সাম্প্রতিক সময়ে লেবানন ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার পটভূমিতে দীর্ঘ চার দশক পর দেশ দুটি সরাসরি আলোচনার টেবিলে বসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ কমিটির এই বৈঠক নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
গত বুধবার (৩ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে বৈরুত বলেছে যে, এটি শান্তি আলোচনা নয়, বরং শত্রুতা কমানো ও লেবানিজ ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলের সেনাদের প্রত্যাহার নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা।
প্রধানমন্ত্রী সালাম আরও বলেন, লেবানন ২০০২ সালের আরব শান্তি উদ্যোগের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ আছে। সেই উদ্যোগে ইসরায়েলের ১৯৬৭ সালে দখল করা ভূখণ্ড থেকে সম্পূর্ণ সরে দাঁড়ানোর বিনিময়ে পরিস্থিতি পূর্ণ স্বাভাবিকীকরণের প্রস্তাব আছে এবং লেবানন কোনও পৃথক শান্তি চুক্তি করতে চায় না।
ইসরায়েলি সরকারের মুখপাত্র শোশ বেদরোশিয়ান এই বৈঠকটিকে ঐতিহাসিক ঘটনা বলে মন্তব্য করেন এবং বলেন, ‘প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য এখন বিশেষ সুযোগ তৈরি হয়েছে।’ইসরায়েলি সরকারের মুখপাত্র শোশ বেদরোশিয়ান। ছবি: ফেসবুক
গত কয়েক মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্র দুই পক্ষকেই কমিটির কাজের পরিধি ২০২৪ সালের যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণের বাইরে বাড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছিল। গত মাসে বৈরুতে ইসরায়েলি হামলায় নতুন করে বড় ধরনের উত্তেজনার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে এবং এই পরিস্থিতিতেই সর্বশেষ এই বৈঠকটি হলো। ইসরায়েল নিয়মিত লেবাননে বিমান হামলা চালাচ্ছে, তাদের দাবি এসব হামলা হিজবুল্লাহ সদস্য ও স্থাপনাকে লক্ষ্য করে চালানো হচ্ছে।
যুদ্ধবিরতি অনুযায়ী লেবানিজ ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলি সেনাদের পুরোপুরি সরে যাওয়ার কথা থাকলেও দক্ষিণাঞ্চলীয় পাঁচটি এলাকায় তারা এখনো সেনা মোতায়েন রেখেছে। লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক চাপে রয়েছে, তবে তারা এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলছে, এটি লেবাননকে দুর্বল করার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলের যৌথ প্রচেষ্টা।
গত সপ্তাহে দলের নেতা নাইম কাসেম অভিযোগ করেন, ইসরায়েলি হামলা থেকে দক্ষিণ লেবাননকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে রাষ্ট্র। কাসেম আরও বলেন, দলের সামরিক প্রধানকে বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলায় হত্যা করা হয়েছে এবং এটির জবাব দেওয়ার অধিকার তাদের আছে। তারা ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনাকে ফাঁদ হিসেবেও বর্ণনা করেছে।
অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালাম বলছেন, হিজবুল্লাহকে অস্ত্র ছাড়তেই হবে, এটি রাষ্ট্র নির্মাণের অপরিহার্য উপাদান। তিনি মনে করেন, এই সংগঠনের অস্ত্র ‘ইসরায়েলকে ঠেকাতে পারেনি, লেবাননকেও রক্ষা করতে পারেনি।’ লেবানন আর এমন কোনও উসকানিতে জড়াবে না যা দেশে নতুন যুদ্ধ ডেকে আনতে পারে। তিনি গাজার বিষয়ে অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন।

ডিজিটাল ডেস্ক 
























