চলতি বছরের শেষ নাগাদ বা সামনের বছরের শুরুতে দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিস্থিতি তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
রাজধানীতে শুরু হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী ‘২০তম জাতীয় ফার্নিচার মেলা-২০২৫’। ‘আমার দেশ, আমার আশা-দেশীয় ফার্নিচারে সাজাবো বাসা’ স্লোগানে আয়োজিত এই মেলা দেশের ফার্নিচার শিল্পের সবচেয়ে বড় আয়োজন।
আজ মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) রাজদর্শন হলে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে তিনি বলেন, বিগত সরকারের বুদ বুদ তৈরি করেছিল। যা কর্মসংস্থান না করলেও ব্যাংকের ব্রাঞ্চসহ কিছু অফিস বেড়েছিল। সঙ্গত কারণেই অর্থনীতিতে সংকোচনমূলক নীতি নিতে হয়েছে। নয়তো অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতো না। আশা করছি, চলতি বছরের শেষ নাগাদ বা সামনের বছরের শুরুতে বিনিয়োগবান্ধব পরিস্থিতি তৈরি হবে।
ফার্নিচারের ফাংশনাল ও এসথেটিক এট্রিবিউট হচ্ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় উদ্ভাবন হচ্ছে না। নীতিগতভাবে সরকার যত আধুনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার; তা করছে। ব্যবসায়ীদের দরকার উদ্ভাবন বাড়ানো। ফার্নিচার শিল্পের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নতুন নতুন বাজার খুঁজতে কাজ করছে। এই শিল্পে নান্দনিকতা ও রুচির বহিঃপ্রকাশ আছে। তা নিয়ে কাজ করতে হবে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, প্রাইসের জন্য নয়, উদ্ভাবনের জন্য ক্রেতারা আমাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। কিছু দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ বলেন, আয় বাড়াতে রফতানি বহুমুখীকরণের বিকল্প নেই। আমাদের সম্ভারে গার্মেন্টস পণ্যের আধিক্য। তবে কর্মসংস্থানে ফার্নিচার শিল্পের অবদান অনেক। প্রতিযোগিতা করছে নিজেদের মাঝে। কিন্তু তা নিয়ে যেতে হবে বিশ্ব বাজারে। সৃজনশীলতা, ডিজাইন ও মান বজায় রেখে রফতানি বাজার দখল করতে হবে।
রফতানি বহুমুখীকরণে সরকার এন্টি এক্সপার্ট ভায়াসড নীতি থেকে সরে আসছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, সামনে যে সব খাতে সুবিধা দেয়া হবে; তাতে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে ফার্নিচার শিল্পে। এসব পদক্ষেপে বিশ্ববাজারে ফার্নিচার পণ্য সুন্দর ও সুদৃঢ় অবস্থান তৈরি করতে পারবে।
বাংলাদেশ ফার্নিচার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কে এম আখতারুজ্জামান বলেন, রফতানি করতে গিয়ে ভিয়েতনাম, চীনের সঙ্গে প্রতিযোগীতায় পারছিলাম না। ওরা ভর্তুকি পেত। এখন আমরাও পাচ্ছি। আশা করি আমাদের রফতানি বাড়বে। আগামী ৫ বছরে আমরা শীর্ষে থাকতে পারব।
ফার্নিচার মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশীয় ফার্নিচার শিল্প দেশের শতভাগ চাহিদা পূরণ করছে এবং উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পণ্য বিদেশে রফতানি হচ্ছে। এবারের মেলার মূল লক্ষ্য হলো দেশীয় ফার্নিচার শিল্পের বিকাশ ঘটানোর পাশাপাশি রফতানি বাজার আরও সম্প্রসারণ করা। এবারের মেলায় মোট ৪৮টি শীর্ষস্থানীয় ফার্নিচার কোম্পানি অংশ নিচ্ছে। কনভেনশন সেন্টারটির গুলনকশা (হল-১), পুষ্পগুচ্ছ (হল-১) এবং রাজদর্শন (হল-৩) হলে পাঁচ দিনের এই মেলা হবে।
অংশগ্রহণকারীরা সর্বাধুনিক নকশা ও পণ্যের প্রদর্শনী করবে ২৭৮টি স্টলে। অংশগ্রহণকারী উল্লেখযোগ্য ব্র্যান্ডের মধ্যে রয়েছে- আখতার, হাতিল, ব্রাদার্স, নাদিয়া, আয়ত, ওমেগা, জেএমজি, নাভানা, অ্যাথেনাস্, পারটেক্স, রিগাল ও লেগাসি। মেলার সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে ডিজাইন অ্যান্ড টেকনোলজি সেন্টার। পার্টনার হিসেবে থাকছে অ্যাকসেস ইনফোটেক।