ময়মনসিংহ , মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
প্রধান উপদেষ্টা ও অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর সন্তুষ্ট ৭০ শতাংশ মানুষ জানিয়েছে আইআরআই জরিপ আইন উপদেষ্টার সংস্কারের অগ্রগতি নিয়ে নতুন বার্তা নরেন্দ্র মোদিকে বিএনপি ধন্যবাদ জানালো শাকিব খানের পরামর্শ অপু বিশ্বাস মেনে চলেন গান ছেড়ে ভিক্ষার নির্দেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ভয়ে রোজগার বন্ধ অন্ধ হেলালের স্বর্ণের ভরিতে বাড়ল ১৫৭৫ টাকা, বিক্রি হবে নতুন দামে আজ থেকে আজ বাংলাদেশ–আয়ারল্যান্ড সিরিজের ফাইনাল : একাদশে এক পরিবর্তনের ইঙ্গিত ‘র‍্যাডিক্যাল অপটিমিজম’: সফর শেষে ডুয়া লিপা আবেগাপ্লুত ঢাকার আকাশ মেঘাচ্ছন্ন, কুয়াশার সঙ্গে বেড়েছে ঢাকার তাপমাত্রা নাগরিকত্ব দিচ্ছে যে দেশ অতীতের ক্ষত নিরাময়ে কিছু বিশেষ মানুষকে
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

গান ছেড়ে ভিক্ষার নির্দেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ভয়ে রোজগার বন্ধ অন্ধ হেলালের

  • ডিজিটাল রিপোর্ট
  • আপডেট সময় ১০:২১:০১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ১৯ বার পড়া হয়েছে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিল্পী হেলাল মিয়ার (৬৫) জীবনের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক এখন গান নয়, বরং গান বন্ধ হয়ে যাওয়া। প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে গান গেয়ে পরিবার চালাচ্ছেন তিনি। কিন্তু একদল লোকের হুমকির পর গত ছয় দিন ধরে বন্ধ হয়ে গেছে তাদের একমাত্র জীবিকার পথ। ফলে পুরো পরিবার এখন নিদারুণ সংকটে।

হেলাল মিয়া জন্ম থেকেই দৃষ্টিশক্তিহীন। শুধু তিনিই নয় তার ১৩ সদস্যের বড় পরিবারে নয়জনই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। স্ত্রী, চার ছেলে, এক মেয়ে এবং তিন নাতি-নাতনি তাদের অধিকাংশেরই চোখে আলো নেই। কিন্তু তারা কখনো ভিক্ষা করেননি; বরং গানকে বেছে নিয়েছেন সম্মানের পেশা হিসেবে।

কিন্তু গত বুধবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে গানের আসর চলাকালে কয়েকজন যুবক সেখানে এসে হেলাল মিয়াদের গান বন্ধ করে দিতে বলেন। তারা নির্দেশ দেন গান ছেড়ে ভিক্ষাবৃত্তি করতে। নাহলে বাদ্যযন্ত্র ভেঙে ফেলবেন তারা। সেই ভয়ে আর গান গাইতে বের হননি তিনি।

তিনি আরও জানান, এর আগেও দু’বার তাদের একইভাবে বাধা দেওয়া হয়েছিল। তবে এবারের ঘটনাটি তাদের আতঙ্ক আরও বাড়িয়েছে।
পরিবারের সবাই যখন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী, তখন বাইরে বের হওয়াটাই তাদের জন্য চ্যালেঞ্জ। তার ওপর গান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা পুরোপুরি অসহায় হয়ে পড়েছেন। এখন শুধু ভয় নয়—উদ্বেগও কাজ করছে, কারণ অন্য কোনো কাজ তাদের মাধ্যমে সম্ভব নয়। হাত পেতে টাকা চাইতে চান না তারা; সম্মানের সঙ্গে গান গেয়েই জীবন চালাতে চান।

ঘটনা নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি বলেন, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। অন্ধ এই পরিবারটিকে আমি ব্যক্তিগতভাবেও সহায়তা করেছি। তাদের হুমকি দেওয়ার কথা শুনে কষ্ট পেয়েছি। আমি তাদের আবারও মুক্তমঞ্চে বসে গান গাইতে বলেছি।

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. ওবায়দুর রহমান জানান, এই পরিবারের প্রতি বাধা দেওয়ার কোনো অভিযোগ পুলিশের কাছে আসেনি। কেউ জানালে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হেলাল মিয়ার বয়স ৬৫ ছাড়ালেও গানই তার জীবনের অবলম্বন। ছোটবেলায় স্থানীয় শিল্পী শাহনূর শাহের কাছে গান শিখে হাটবাজারে গান করেই জীবন শুরু করেছিলেন তিনি। পরে তার সন্তানরাও গান শিখে গানের দল গড়ে তোলেন।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

প্রধান উপদেষ্টা ও অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর সন্তুষ্ট ৭০ শতাংশ মানুষ জানিয়েছে আইআরআই জরিপ

গান ছেড়ে ভিক্ষার নির্দেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ভয়ে রোজগার বন্ধ অন্ধ হেলালের

আপডেট সময় ১০:২১:০১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিল্পী হেলাল মিয়ার (৬৫) জীবনের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক এখন গান নয়, বরং গান বন্ধ হয়ে যাওয়া। প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে গান গেয়ে পরিবার চালাচ্ছেন তিনি। কিন্তু একদল লোকের হুমকির পর গত ছয় দিন ধরে বন্ধ হয়ে গেছে তাদের একমাত্র জীবিকার পথ। ফলে পুরো পরিবার এখন নিদারুণ সংকটে।

হেলাল মিয়া জন্ম থেকেই দৃষ্টিশক্তিহীন। শুধু তিনিই নয় তার ১৩ সদস্যের বড় পরিবারে নয়জনই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। স্ত্রী, চার ছেলে, এক মেয়ে এবং তিন নাতি-নাতনি তাদের অধিকাংশেরই চোখে আলো নেই। কিন্তু তারা কখনো ভিক্ষা করেননি; বরং গানকে বেছে নিয়েছেন সম্মানের পেশা হিসেবে।

কিন্তু গত বুধবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে গানের আসর চলাকালে কয়েকজন যুবক সেখানে এসে হেলাল মিয়াদের গান বন্ধ করে দিতে বলেন। তারা নির্দেশ দেন গান ছেড়ে ভিক্ষাবৃত্তি করতে। নাহলে বাদ্যযন্ত্র ভেঙে ফেলবেন তারা। সেই ভয়ে আর গান গাইতে বের হননি তিনি।

তিনি আরও জানান, এর আগেও দু’বার তাদের একইভাবে বাধা দেওয়া হয়েছিল। তবে এবারের ঘটনাটি তাদের আতঙ্ক আরও বাড়িয়েছে।
পরিবারের সবাই যখন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী, তখন বাইরে বের হওয়াটাই তাদের জন্য চ্যালেঞ্জ। তার ওপর গান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা পুরোপুরি অসহায় হয়ে পড়েছেন। এখন শুধু ভয় নয়—উদ্বেগও কাজ করছে, কারণ অন্য কোনো কাজ তাদের মাধ্যমে সম্ভব নয়। হাত পেতে টাকা চাইতে চান না তারা; সম্মানের সঙ্গে গান গেয়েই জীবন চালাতে চান।

ঘটনা নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি বলেন, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। অন্ধ এই পরিবারটিকে আমি ব্যক্তিগতভাবেও সহায়তা করেছি। তাদের হুমকি দেওয়ার কথা শুনে কষ্ট পেয়েছি। আমি তাদের আবারও মুক্তমঞ্চে বসে গান গাইতে বলেছি।

এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. ওবায়দুর রহমান জানান, এই পরিবারের প্রতি বাধা দেওয়ার কোনো অভিযোগ পুলিশের কাছে আসেনি। কেউ জানালে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হেলাল মিয়ার বয়স ৬৫ ছাড়ালেও গানই তার জীবনের অবলম্বন। ছোটবেলায় স্থানীয় শিল্পী শাহনূর শাহের কাছে গান শিখে হাটবাজারে গান করেই জীবন শুরু করেছিলেন তিনি। পরে তার সন্তানরাও গান শিখে গানের দল গড়ে তোলেন।