কক্সবাজারে ছয় বছরের শিশুকে অপহরণের পর মাটিতে পুঁতে মুক্তিপণ দাবির ঘটনায় দুই রোহিঙ্গা যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন নুর ইসলাম (২১) ও মো. সালাম (২০। তাঁরা দুজন সম্পর্কে ভাই। গতকাল সোমবার বিকেলে জেলা পুলিশ ও এপিবিএনের যৌথ অভিযানে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের এফ ব্লক থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার নুর ইসলাম ও মো. সালাম কুতুপালং রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের এফ ব্লকের মৃত নুরুল হকের ছেলে। অহরণের শিকার হওয়া শিশুটির নাম মোহাম্মদ আরাকান (৬)। সে থাইংখালী-১৯ নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের সি ১৫ ব্লকের বাসিন্দা আবদুর রহমান ও আনোয়ারা বেগমের ছেলে। ৮ জানুয়ারি আরাকান ক্যাম্পের খেলার মাঠ থেকে নিখোঁজ হয়। এরপর ১০ জানুয়ারি তার মা-বাবা অপহরণকারীদের কাছ থেকে একটি ভিডিও বার্তা পান।
শিশুকে অপহরণের বিষয়টি নিয়ে ১৫ জানুয়ারি ‘ভিডিও ভাইরাল, শিশুকে গর্তে পুঁতে মুক্তিপণ দাবি’ শিরোনামে প্রথম আলোতে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। ওই প্রতিবেদনে আরাকানের বাবা আবদুর রহমান দাবি করেন, ‘অপহরণকারীরা টাকার জন্য ছেলেকে মাটিতে পুঁতে রেখে ভিডিও করে। আমার স্ত্রীর কানের দুল বিক্রি করে প্রথমে ৫০ হাজার টাকা পাঠাই। এরপরও তাকে না ছাড়ায় আশ্রয়শিবিরের আত্মীয়স্বজনসহ অন্য লোকদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে আরও ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা পাঠাই।’
জানতে চাইলেও উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফ হোসেন বলেন, অপহৃত শিশুর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ করা হয়েছিল। পুলিশ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া চলমান।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ১৫ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যায়, শিশুটির চোখেমুখে ভয়। গলা পর্যন্ত মাটিতে ডুবে আছে। চাপা দেওয়া হয়েছে শরীরের ওই অংশ। এ অবস্থায় রোহিঙ্গা ভাষায় শিশুটি তার বাবার উদ্দেশে বলছিল, ‘আব্বা তরাতরি চেষ্টা গর। মরে গাতত গলায় পিল্লে। টিয়া দে। (বাবা দ্রুত চেষ্টা করো, আমাকে গর্তে পুঁতে ফেলেছে, টাকা দাও)।’