কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে চাঁদা না দেওয়ায় এক ব্যবসায়ীকে মারধর করা হয়েছে। রোববার (০৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাটের পুরান বাজারে এ ঘটনা ঘটে। ওই বাজারের নিজ বরফ কলে মারধরের শিকার হন বরফ ব্যবসায়ী মো. রফিক।
ব্যবসায়ী মো. রফিক বলেন, ‘গত কিছু দিন ধরে স্থানীয় বিএনপি কর্মী জিয়াবুল হক শাহপরীর দ্বীপ জেটির ঘাটের ইজাদার দাবি করে আমার কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। এরই সূত্র ধরে রোববার সকালে দ্বীপ জেটি ঘাট-সংলগ্ন বরফকলে এসে আমার কাছে এক মাসের ৪৫ হাজার টাকা চাঁদা চান। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে আমাকে অনেক মারধর করেন। এ সময় তাদের দলে মো. ইউনুছ বাইলাও ছিলেন। তিনিও বিএনপির কর্মী।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত জিয়াবুল হক বলেন, ‘আমি কোনও খাস আদায়কারী নই, ফলে ইজারার কথা বলে টাকা তোলা হয়। চাঁদা দাবির প্রশ্নই আসে না। বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট। মূলত তিনি আমাকে রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে গালিগালাজ করেছিলেন। এর জেরে ভাগিনা হওয়ার সুবাদে দুই-চারটা চড়-থাপ্পড় দিয়েছি।’
এদিকে, মামলা-সংক্রান্ত জটিলতা কারণে জেটির চলতি বছর ইজারা না হওয়ায় শাহপরীর দ্বীপ ঘাটটি খাস আদায়ের সিদ্ধান্ত নেয় জেলা পরিষদ। এ সুযোগে জেলা পরিষদ কার্যালয়ের পিয়ন মোহাম্মদ শাহ আলমকে ইজারাদার সাজিয়ে একটি চক্র টোল আদায় শুরু করেছিল। বিষয়টি জেলা প্রশাসনে নজরে এলে ওই চক্রটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে জেলা পরিষদ তিন জন কর্মী নিয়োগ দেয় খাস আদায়ে। কিন্তু কিছুদিন পার হওয়ার পর আবারও জেলা পরিষদের নিয়োগকারীদের সঙ্গে মিলে দ্বীপ জুড়ে ‘চাঁদা’ আদায়ের চেষ্টা চালাচ্ছে চক্রটি। শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাটের চারদিকে এক কিলোমিটারের মধ্যে খাস আদায়ের নিয়ম থাকলেও সেটি অমান্য করে দ্বীপজুড়ে মানুষের কাছ থেকে টোল আদায় করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ-আল-মারুমের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘চাঁদা না পেয়ে মারধরের ঘটনা খুব দুঃখজনক। বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া কর্মকর্তা) মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘কোনো চাঁদাবাজদের আমরা ছাড় দিচ্ছি না। ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে দেখবো।’