প্রসাদ দাস :
হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান: জনমনে আস্থা ও স্বস্তির ফিরে এসেছে এমটাই জানিয়েছেন ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মাইন উদ্দিন ও ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা সংস্থা( ডিবি) এর অফিসার ইনচার্জ মোঃ ফারুক হোসেন। তারা জানান বর্তমান সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে অনিয়ন্ত্রিত গতি ও হেলমেট পরিধান না করে মোটরসাইকেল চালনার ফলশ্রুতিতে অসংখ্য সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে। বিশেষ করে উঠতি বয়সী তরুণ ও অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরদের মধ্যে এই প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় অগণিত তাজা প্রাণ অকালেই ঝরে যাচ্ছে যা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। ময়মনসিংহ শহরের প্রাণকেন্দ্রে জয়নুল আবেদীন পার্ক ও সার্কিট হাউজ সংলগ্ন এলাকায় এই প্রবণতার একটি অনাকাঙ্ক্ষিত প্রতিফলন প্রায়শ:ই দেখা যেত। প্রচন্ড শব্দে অনিয়ন্ত্রিত গতি ও ভঙ্গিতে কিছু উঠতি বয়সী মোটরসাইকেল চালক এসব এলাকায় জনগণের শান্তি ব্যহত করার প্রয়াস পেত যার ফলে জনমনে বিরক্তি ও ভীতির সঞ্চার হত।
এই বাস্তবতাকে আমলে নিয়ে ময়মনসিংহ রেঞ্জের সম্মানিত ডিআইজি জনাব মো: শাহ আবিদ হোসেন, বিপিএম (বার) মহোদয় জেলা পুলিশের সকল ইউনিট বিশেষত: ট্রাফিক বিভাগ, থানা-ফাঁড়ি ও জেলা গোয়েন্দা শাখাকে একযোগে কাজ করার জন্য বিশেষ নির্দেশনা প্রদান করেন। উক্ত নির্দেশনার আলোকে সম্মানিত পুলিশ সুপার জনাব মাছুম আহাম্মদ ভূঞা, বিপিএম, পিপিএম মহোদয়ের তত্ত্বাবধানে এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) জনাব এম এম মোহাইমেনুর রশিদ, পিপিএম(সেবা) মহোদয়ের নেতৃত্বে জেলা ট্রাফিক বিভাগ, থানা এলাকার সকল ফাঁড়ি ও জেলা গোয়েন্দা শাখার সমন্বিত অভিযান পরিচালিত হয়। গতকাল ও আজ এই দুইদিনের পরিচালিত অভিযানে টাউনহল মোড়, সার্কিট হাউজ, ব্যাটবল চত্ত্বর ও সর্বোপরি জয়নুল আবেদীন পার্ক সংলগ্ন এলাকা এবং সমগ্র শহরব্যাপী ব্যাপক গণ-তৎপরতা ও আলোড়ন পরিলক্ষিত হয়েছে।
গতকাল ১৬/৪/২৪ ও আজ ১৭/৪/২৪ এই দুইদিনের এ ধরণের অনিয়ন্ত্রিত ও হেলমেটবিহীন মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে গৃহীত ব্যবস্থার সার্বিক চিত্র পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, জেলা ট্রাফিক বিভাগের পরিচালনায় এবং শহরস্থ ১ নং, ২ নং ও ৩ নং ফাঁড়ি এলাকার নিজ নিজ অধিক্ষেত্রে ও জেলা গোয়েন্দা শাখার সহযোগিতায় মোট ২২৬ টি মোটরসাইকেলকে অনিয়ন্ত্রিত ও হেলমেটবিহীন চলাচল এবং শব্দদূষণ ও সন্দেহজনক গতিবিধির জন্য তল্লাশীর আওতায় আনা হয়েছে। এর মধ্যে মোট ১৬০ টি মোটরসাইকেল আরোহীর বিরুদ্ধে সড়ক পরিবহন আইনের বিভিন্ন ধারায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। অপ্রাপ্তবয়স্ক চালক কর্তৃক চালিত ও বিভিন্নভাবে মোডিফায়েড বা পরিবর্তিত মোট ২৫ টি মোটরসাইকেলকে আটক করা হয়েছে এবং এসব আরোহীদের অভিভাবকবৃন্দের উপস্থিতিতে তাদের সন্তানাদিকে সতর্ক করে মুচলেকা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও, শহরের বিভিন্ন এলাকায় মোট ৩৯ টি মোটরসাইকেলের আরোহীদেরকে থামিয়ে তাদেরকে বাসা থেকে হেলমেট আনিয়ে কিংবা নতুন হেলমেট ক্রয় করিয়ে মাথায় পরিধার করানোর পর সতর্ক করে সংশোধনের সুযোগ প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি, জেলার অন্যান্য থানা এলাকায় একই ধরণের অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
সড়ক নিরাপত্তার এক অপরিহার্য কার্যক্রম হিসেবে জেলা পুলিশের এই অভিযান অব্যহত থাকবে। নগরবাসীকে কঠোরভাবে আইনের আওতায় আনার চেয়ে সকলকে সচেতন করার মাধ্যমে সাধারণ জনগণের নিরাপদে বাড়ি ফেরার নিশ্চয়তা বিধান করাই আমাদের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই হেলমেটবিহীন চলাচল না করার জন্য সকলকে অনুরোধ করা যাচ্ছে।