রাজশাহীতে বাসে সিট নিয়ে বাগবিতণ্ডার জেরে চলন্ত বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ায় আহত আলাউদ্দিন ইসলাম টগর (৩৫) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। সোমবার (১ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে রামেক হাসপাতালে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় টগরের মৃত্যু হয়।
এর আগে, গত রোববার (৩০ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নগরীর লিলিহলের বাঁশের আড্ডা এলাকার অদূরে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, টগর ও তার বোন গোদাগাড়ীতে যাবেন বলে বাঁশের আড্ডা থেকে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জের মধ্যে চলাচল করা বাসে উঠেছিল।বাসে সিট আছে, বলে যাত্রী আলাউদ্দিন ইসলাম টগর ও তার বোন রুমি খাতুনকে (২৮) তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু সিট নেই দেখে তারা নেমে যেতে চায়। বাসের সুপারভাইজার নামতে বাধা দিলে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে চলন্ত বাস থেকে টগর ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয় টগর। পরে টগরকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। বর্তমানে তার মরদেহ রামেক হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। আর দুর্ঘটনার পড়ে চালক ও হেলপার পালিয়ে গেলেও বাসটি জব্দ করেছে পুলিশ।
এ সময় রুমি দেখে তার ভাই সড়কের পাশে পড়ে গেছে, তখন তার কোলের এক বছরের কন্যা সন্তানকে অপর যাত্রীর কোলে দিয়ে রুমিও দ্রুত বাস থেকে চিৎকার দিয়ে নেমে পড়ে। এসময় একটি মাইক্রোবাস যাত্রীবাহী বাসটিকে আটকেয়ে দেয়। পরে কাশিয়াডাঙ্গা থানা পুলিশ বাসটি আটক করে। বাসটি তাদের হেফাজতে রয়েছে।
তিনি বলেন, ঘটনার পর টগরকে দ্রুত উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানায়, তার ঘাড়ে আঘাত লেগেছে। হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। বর্তমানে তার মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
রাজশাহী মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পাখি বলেন, ওই ব্যক্তি একটা মেয়েকে বাসে তুলে দেয়। তিনি বাস থেকে নামতে চাইলে হেলপার তাকে জানায়, এটা টাইমের গাড়ি, আপনাকে সামনে নামিয়ে দেওয়া হবে। এ নিয়ে ওই ব্যক্তি হেলপারকে মারধর করে। এসময় হেলপার বলে, আপনি আমাকে মারলেন। সামনে কাশিয়াডাঙ্গায় আমাদের মাস্টার আছে সেখানে চলেন। এসময় ওই লোক বাস থেকে লাফ দেয়। পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়েছে শুনেছি।
তিনি বলেন, যে ঘটনাটা ঘটেছে এটা আসলে কারও কাম্য না। আসলে এমন ঘটনা দুঃখজনক। সর্বশেষ অবস্থার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, রোববারের ঘটনার এর বেশিকিছু জানি না।
কাশিয়াডাঙ্গা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিজুল বারী বলেন, বাস থেকে যাত্রী ফেলে দেওয়ার ঘটনায় আলাউদ্দিনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় সোমবার রাতে নিহতের ভাই দুলাল হোসেন বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেছেন। বাসের চালক ও হেলপার পলাতক রয়েছে। আর বাসটি জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া নিহতের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

ডিজিটাল রিপোর্ট 























