রপুরের নকলায় এক কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় বিচারের দাবিতে থানা ঘেরাও এবং নকলা-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী, এলাকাবাসী ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।
রোববার দুপুরে নকলা উপজেলায় কিশোরীকে ধর্ষণের মামলায় প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তারের পর তাকে বিক্ষুব্ধদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবিতে এই ঘেরাও ও অবরোধ করেন তারা।
এ সময় স্লোগান দেওয়া হয় ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘রেপিস্টের আস্তানা, বাংলাদেশে থাকবে না’, ‘রেপিস্টের চামড়া, তুলে নিব আমরা’, ‘আমার বোন ধর্ষিত কেন, প্রশাসন জবাব দে’, ‘ধর্ষকের ফাঁসি চাই, দিতে হবে’।
ওই ঘটনায় শনিবার রাতে কিশোরীর মা বাদী হয়ে আশিক মিয়া (২০) নামে এক যুবকসহ ৩-৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন। আশিক উপজেলার টালকী ইউনিয়নের শালুয়া গ্রামের আবু সাইদের ছেলে।
পুলিশ ও কিশোরীর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরতে দেরি হওয়ায় পরিবারের লোকজন কিশোরীকে খুঁজতে বের হয়। পরে বাড়ির পাশে ভুট্টা খেতে অচেতন অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়।
মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে তাকে নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।বর্তমানে ওই কিশোরী সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় রোববার প্রধান আসামি আশিক মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পরে দুপুর দেড়টার দিকে নকলা উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি এসএম মাসুম ও রাইয়্যান আল মাহাদি অনন্তের নেতৃত্বে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, এলাকাবাসী ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা গ্রেপ্তার হওয়া আসামি আশিককে বিচারের জন্য তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
খবর পেয়ে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে নকলা থানায় আসেন শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আব্দুল করিম। তিনি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক খোরশেদুর রহমানসহ বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন।
প্রায় ৪০ মিনিট ধরে চলা বৈঠকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল করিম ধর্ষণ মামলার অপর আসামিদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের আশ্বাস দিলে থানা থেকে বেরিয়ে যান নেতৃবৃন্দ। পরে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে আন্দোলনকারীরা সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর করিম বলেন, কেউ আইন হাতে তুলে নেওয়ার সুযোগ নেই। ধর্ষণের বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে। আমরা অভিযুক্ত একজনকে গ্রেপ্তার করেছি। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান চলছে। আশা করি আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে পারবো।