বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, বর্তমানে আমনের ভরা মৌসুম চলছে। বাজারে চালের ঘাটতি নেই। ফলে চালের যে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে, তা অযৌক্তিক। দাম বাড়ার পেছনে সাময়িক মজুতদারি হয়েছে। চালের দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যাপকভাবে আমদানির উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
আজ বুধবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বেগুনবাড়ি এলাকার দীপিকার মোড়ে টিসিবির জানুয়ারি মাসের পণ্য বিক্রির কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী বাজারে চালের ঘাটতি নেই। সরকারের চালের মজুত, স্থানীয় উৎপাদন ও সংগ্রহে ঘাটতি নেই। আমনের ভরা মৌসুম চলছে; এখন চালের দাম বেড়ে যাওয়ার যৌক্তিক কারণ নেই। এটা সাময়িক মজুতদারি বলে মনে করেন তিনি।
চালের মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে সরকার আমদানি উদারীকরণের নীতিতে যাচ্ছে বলে জানান বাণিজ্য উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আমদানি উদার করতে গত দুই দিন আমরা গভর্নর, খাদ্য উপদেষ্টা, টিসিবি ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বাজারে সরবরাহব্যবস্থার উন্নতিতে আপাতত আমদানিকেন্দ্রিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
শেখ বশিরউদ্দীন আরও বলেন, বিপুল পরিমাণে চাল আমদানির প্রস্তুতি চলছে। তাঁর আশা, এতে স্থানীয় বাজারে দাম কমবে। আলুর ক্ষেত্রেও এমন ঘটনা দেখা গেছে। আলুর মূল্যবৃদ্ধির পরে আমদানি উদার করলে আলুর দাম কমে আসে।
এ সময় উপদেষ্টা বলেন, কাগজের ব্যবস্থা আজ থেকে বাতিল হলো; নতুন স্মার্ট কার্ডেই এখন থেকে টিসিবির পণ্য বিক্রি হবে।
শেখ বশিরউদ্দীন আরও বলেন, ‘আগে টিসিবির কার্ড নিয়ে নৈরাজ্য ও দুর্বৃত্তায়ন হয়েছিল, তা স্বীকার করতে হবে। সেই সমস্যা স্বীকার ও সংশোধনের প্রথম উদ্যোগ হিসেবে স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে পণ্য বিতরণ শুরু করেছি। এখন পর্যন্ত মোট ৬৩ লাখ স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। আরও ৩৫ থেকে ৪০ লাখ কার্ড দেওয়া যাবে।’
টিসিবির বিক্রয় কার্যক্রমের পাশাপাশি ক্রয় কার্যক্রমেও স্বচ্ছতা আনার কাজ চলছে বলে জানান বাণিজ্য উপদেষ্টা। তিনি বলেন, টিসিবির ক্রয় কার্যক্রম প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক করা হবে।
এবার স্মার্ট পরিবার কার্ডধারী একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ দুই লিটার ভোজ্যতেল (সয়াবিন বা কুঁড়ার তেল), দুই কেজি মসুর ডাল ও এক কেজি চিনি কিনতে পারবেন। এর মধ্যে প্রতি লিটার ভোজ্যতেলের দাম রাখা হবে ১০০ টাকা। আর প্রতি কেজি মসুর ডাল ৬০ টাকা এবং চিনি ৭০ টাকায় বিক্রি করা হবে। গত বছর টিসিবির পণ্যের তালিকায় চালও ছিল। এবার চাল বিক্রি করছে না সংস্থাটি।