জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ নিয়ে বিএনপির নেতারা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের সিন্ধান্ত নিয়েছে। দলটি মনে করছে, অন্তর্বর্তী সরকারের তরফ থেকে যেসব বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, তাতে নির্বাচন নিয়ে পরিষ্কার কোনো বার্তা নেই।
সোমবার (৭ এপ্রিল) রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ জানান, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্যে এরইমধ্যে সময় চাওয়া হয়েছে।
বিএনপি নেতারা মনে করেন, সরকারের উচিত নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংস্কারগুলো দ্রুত সম্পন্ন করা এবং চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। এছাড়া নির্বাচনকেন্দ্রিক যত সংস্কার প্রয়োজন, সেগুলো সরকার এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে করতে পারে। বাকি সংস্কার রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে পরবর্তী নির্বাচিত সংসদে করা যাবে।
এর আগে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা একাধিক বক্তব্যে জানান, চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে।
কিন্তু বিএনপি মনে করে, সরকারের তরফ থেকে নির্বাচনের বিষয়ে যে সময়সীমার কথা বলা হয়েছে, সে ব্যাপারে এখনো আশ্বস্ত নয় বিএনপি। তাদের মধ্যে নির্বাচন প্রলম্বিত হওয়ার নানা শঙ্কা এখনো রয়ে গেছে। আর এটি নির্বাচনের কোনো সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ না। কারণ, নির্বাচন নিয়ে সরকারের তরফ থেকে একেক সময় একেক কথা বলা হচ্ছে। ফলে নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার কী ভাবছে কিংবা তাদের অবস্থান কী, সেটা সুস্পষ্টভাবে জানতে শিগগিরই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।
জানা গেছে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরলে এই সাক্ষাৎ হবে। সেখানে নির্বাচন নিয়ে বিএনপির উদ্বেগ এবং সংশয় রয়েছে সেটা প্রধান উপদেষ্টাকে জানাবে দলটি। একই সঙ্গে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপির যে মতামত, সেটাও তারা তুলে ধরবে। চিকিৎসার জন্য সস্ত্রীক মির্জা ফখরুল গত রবিবার সিঙ্গাপুর গেছেন। সপ্তাহখানেক পর তার ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।
এছাড়া ওইদিন স্থায়ী কমিটির বৈঠকে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ বড় পরিসরে উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঢাকাসহ মহানগর ও জেলা পর্যায়ে বর্ণাঢ্য আয়োজনে দেশীয় সংস্কৃতি তুলে ধরা হবে। বৈঠকে ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর ইসরায়েলের বর্বরতা ও গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানানো হয়।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সেলিমা রহমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ (বীরবিক্রম) ও ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।