দুর্বৃত্তরা গাজীপুরে পোশাক তৈরি কারখানাসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে । গত শনিবার বিকালে মহানগীরর বিভিন্ন স্থানে এসব হামলা চালানো হয়। এতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। ভুক্তভোগীদের দাবি, এসব হামলা চালানো হয় ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে।
গত শনিবার রাজধানীর সোরওয়ার্দী উদ্যানে মার্চ ফর গাজা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নিতে শনিবার সকাল থেকে গাজীপুরের কোনাবাড়ী, কাশিমপুর, কালিয়াকৈর, টঙ্গী, বোর্ডবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। এতে পোশাক শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল সোরওয়ার্দী উদ্যানের মূল কর্মসূচিতে যোগ দেওয়া।
মার্চ ফর গাজা কর্মসূচির জেরে গাজীপুরের বেশিরভাগ কারখানা শনিবার বিকালের দিকে ছুটি দিয়ে দেয়। পরে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গিয়ে একত্রিত হয় শ্রমিকরা। পরে বিশাল মিছিল নিয়ে ঢাকামুখী হলে দুর্বৃত্তরা বিভিন্ন পোষাক কারখানাসহ শিল্প প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালায়।
শ্রমিকরা জানান, প্রায় সমস্ত পোশাক কারখানা ছুটি দিলেও কোনাবাড়ীর স্ট্যান্ডার্ড স্টিচেস ওভেন লিমিটেড, কনকর্ড নিটিং অ্যান্ড ডাইং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং কাশিমপুরে ডিবিএল গ্রুপের মাইমুন ও মতিন গার্মেন্টস খোলা রাখা হয়। পরে ইসরাইলি আগ্রাসনবিরোধী মিছিল থেকে এসব কারখানায় হামলা চালানো হয়। পাশাপাশি কোনাবাড়ী এলাকার বাটা শো-রুম, আজওয়া, পিজ্জা হল, আপেক্স, স্বপ্ন সুপার শফ, বিউটি সুইট মিটসহ প্রায় ১৫ থেকে ২০টি দোকানে হামালা ও ভাঙচুর চালানো হয়।
এছাড়া কোনাবাড়ীতে আবাসিক হোটেল রেইনবো এবং মুনেও হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। আবাসিক হোটেল দুটির আসবাবপত্র ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এনে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। এতে গোটা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
স্ট্যান্ডার্ড স্টিচেস ওভেন লিমিটেডের এডমিন ম্যানেজার ইউসুফ আলী বলেন, ‘বিকালে বহিরাগতরা এসে আমাদের কারখানায় হামালা চালায়।’ কাশিমপুরে ডিবিএল গ্রুপের এইচ আর জিএম মো. নাইমুর রহমান বলেন, ‘বিকালে কিছু শ্রমিক ২ নম্বর গেটে এসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। পরে তারা বড় একটি মিছিল নিয়ে এসে আমার কারখানার ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করলে ছুটি ঘোষণা করা হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মতিন স্পিং মিলস ও জিতার মোড়ে মাইমুন লি. হামালা চালানো হয়।’
গাজীপুর মেট্রোপলিটন কোনাবাড়ী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবু মোহাম্মদ নাসের আল আমিন বলেন, ‘বিকালে কোনাবাড়ী ও কাশিমপুরে ইসরাইলি আগ্রাসানবিরোধী মিছিল থেকে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কয়েকটি কারখানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। কোনাবাড়ীতে ইসরাইলি পণ্য বয়কটের দাবি জানিয়ে বেশ কিছু দোকান ও শপিংমলে হামলা চালানো হয়। এ সময় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে প্রায় দুই ঘণ্টা যানচলাচল বন্ধ থাকে। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।’