ময়মনসিংহ , বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

আরাকান আর্মি ২২ দিনে ৫৬ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে, টেকনাফে আতঙ্ক

  • স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট সময় ১২:২৬:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫
  • ১১ বার পড়া হয়েছে

মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে টানা ১১ মাসের সংঘাতের পর গত বছরের আগস্টে রাখাইনের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মংডু শহর নিয়ন্ত্রণ নেয় আরাকান আর্মি। এরপর থেকে বঙ্গোপসাগরের জলসীমা নিয়ন্ত্রণে নেয় তারা, এতে ঘটছে অপহরণের ঘটনা।

সম্প্রতি সময়ে সাগরে আরাকান আর্মির দৌরাত্ম্য আরও বেড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এই পরিস্থিতিতে গত ২২ দিনে সাতটি ট্রলারের ৫৬ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিয়ানমারের রাখাইন সীমান্ত আরাকান আর্মির দখলে যাওয়ার পর থেকে নাফনদী ও সাগরে তাদের তৎপরতা বেড়েই গেছে। এতে প্রায় সময় আরাকান আর্মির হাতে আটক হচ্ছে মাছ ধরতে যাওয়া বাংলাদেশি জেলেরা। তার মধ্যে চলতি মাসের ৫ আগস্ট থেকে ২৭ আগস্ট পযর্ন্ত ৭ টি ট্রলার ৫৬ জেলেকে আরাকান আর্মি আটক করেছে। এই পরিস্থিতিতে আরাকান আর্মি হাতে আটক হওয়া জেলেদের খবর না পেয়ে দিশেহারা পরিবার। বিভিন্ন মাধ্যমে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। তবে তাদের কাছ থেকে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রিত কিছু পেজের আটককৃতদের ছবি প্রকাশ করছে আরাকান আর্মি। এতে পরিবারগুলো আটক হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, মাছ ধরে ঘর-সংসারের খরচ যারা জোগাড় যারা করতেন তারা এখন নেই, এক দিকে স্বামী, সন্তান নেই, অপরদিকে সংসারে চলছে দুঃখ দুর্দশা। এরকম কঠিন অবস্থায় সংসার চালানো কষ্ট হচ্ছে।

শাহ পরীরদ্বীপ মাঝের পাড়া হাবিবা বেগম বলেন, গত ২৩ আগস্ট আরাকান আর্মি ১২ জন ধরে নিয়ে গেছে। সেখানে আমার স্বামী মো. আমিনও রয়েছে। এখনও পযর্ন্ত তারা কেউ বাড়ি ফিরতে পারেনি। আমার সংসারে তিন সন্তান নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করছি। মেয়েদের পড়াশোনা ও সংসার খরচ জোগাড় করতে কষ্ট হচ্ছে। কষ্ট আর আতঙ্ক নিয়ে আমরা দিন কাটাচ্ছি। আমার স্বামীকে ফেরত চাই।শাহ পরীর দ্বীপ ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাঝি বলেন, নাফ নদী ও সাগর থেকে আগস্ট মাসে ৭টি ট্রলার ও ৫৬ জেলেকে আরাকান আর্মি ধরে নিয়ে গেছে। এ বিষয় আমরা কোস্ট গার্ড, বিজিবি ও উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। ২২ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও আটকরা ছাড়া পায়নি। নাফ নদী ও সাগরে আরাকান আর্মির অপতৎপরতা বাড়ছে, এটা জেলেদের জন্য আতঙ্কের।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহেসান উদ্দিন বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে জেনেছি প্রায় সময় সাগর থেকে মাছ ধরে ফেরার পথে আরাকান আর্মির হাতে জেলেরা আটক হচ্ছেন। বিশেষ করে আগস্ট মাসে ৫৬ জন জেলে আটকের বিষয়টি জানার পরে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, শাহ পরীরদ্বীপ নাইক্ষ্যংদিয়া  এলাকায় বার বার যে সমস্যা হচ্ছে। তবে জেলেদেরকে এসব এলাকা দিয়ে চলাচল করতে সর্তকতা বজায় রাখতে হবে এবং সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

আরাকান আর্মি ২২ দিনে ৫৬ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে, টেকনাফে আতঙ্ক

আপডেট সময় ১২:২৬:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫

মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে টানা ১১ মাসের সংঘাতের পর গত বছরের আগস্টে রাখাইনের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মংডু শহর নিয়ন্ত্রণ নেয় আরাকান আর্মি। এরপর থেকে বঙ্গোপসাগরের জলসীমা নিয়ন্ত্রণে নেয় তারা, এতে ঘটছে অপহরণের ঘটনা।

সম্প্রতি সময়ে সাগরে আরাকান আর্মির দৌরাত্ম্য আরও বেড়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এই পরিস্থিতিতে গত ২২ দিনে সাতটি ট্রলারের ৫৬ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিয়ানমারের রাখাইন সীমান্ত আরাকান আর্মির দখলে যাওয়ার পর থেকে নাফনদী ও সাগরে তাদের তৎপরতা বেড়েই গেছে। এতে প্রায় সময় আরাকান আর্মির হাতে আটক হচ্ছে মাছ ধরতে যাওয়া বাংলাদেশি জেলেরা। তার মধ্যে চলতি মাসের ৫ আগস্ট থেকে ২৭ আগস্ট পযর্ন্ত ৭ টি ট্রলার ৫৬ জেলেকে আরাকান আর্মি আটক করেছে। এই পরিস্থিতিতে আরাকান আর্মি হাতে আটক হওয়া জেলেদের খবর না পেয়ে দিশেহারা পরিবার। বিভিন্ন মাধ্যমে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। তবে তাদের কাছ থেকে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রিত কিছু পেজের আটককৃতদের ছবি প্রকাশ করছে আরাকান আর্মি। এতে পরিবারগুলো আটক হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, মাছ ধরে ঘর-সংসারের খরচ যারা জোগাড় যারা করতেন তারা এখন নেই, এক দিকে স্বামী, সন্তান নেই, অপরদিকে সংসারে চলছে দুঃখ দুর্দশা। এরকম কঠিন অবস্থায় সংসার চালানো কষ্ট হচ্ছে।

শাহ পরীরদ্বীপ মাঝের পাড়া হাবিবা বেগম বলেন, গত ২৩ আগস্ট আরাকান আর্মি ১২ জন ধরে নিয়ে গেছে। সেখানে আমার স্বামী মো. আমিনও রয়েছে। এখনও পযর্ন্ত তারা কেউ বাড়ি ফিরতে পারেনি। আমার সংসারে তিন সন্তান নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করছি। মেয়েদের পড়াশোনা ও সংসার খরচ জোগাড় করতে কষ্ট হচ্ছে। কষ্ট আর আতঙ্ক নিয়ে আমরা দিন কাটাচ্ছি। আমার স্বামীকে ফেরত চাই।শাহ পরীর দ্বীপ ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাঝি বলেন, নাফ নদী ও সাগর থেকে আগস্ট মাসে ৭টি ট্রলার ও ৫৬ জেলেকে আরাকান আর্মি ধরে নিয়ে গেছে। এ বিষয় আমরা কোস্ট গার্ড, বিজিবি ও উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। ২২ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও আটকরা ছাড়া পায়নি। নাফ নদী ও সাগরে আরাকান আর্মির অপতৎপরতা বাড়ছে, এটা জেলেদের জন্য আতঙ্কের।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহেসান উদ্দিন বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে জেনেছি প্রায় সময় সাগর থেকে মাছ ধরে ফেরার পথে আরাকান আর্মির হাতে জেলেরা আটক হচ্ছেন। বিশেষ করে আগস্ট মাসে ৫৬ জন জেলে আটকের বিষয়টি জানার পরে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, শাহ পরীরদ্বীপ নাইক্ষ্যংদিয়া  এলাকায় বার বার যে সমস্যা হচ্ছে। তবে জেলেদেরকে এসব এলাকা দিয়ে চলাচল করতে সর্তকতা বজায় রাখতে হবে এবং সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে।