ময়মনসিংহ , সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

কুষ্টিয়ায় বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ মেলা বসানোকে কেন্দ্র করে , আহত ১১

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার হোগলা চাপাইগাছি বাজারে প্রায় দেড় শত বছরের পুরোনো গাজীকালু-চম্পাবতী মেলা বসানোকে কেন্দ্র করে জামায়াত ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুপক্ষের অন্তত ১১ জন আহতের খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষের চলাকালে দোকানপাটে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে

গত মঙ্গলবার (২০ মে) সন্ধ্যায় উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের হোগলা চাপাইগাছি বাজারে এ ঘটনা ঘটে। মেলার অনুমতি না থাকলেও মেলা কমিটি দোকানপাট বসাতে শুরু করলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে তা রূপ নেয় সংঘর্ষে।

অন্যদিকে বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তারা হলেন- খোকসা সরকারি কলেজের প্রভাষক সরাফাত সুলতান, শিক্ষক টিপু সুলতান, সুকুর শেখ, শরীফ এবং আসাকুর রহমান। তারা কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে কুমারখালীর হোগলা চাপাইগাছি বাজারে ‘গাজীকালু-চম্পাবতী’ মেলার আয়োজন করা হয়। অশ্লীল কর্মকাণ্ড ও জুয়া খেলার অভিযোগ তুলে মেলা বন্ধের দাবি তোলেন জামায়াত কর্মীরা। অন্যদিকে বিএনপি সমর্থকেরা মেলা কমিটির পক্ষ নেন। এ নিয়ে মঙ্গলবার বিকেল থেকে এলাকায় উভয় দলের নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে সন্ধ্যায় দুপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে দুপক্ষের প্রায় ১১ জন আহত হয়েছেন।

এ বিষয়ে বিএনপি সমর্থক ও খোকসা সরকারি কলেজের প্রভাষক সরাফাত সুলতান গণমাধ্যমকে বলেন, জামায়াতের শত শত লোকজন আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। বিচারের আশায় থানায় মামলা করব।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আফজাল হোসাইন বলেন, ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডে জামায়াতের নেতাকর্মী ও স্থানীয়রা প্রতিবাদ করতে গেলে মেলা কমিটির লোকজন হামলা করেছে। থানায় মামলা করা হবে।

জগন্নাথপুর ইউনিয়ন উলামা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বলেন, মেলায় অশ্লীল কর্মকাণ্ড ও জুয়ার আসর বসানো হয়। সেজন্য প্রশাসন অনুমতি দেননি। তবুও বিএনপি ও মেলা কমিটি মেলার আয়োজন করেছে। আমরা মেলার বিষয় জানতে গেলে প্রতিপক্ষরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে। আমিসহ আমাদের অনেকেই আহত হয়েছেন। থানায় মামলা করা হবে।

এদিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, মেলার মাঠে বেশ কয়েকটি দোকান ভাঙচুরের চিহ্ন রয়েছে। এ সময় বাজারের কলা ব্যবসায়ী নাদের শেখ (৬৫) বলেন, মেলা দেখতে গিয়েছিলাম কিন্তু দেখি দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু করে। এ সময় অনেকের হাতে দেশীয় অস্ত্র ছিল।

পাবনার চাটমোহর থেকে আসা দোকানদার আরজ আলী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, সন্ধ্যার একটু আগে কয়েক শত লোক রামদা, হাঁসুয়া, লাঠিসোঁটা নিয়ে দোকানে হামলা চালায়। আমি পালিয়ে যাই। পরে এসে দেখি সব মালামাল লুট হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলায়মান শেখ বলেন, মেলার জন্য প্রশাসনের অনুমতি ছিল না। দুই পক্ষের সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

কুষ্টিয়ায় বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ মেলা বসানোকে কেন্দ্র করে , আহত ১১

আপডেট সময় ১০:৪১:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার হোগলা চাপাইগাছি বাজারে প্রায় দেড় শত বছরের পুরোনো গাজীকালু-চম্পাবতী মেলা বসানোকে কেন্দ্র করে জামায়াত ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দুপক্ষের অন্তত ১১ জন আহতের খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষের চলাকালে দোকানপাটে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে

গত মঙ্গলবার (২০ মে) সন্ধ্যায় উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের হোগলা চাপাইগাছি বাজারে এ ঘটনা ঘটে। মেলার অনুমতি না থাকলেও মেলা কমিটি দোকানপাট বসাতে শুরু করলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে তা রূপ নেয় সংঘর্ষে।

অন্যদিকে বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তারা হলেন- খোকসা সরকারি কলেজের প্রভাষক সরাফাত সুলতান, শিক্ষক টিপু সুলতান, সুকুর শেখ, শরীফ এবং আসাকুর রহমান। তারা কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে কুমারখালীর হোগলা চাপাইগাছি বাজারে ‘গাজীকালু-চম্পাবতী’ মেলার আয়োজন করা হয়। অশ্লীল কর্মকাণ্ড ও জুয়া খেলার অভিযোগ তুলে মেলা বন্ধের দাবি তোলেন জামায়াত কর্মীরা। অন্যদিকে বিএনপি সমর্থকেরা মেলা কমিটির পক্ষ নেন। এ নিয়ে মঙ্গলবার বিকেল থেকে এলাকায় উভয় দলের নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে সন্ধ্যায় দুপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে দুপক্ষের প্রায় ১১ জন আহত হয়েছেন।

এ বিষয়ে বিএনপি সমর্থক ও খোকসা সরকারি কলেজের প্রভাষক সরাফাত সুলতান গণমাধ্যমকে বলেন, জামায়াতের শত শত লোকজন আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। বিচারের আশায় থানায় মামলা করব।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আফজাল হোসাইন বলেন, ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডে জামায়াতের নেতাকর্মী ও স্থানীয়রা প্রতিবাদ করতে গেলে মেলা কমিটির লোকজন হামলা করেছে। থানায় মামলা করা হবে।

জগন্নাথপুর ইউনিয়ন উলামা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বলেন, মেলায় অশ্লীল কর্মকাণ্ড ও জুয়ার আসর বসানো হয়। সেজন্য প্রশাসন অনুমতি দেননি। তবুও বিএনপি ও মেলা কমিটি মেলার আয়োজন করেছে। আমরা মেলার বিষয় জানতে গেলে প্রতিপক্ষরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে। আমিসহ আমাদের অনেকেই আহত হয়েছেন। থানায় মামলা করা হবে।

এদিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, মেলার মাঠে বেশ কয়েকটি দোকান ভাঙচুরের চিহ্ন রয়েছে। এ সময় বাজারের কলা ব্যবসায়ী নাদের শেখ (৬৫) বলেন, মেলা দেখতে গিয়েছিলাম কিন্তু দেখি দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু করে। এ সময় অনেকের হাতে দেশীয় অস্ত্র ছিল।

পাবনার চাটমোহর থেকে আসা দোকানদার আরজ আলী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, সন্ধ্যার একটু আগে কয়েক শত লোক রামদা, হাঁসুয়া, লাঠিসোঁটা নিয়ে দোকানে হামলা চালায়। আমি পালিয়ে যাই। পরে এসে দেখি সব মালামাল লুট হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলায়মান শেখ বলেন, মেলার জন্য প্রশাসনের অনুমতি ছিল না। দুই পক্ষের সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।