ময়মনসিংহ , শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫, ২৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
গাইবান্ধায় ইউপি চেয়ারম্যান আটক কোনো সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজ বিএনপির সদস্য হতে পারবেন না বললেন রিজভী উপদেষ্টাদের কেউ কেউ একটা দলকে ক্ষমতায় নিতে গোপন সম্পর্ক করছে বললেন গোলাম পরওয়ার বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেখে মাটিতে ছুড়ে ফেলেছে ইসরায়েলি বাহিনী ক্ষমতার বদল যেন দুর্নীতির পালাবদল না হয় বললেন বদিউল আলম মজুমদার প্রধানমন্ত্রী বা নির্বাহী ক্ষমতা কতটা সীমিত করা যাবে, সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বললেন মান্না সেফ এক্সিট নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আলাপ হয়নি বললেন দুদু সুষ্ঠু নির্বাচন চাইলে সাংবাদিকদের সাহায্য নিতেই হবে ইসিকে বললেন উপদেষ্টা সাখাওয়াত নির্বাচন করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনে জনগণের কথা বলতে হবে বললেন আমীর খসরু ভোটগ্রহণে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক নিয়োগ বললেন সিইসি
নোটিশ :
প্রতিটি জেলা- উপজেলায় একজন করে ভিডিও প্রতিনিধি আবশ্যক। যোগাযোগঃ- Email- matiomanuss@gmail.com. Mobile No- 017-11684104, 013-03300539.

ছাগলনাইয়ায় এবার পানি বাড়ছে, আশ্রয়কেন্দ্রে ৭ হাজার মানুষ

  • স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট সময় ১০:৪২:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
  • ১১১ বার পড়া হয়েছে

ফেনীতে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ২১টি স্থানে ভেঙে প্লাবিত হয়েছে শতাধিক গ্রাম। বুধবার (৯ জুলাই) দুপুর থেকে বৃষ্টি কমার সঙ্গে নদীর পানিও কমতে শুরু করেছে। তবে ভাঙন স্থান দিয়ে পানি প্রবেশ অব্যাহত থাকায় প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল। 

তীব্র স্রোতে পানি প্রবেশ করছে ছাগলনাইয়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। একাধিক সড়ক পানিতে তলিয়ে গিয়ে বন্ধ রয়েছে যানচলাচল। এতে দুর্যোগে আক্রান্ত হয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন ২০ হাজারের বেশি মানুষ।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পরশুরাম, ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদর উপজেলার আংশিক অংশে ৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে বন্যাদুর্গত ৬ হাজার ৮২৬ জন মানুষ অবস্থান করছেন। পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে ইতোমধ্যে ৯০ জন স্বেচ্ছাসেবক মাঠে কাজ করছে।

পাঠাননগর এলাকার বাসিন্দা আজগর আলী বলেন, পরশুরাম-ফুলগাজীর ভাঙন স্থান দিয়ে আসা পানিতে ছাগলনাইয়া উপজেলা প্লাবিত হচ্ছে। সড়ক পানিতে তলিয়ে গিয়ে যানচলাচল ব্যাহত হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে পানির চাপ বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে যদি বৃষ্টি হয় তাহলে পানিগুলো ফেনী সদর উপজেলাতেও প্রবেশ করার শঙ্কা রয়েছে।

ফুলগাজীর ঘনিয়ামোড়া এলাকার বাসিন্দা হাসান ভূঞা বলেন, নদীতে পানি কমলেও ভাঙন স্থান দিয়ে তীব্র স্রোতে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। গলা সমান পানিতে বের হয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছি। বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় আরও বেশি বিপাকে পড়তে হচ্ছে। বাড়িতে পানিবন্দী থাকলেও কোনো ধরনের খাবার বা প্রশাসনিক সহায়তা পাইনি।

ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান দৈনিক ইত্তেফাককে বলেন, জেলায় টানা তিন দিন ধরে মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বুধবার (৯ জুলাই) রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৫৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃহস্পতিবারও জেলাজুড়ে হালকা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন মজুমদার বলেন, রাত ১১টার দিকে নদীর পানি বিপদসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। নদীর পানি কমলেও ভাঙন স্থান দিয়ে পানি ঢুকে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পানি কমার পরেই বাঁধ মেরামতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ছাগলনাইয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুবল চাকমা বলেন, মাঠপর্যায়ে থেকে দুর্গত মানুষের সহায়তায় আমরা সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রয়েছি। উপজেলায় ৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে ছাগলনাইয়ার বিভিন্ন এলাকায় তীব্র স্রোতে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে।

এ ব্যাপারে ফেনীর জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, পরশুরাম, ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদর উপজেলার আংশিক অংশে প্রায় ২০ হাজার মানুষ দুর্যোগে আক্রান্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে ৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৭ হাজারের মতো মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। জেলার ছয় উপজেলায় ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য সাড়ে ১৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

গাইবান্ধায় ইউপি চেয়ারম্যান আটক

ছাগলনাইয়ায় এবার পানি বাড়ছে, আশ্রয়কেন্দ্রে ৭ হাজার মানুষ

আপডেট সময় ১০:৪২:৫৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫

ফেনীতে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ২১টি স্থানে ভেঙে প্লাবিত হয়েছে শতাধিক গ্রাম। বুধবার (৯ জুলাই) দুপুর থেকে বৃষ্টি কমার সঙ্গে নদীর পানিও কমতে শুরু করেছে। তবে ভাঙন স্থান দিয়ে পানি প্রবেশ অব্যাহত থাকায় প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল। 

তীব্র স্রোতে পানি প্রবেশ করছে ছাগলনাইয়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। একাধিক সড়ক পানিতে তলিয়ে গিয়ে বন্ধ রয়েছে যানচলাচল। এতে দুর্যোগে আক্রান্ত হয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন ২০ হাজারের বেশি মানুষ।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পরশুরাম, ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদর উপজেলার আংশিক অংশে ৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে বন্যাদুর্গত ৬ হাজার ৮২৬ জন মানুষ অবস্থান করছেন। পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে ইতোমধ্যে ৯০ জন স্বেচ্ছাসেবক মাঠে কাজ করছে।

পাঠাননগর এলাকার বাসিন্দা আজগর আলী বলেন, পরশুরাম-ফুলগাজীর ভাঙন স্থান দিয়ে আসা পানিতে ছাগলনাইয়া উপজেলা প্লাবিত হচ্ছে। সড়ক পানিতে তলিয়ে গিয়ে যানচলাচল ব্যাহত হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে পানির চাপ বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে যদি বৃষ্টি হয় তাহলে পানিগুলো ফেনী সদর উপজেলাতেও প্রবেশ করার শঙ্কা রয়েছে।

ফুলগাজীর ঘনিয়ামোড়া এলাকার বাসিন্দা হাসান ভূঞা বলেন, নদীতে পানি কমলেও ভাঙন স্থান দিয়ে তীব্র স্রোতে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। গলা সমান পানিতে বের হয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছি। বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় আরও বেশি বিপাকে পড়তে হচ্ছে। বাড়িতে পানিবন্দী থাকলেও কোনো ধরনের খাবার বা প্রশাসনিক সহায়তা পাইনি।

ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান দৈনিক ইত্তেফাককে বলেন, জেলায় টানা তিন দিন ধরে মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বুধবার (৯ জুলাই) রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৫৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃহস্পতিবারও জেলাজুড়ে হালকা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন মজুমদার বলেন, রাত ১১টার দিকে নদীর পানি বিপদসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। নদীর পানি কমলেও ভাঙন স্থান দিয়ে পানি ঢুকে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পানি কমার পরেই বাঁধ মেরামতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ছাগলনাইয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুবল চাকমা বলেন, মাঠপর্যায়ে থেকে দুর্গত মানুষের সহায়তায় আমরা সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রয়েছি। উপজেলায় ৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে ছাগলনাইয়ার বিভিন্ন এলাকায় তীব্র স্রোতে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে।

এ ব্যাপারে ফেনীর জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, পরশুরাম, ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদর উপজেলার আংশিক অংশে প্রায় ২০ হাজার মানুষ দুর্যোগে আক্রান্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে ৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৭ হাজারের মতো মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। জেলার ছয় উপজেলায় ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য সাড়ে ১৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।