ময়মনসিংহ , মঙ্গলবার, ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
৯৭ শতাংশ মুসলিম ভোটার মামদানিকে ভোট দিয়েছেন ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আটক ফেসবুকে ‘১৩ তারিখ ঢাকা যাওয়ার’ পোস্ট, তারেক রহমান যদি চাইতেন ৫ আগস্টই ক্ষমতা নিতে পারতেন বললেন আব্দুস সালাম ১০ম দিনের আপিল শুনানি শুরু তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে ঝিনাইদহে মধ্যরাতে মৃদুস্বরে স্লোগান দিয়ে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের মশাল মিছিল আওয়ামী লীগ এখন মরা লাশ, আগামী ৫০ বছরেও ফিরবে না বললেন নুরুল হক নুর আ. লীগ, জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলকে ছাড়া আমি নির্বাচনে যাব না বললেন কাদের সিদ্দিকী ৩৩ হাজার ভোল্টেজের ১৭ কিলোমিটার বৈদ্যুতিক তার চুরি পার্বতীপুরে মারা গেছেন বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা ধর্মেন্দ্র বাসে আগুন, ভেতরেই পুড়ে মারা গেলেন চালক ফুলবাড়ীয়ায়
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

‘পুলিশের হামলার’ মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদ প্রাথমিক শিক্ষকদের

দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরতদের ওপর ‘পুলিশের হামলায়’ মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা।

গত শনিবার (৮ নভেম্বর) রাত ১২টার পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচিতে তারা মোমবাতি জ্বালিয়ে হামলার নিন্দা জানান। একইসঙ্গে ‘আটকদের মুক্তি’ ও আহতদের সুচিকিৎসার দাবি জানান তারা।

প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘গ্রেপ্তার শিক্ষকদের মুক্তি ও আহতদের সুচিকিৎসা এবং পুলিশি হামলার প্রতিবাদে আমাদের এ কর্মসূচি। হামলায় আমাদের দেড় শতাধিক শিক্ষক আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও পিজি হাসপাতালে আছেন।

আমরা হামলার প্রতিবাদে ও আটকদের মুক্তির দাবিতে রোববার থেকে সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি পালন করব। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অবস্থান কর্মসূচি চলবে।’

দশম গ্রেডে বেতন ছাড়াও প্রাথমিকের শিক্ষকদের বাকি দুই দাবি হল- চাকরির ১০ ও ১৬ বছরে উচ্চতর গ্রেড পাওয়া নিয়ে জটিলতার নিরসন এবং শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা।

এদিকে কর্মসূচি ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার সময় আন্দোলনরত পাঁচজন শিক্ষককে আটক করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন শিক্ষক নেতা মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ।

তিনি বলেন, ‘পুলিশের সমঝোতার প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করে শাহবাগ থানায় অনশনে বসেছেন থানা হেফাজতে আটক থাকা প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, মো. আব্দুল কাদের, মো. নুরুল ইসলাম (লিটন), মো. শরিফুল ইসলাম ও মো. সোহেল। আমরা দ্রুত তাদের মুক্তি চাই।’

তবে আটক ও অনশনের বিষয়টি অস্বীকার করেছে পুলিশ।

শাহবাগ থানার ওসি খালেদ মনসুর রাত সোয়া ১২টায় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘শিক্ষকরা কেউ আটক নেই। থানায় ৫ জন আছেন, তাদের ব্যাপারে সকালে সিদ্ধান্ত হবে। কেউ অনশনে নেই। থানায় এমন কিছু হচ্ছে না।’

শনিবার সকাল থেকে শহীদ মিনারে বেতনক্রম দশম গ্রেডে উন্নতি করানসহ তিন দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকরা। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে তারা ‘কলম বিরতি কর্মসূচি’ পালনে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে এগিয়ে যাওয়া শুরু করেন। তারা ৪টার দিকে শাহবাগ থানার সামনে তাদের আটকে দেয় পুলিশ।

এসময় পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান, লাঠি চার্জ, কাঁদুনে গ্যাসে কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায় শিক্ষকদের। অনেক শিক্ষক আহত হওয়ার পাশাপাশি কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করে শিক্ষক নেতারা।

পুলিশের বাধার মুখে শহীদ মিনারে ফিরে এসে সন্ধ্যা রোববার থেকে লাগাতার কর্মবিরতির কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষকরা।

দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৭টি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, এসব বিদ্যালয়ে ৩ লাখ ৮৪ হাজার শিক্ষক কর্মরত আছেন।

গত ২৪ এপ্রিল ১১তম গ্রেডে বেতন পাওয়া প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে এবং ১৩তম গ্রেডে বেতন পাওয়া শিক্ষকদের বেতন ১২তম গ্রেডে উন্নিত করার উদ্যোগ নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে এ উদ্যোগে সন্তুষ্ট নন সহকারী শিক্ষকরা।

পরে শনিবার থেকে দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দাবিতে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেয় ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’।

এদিকে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের আরেকাংশ ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের’ ব্যানারে একাদশ গ্রেডে বেতন, উচ্চতর গ্রেড নিয়ে জটিলতা নিরসন ও শতভাগ পদোন্নতি নিশ্চিত করতে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত সরকারকে সময় বেঁধে দিয়েছেন।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

৯৭ শতাংশ মুসলিম ভোটার মামদানিকে ভোট দিয়েছেন

‘পুলিশের হামলার’ মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদ প্রাথমিক শিক্ষকদের

আপডেট সময় ১০:০৪:১৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৫

দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরতদের ওপর ‘পুলিশের হামলায়’ মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা।

গত শনিবার (৮ নভেম্বর) রাত ১২টার পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচিতে তারা মোমবাতি জ্বালিয়ে হামলার নিন্দা জানান। একইসঙ্গে ‘আটকদের মুক্তি’ ও আহতদের সুচিকিৎসার দাবি জানান তারা।

প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘গ্রেপ্তার শিক্ষকদের মুক্তি ও আহতদের সুচিকিৎসা এবং পুলিশি হামলার প্রতিবাদে আমাদের এ কর্মসূচি। হামলায় আমাদের দেড় শতাধিক শিক্ষক আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও পিজি হাসপাতালে আছেন।

আমরা হামলার প্রতিবাদে ও আটকদের মুক্তির দাবিতে রোববার থেকে সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি পালন করব। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অবস্থান কর্মসূচি চলবে।’

দশম গ্রেডে বেতন ছাড়াও প্রাথমিকের শিক্ষকদের বাকি দুই দাবি হল- চাকরির ১০ ও ১৬ বছরে উচ্চতর গ্রেড পাওয়া নিয়ে জটিলতার নিরসন এবং শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা।

এদিকে কর্মসূচি ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার সময় আন্দোলনরত পাঁচজন শিক্ষককে আটক করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন শিক্ষক নেতা মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ।

তিনি বলেন, ‘পুলিশের সমঝোতার প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করে শাহবাগ থানায় অনশনে বসেছেন থানা হেফাজতে আটক থাকা প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, মো. আব্দুল কাদের, মো. নুরুল ইসলাম (লিটন), মো. শরিফুল ইসলাম ও মো. সোহেল। আমরা দ্রুত তাদের মুক্তি চাই।’

তবে আটক ও অনশনের বিষয়টি অস্বীকার করেছে পুলিশ।

শাহবাগ থানার ওসি খালেদ মনসুর রাত সোয়া ১২টায় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘শিক্ষকরা কেউ আটক নেই। থানায় ৫ জন আছেন, তাদের ব্যাপারে সকালে সিদ্ধান্ত হবে। কেউ অনশনে নেই। থানায় এমন কিছু হচ্ছে না।’

শনিবার সকাল থেকে শহীদ মিনারে বেতনক্রম দশম গ্রেডে উন্নতি করানসহ তিন দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকরা। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে তারা ‘কলম বিরতি কর্মসূচি’ পালনে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে এগিয়ে যাওয়া শুরু করেন। তারা ৪টার দিকে শাহবাগ থানার সামনে তাদের আটকে দেয় পুলিশ।

এসময় পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান, লাঠি চার্জ, কাঁদুনে গ্যাসে কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায় শিক্ষকদের। অনেক শিক্ষক আহত হওয়ার পাশাপাশি কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করে শিক্ষক নেতারা।

পুলিশের বাধার মুখে শহীদ মিনারে ফিরে এসে সন্ধ্যা রোববার থেকে লাগাতার কর্মবিরতির কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষকরা।

দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৭টি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, এসব বিদ্যালয়ে ৩ লাখ ৮৪ হাজার শিক্ষক কর্মরত আছেন।

গত ২৪ এপ্রিল ১১তম গ্রেডে বেতন পাওয়া প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে এবং ১৩তম গ্রেডে বেতন পাওয়া শিক্ষকদের বেতন ১২তম গ্রেডে উন্নিত করার উদ্যোগ নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে এ উদ্যোগে সন্তুষ্ট নন সহকারী শিক্ষকরা।

পরে শনিবার থেকে দশম গ্রেডে বেতনসহ তিন দাবিতে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেয় ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’।

এদিকে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের আরেকাংশ ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের’ ব্যানারে একাদশ গ্রেডে বেতন, উচ্চতর গ্রেড নিয়ে জটিলতা নিরসন ও শতভাগ পদোন্নতি নিশ্চিত করতে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত সরকারকে সময় বেঁধে দিয়েছেন।