ময়মনসিংহ , বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

পরিবেশবান্ধব উদ্ভাবন নিয়ে কর্মশালা

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৪:৩৬:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫
  • ১৬ বার পড়া হয়েছে

দিনাজপুরের স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সাশ্রয়ী, টেকসই ও পরিবেশবান্ধব উদ্ভাবন নিয়ে আঞ্চলিক প্রচারণা এবং সেমিনার আয়োজন করেছে দিনাজপুর পৌরসভা।

গত সোমবার (১৮ আগস্ট) দিনাজপুর সদর উপজেলা মিলনায়তনে এ আয়োজনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর কার্যনির্বাহী সদস্য শাহ মোহাম্মদ মাহবুব (অতিরিক্ত সচিব)। এ সময় দিনাজপুর জেলার ৯টি পৌরসভার ৬০ জন কর্মকর্তা এবং ব্যাবসায়ীদের জন্যে ‘স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিষয়ে তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালারও’ উদ্বোধন করা হয়।

কর্মশালা আয়োজনে সহযোগিতা করছে স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রকল্প (প্রবৃদ্ধি)। এটিতে অর্থায়ন করেছে সুইজারল্যান্ড ও বাংলাদেশ সরকার। এ ছাড়া বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার বিভাগ ও সুইসকন্ট্যাক্ট বাংলাদেশ।

অনুষ্ঠানে দিনাজপুর পৌরসভার ধানের তুষের ছাই দিয়ে ইট উৎপাদন ও তার গুণগত মান পরীক্ষা, চালকলের বর্জ্য থেকে টেকসই সমাধান এবং স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সফলতা ইত্যাদি উপস্থাপন করা হয়। অংশগ্রহণকারীরা স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রক্রিয়া এবং দীর্ঘমেয়াদি ব্যবসায়িক পরিকল্পনা প্রণয়নের বিষয়ে ধারণা লাভ করেন। প্রবৃদ্ধি প্রকল্প দিনাজপুর পৌরসভার সহায়তায় এসজিএস বাংলাদেশ লিমিটেডের অধীনে স্থানীয় দুই শতাধিক চালকলের মধ্যে সাতটি চালকলকে পরিবেশবান্ধব আইএসও সনদ ১৪০০১:২০১৫ অর্জনে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। এটি স্থানীয় পর্যায়ে পরিবেশসম্মত ও টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাহ মোহাম্মদ মাহবুব বলেন, সরকারের বড় দায়িত্ব হলো এমন একটি সমান সুযোগের প্ল্যাটফর্ম ও অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে বেসরকারি খাত সমান সুযোগ পেয়ে তাদের সর্বোচ্চ সক্ষমতা দিয়ে কাজ করতে পারে। গবেষণা ও উন্নয়নের সক্ষমতা দেশের ভেতরেই গড়ে তুলতে শিক্ষা ও শিল্প—উভয়কেই সমন্বিতভাবে এগিয়ে নিতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জীবন কৃষ্ণ সাহা রায় বলেন, বিডার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা এবং সংস্কার ও সুপারিশের মাধ্যমে চ্যালেঞ্জগুলো অতিক্রম করা। জাতীয় পর্যায়ে সংস্কার বাস্তবায়ন সম্ভব হলেও স্থানীয় পর্যায়ে তা অনেক সময় সম্ভব হয় না। স্থানীয় পর্যায়ে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে প্রবৃদ্ধি প্রকল্পের কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়ন ছাড়া স্থানীয় অর্থনীতি শক্তিশালী করা যাবে না। শিল্পের নামে পরিবেশ ধ্বংস করলে উন্নয়ন কখনোই টেকসই হবে না।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রোকন উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রবৃদ্ধি প্রকল্প শুধু উদ্ভাবনই নয়; বরং স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নকে টেকসই করার কৌশলও সামনে এনেছে। এই উদ্যোগগুলো ভবিষ্যতে অন্য পৌরসভাগুলোর জন্যও অনুকরণীয় হবে।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞতা ও গবেষণালব্ধ তথ্য উপস্থাপন করেন দিনাজপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মিনারুল ইসলাম খান, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কামাল হোসেন এবং দিনাজপুর জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন।

ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে দিনব্যাপী স্থানীয় পণ্য ও বাণিজ্য মেলা এবং শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়। স্থানীয় প্রায় এক হাজারের বেশি মানুষ মেলায় অংশগ্রহণ করেন। মেলায় নারী উদ্যোক্তারা নিজস্ব পণ্য ও সেবা প্রদর্শনের পাশাপাশি ক্রেতাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ পান। এ ছাড়া মেলায় দিনাজপুর পৌরবাসী সরাসরি পৌরসভার বুথ থেকে ‘ওয়ান-স্টপ সার্ভিস সেন্টারসহ’ ট্রেড লাইসেন্স, হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ ইত্যাদি বিভিন্ন নাগরিক সেবা গ্রহণ করেন।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

পরিবেশবান্ধব উদ্ভাবন নিয়ে কর্মশালা

আপডেট সময় ০৪:৩৬:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫

দিনাজপুরের স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সাশ্রয়ী, টেকসই ও পরিবেশবান্ধব উদ্ভাবন নিয়ে আঞ্চলিক প্রচারণা এবং সেমিনার আয়োজন করেছে দিনাজপুর পৌরসভা।

গত সোমবার (১৮ আগস্ট) দিনাজপুর সদর উপজেলা মিলনায়তনে এ আয়োজনের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর কার্যনির্বাহী সদস্য শাহ মোহাম্মদ মাহবুব (অতিরিক্ত সচিব)। এ সময় দিনাজপুর জেলার ৯টি পৌরসভার ৬০ জন কর্মকর্তা এবং ব্যাবসায়ীদের জন্যে ‘স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিষয়ে তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালারও’ উদ্বোধন করা হয়।

কর্মশালা আয়োজনে সহযোগিতা করছে স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রকল্প (প্রবৃদ্ধি)। এটিতে অর্থায়ন করেছে সুইজারল্যান্ড ও বাংলাদেশ সরকার। এ ছাড়া বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার বিভাগ ও সুইসকন্ট্যাক্ট বাংলাদেশ।

অনুষ্ঠানে দিনাজপুর পৌরসভার ধানের তুষের ছাই দিয়ে ইট উৎপাদন ও তার গুণগত মান পরীক্ষা, চালকলের বর্জ্য থেকে টেকসই সমাধান এবং স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সফলতা ইত্যাদি উপস্থাপন করা হয়। অংশগ্রহণকারীরা স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রক্রিয়া এবং দীর্ঘমেয়াদি ব্যবসায়িক পরিকল্পনা প্রণয়নের বিষয়ে ধারণা লাভ করেন। প্রবৃদ্ধি প্রকল্প দিনাজপুর পৌরসভার সহায়তায় এসজিএস বাংলাদেশ লিমিটেডের অধীনে স্থানীয় দুই শতাধিক চালকলের মধ্যে সাতটি চালকলকে পরিবেশবান্ধব আইএসও সনদ ১৪০০১:২০১৫ অর্জনে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। এটি স্থানীয় পর্যায়ে পরিবেশসম্মত ও টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাহ মোহাম্মদ মাহবুব বলেন, সরকারের বড় দায়িত্ব হলো এমন একটি সমান সুযোগের প্ল্যাটফর্ম ও অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে বেসরকারি খাত সমান সুযোগ পেয়ে তাদের সর্বোচ্চ সক্ষমতা দিয়ে কাজ করতে পারে। গবেষণা ও উন্নয়নের সক্ষমতা দেশের ভেতরেই গড়ে তুলতে শিক্ষা ও শিল্প—উভয়কেই সমন্বিতভাবে এগিয়ে নিতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জীবন কৃষ্ণ সাহা রায় বলেন, বিডার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা এবং সংস্কার ও সুপারিশের মাধ্যমে চ্যালেঞ্জগুলো অতিক্রম করা। জাতীয় পর্যায়ে সংস্কার বাস্তবায়ন সম্ভব হলেও স্থানীয় পর্যায়ে তা অনেক সময় সম্ভব হয় না। স্থানীয় পর্যায়ে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে প্রবৃদ্ধি প্রকল্পের কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়ন ছাড়া স্থানীয় অর্থনীতি শক্তিশালী করা যাবে না। শিল্পের নামে পরিবেশ ধ্বংস করলে উন্নয়ন কখনোই টেকসই হবে না।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রোকন উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রবৃদ্ধি প্রকল্প শুধু উদ্ভাবনই নয়; বরং স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নকে টেকসই করার কৌশলও সামনে এনেছে। এই উদ্যোগগুলো ভবিষ্যতে অন্য পৌরসভাগুলোর জন্যও অনুকরণীয় হবে।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিষয়ে অভিজ্ঞতা ও গবেষণালব্ধ তথ্য উপস্থাপন করেন দিনাজপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মিনারুল ইসলাম খান, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কামাল হোসেন এবং দিনাজপুর জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন।

ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে দিনব্যাপী স্থানীয় পণ্য ও বাণিজ্য মেলা এবং শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়। স্থানীয় প্রায় এক হাজারের বেশি মানুষ মেলায় অংশগ্রহণ করেন। মেলায় নারী উদ্যোক্তারা নিজস্ব পণ্য ও সেবা প্রদর্শনের পাশাপাশি ক্রেতাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ পান। এ ছাড়া মেলায় দিনাজপুর পৌরবাসী সরাসরি পৌরসভার বুথ থেকে ‘ওয়ান-স্টপ সার্ভিস সেন্টারসহ’ ট্রেড লাইসেন্স, হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ ইত্যাদি বিভিন্ন নাগরিক সেবা গ্রহণ করেন।