার হিসাব মিললেও, বিপ্লবের মোট সম্পদ ৩৩ কোটি টাকার বেশি। ফলে ১১ কোটি ৭৫ লাখ টাকার উৎসবিহীন সম্পদ পাওয়া গেছে তার নামে। একইভাবে তার স্ত্রী বিন্তির নামেও পাওয়া গেছে ৩৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ।

দুদক আইন অনুযায়ী, বিপ্লবের বিরুদ্ধে ২৭ (১) ধারায় এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ২৭ (২) ধারায় মামলা করেছেন কমিশনের সহকারী পরিচালক খোন্দকার কামরুজ্জামান। মামলার বর্ণনায় উল্লেখ করা হয়, ভবিষ্যতে আরও অবৈধ সম্পদের তথ্য মিললে তা তদন্ত প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

প্রসঙ্গত, বিপ্লবের স্ত্রী বিন্তি সাবেক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী একেএম শাহজাহান কামালের কন্যা। বর্তমানে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই আত্মগোপনে রয়েছেন।

ভোলা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম নবী আলমগীর বলেন, “এটা ভোলায় আওয়ামী আমলের বেপরোয়া লুটপাটের ছোট উদাহরণ মাত্র। বিপ্লবের আরও বহু সম্পদের খোঁজ মেলেনি এখনও। পৌরসভা থেকে গণপূর্ত—সব দপ্তরই ছিল তার দখলে। এর নেপথ্যে ছিলেন তার পালক পিতা তোফায়েল আহমেদ।”

এই বিষয়ে বিপ্লব বা তার স্ত্রীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও, তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।